অসমে নির্বাচনী এলাকা পুনর্বিন্যাসে নিয়ে ক্ষুব্ধ ‘এআইইউডিএফ’, বিশ্লেষকের প্রতিক্রিয়া
(last modified Sun, 25 Jun 2023 09:44:07 GMT )
জুন ২৫, ২০২৩ ১৫:৪৪ Asia/Dhaka
  • অসমে নির্বাচনী এলাকা পুনর্বিন্যাসে নিয়ে ক্ষুব্ধ ‘এআইইউডিএফ’, বিশ্লেষকের প্রতিক্রিয়া

ভারতে বিজেপিশাসিত অসমে নির্বাচনী এলাকা পুনর্বিন্যাসের খসড়াকে কেন্দ্র করে বিরোধী দল ‘এআইইউডিএফ’ ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। গত (মঙ্গলবার) ভারতের নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে ওই খসড়া প্রকাশ করা হয়।

২০০১ সালের আদমশুমারির ভিত্তিতে এই খসড়া কেন প্রকাশ করা হল তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। রাজ্যে ক্ষমতাসীন বিজেপি নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেও ‘এআইইউডিএফ’, কংগ্রেস ও অন্যরা এর বিরোধিতা করেছে। তাদের দাবি- সর্বশেষ  আদমশুমারির ভিত্তিতে নির্বাচনী এলাকা পুননির্ধারণ হওয়া উচিত, ২০০১ সালের ভিত্তিতে নয়।

এ প্রসঙ্গে ‘এআইইউডিএফ’ প্রধান মাওলানা বদরউদ্দিন আজমল এমপি বলেছেন,  ‘এআইইউডিএফ’কে নিঃশেষ করার গন্ধ এই খসড়ায় থেকে গেছে। ভবিষ্যতে এতে বিজেপি ও কংগ্রেসের সুবিধা হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এর একমাত্র উদ্দেশ্য হল মুসলিম ভোট কমানো। বিজেপির উদ্দেশ্যে অত্যন্ত খারাপ, আমরা এর সমর্থন করি না।’

 ‘এআইইউডিএফ’-এর অন্যতম সাধারণ সম্পাদক ও  বিধায়ক করিমউদ্দিন বড়ভুঁইয়া বলেছেন, ‘যদি এই খসড়া চূড়ান্ত হয় তাহলে তা হবে গণতন্ত্রের ওপর কালো দাগ। এই খসড়া কার্যকরী হলে আগামীদিনে অনেক ক্ষেত্রে পরিষদীয় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে, সংখ্যালঘুদের গণতান্ত্রিক অধিকার ক্ষুণ্ণ করবে।’

‘আরএসএস ও বিজেপির সাম্প্রদায়িক অ্যাজেন্ডা অনুসারে নির্বাচনী এলাকা পুনর্বিন্যাসের প্রস্তাব করা হয়েছে। এবং এতে জনসংখ্যা বা ভৌগলিক বিষয়গুলো তেমন ভিত্তি হিসেবে দেখা হয়নি’ বলেও বিধায়ক করিমউদ্দিন বড়ভুঁইয়ার দাবি।  সাবেক বিধায়ক আতাউর রহমান মাঝারভুঁইয়া বলেছেন, ‘রাজনৈতিক স্বার্থে বিজেপির মস্তিষ্ক প্রসূত খসড়া প্রকাশ করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনকে নিজের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়িত করতে কাজে লাগিয়েছে বিজেপি। ‘অসম চুক্তি’, ‘এনআরসি’ (জাতীয় নাগরিক পঞ্জি) নিয়ে তাদের গোপন অ্যাজেন্ডা কাজে আসেনি। তাই এবার ডিলিমিটেশনকে হাতিয়ার করতে চাচ্ছে।’ 

সমাজকর্মী আব্দুল মান্নান লস্কর

আজ (রোববার) ওই ইস্যুতে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে অসমের হাইলাকান্দি জেলার বিশিষ্ট সমাজকর্মী আব্দুল মান্নান লস্কর রেডিও তেহরানকে বলেন, ‘রাজ্যের বর্তমান যে বিজেপি সরকার, তারা নাগপুরের (আরএসএসের সদর দফতর) ফর্মুলাতে চলছে। নাগপুরের ফর্মুলা ভারতের ও বিশ্বের মানুষের কাছে, যারা ন্যায়পরায়ণ মানুষ তাদের কাছে স্পষ্ট যে তারা একটা নির্দিষ্ট সম্প্রদায়কে টার্গেট করছে। তাদের প্রথম টার্গেট হল ‘মুসলিম’রা। তার পর  অন্যান্য সংখ্যালঘু যেমন খ্রিস্টান, আদিবাসীরা আছে, তাদেরকে তারা টার্গেট করে। কিন্তু বিষয়টা হচ্ছে প্রথম টার্গেট হল মুসলিম। এমন একজন মুখ্যমন্ত্রী অসমে আছেন, যিনি প্রকাশ্যে মুসলিমদের বা সংখ্যালঘুদের বিষয়ে বিরূপ মন্তব্য করেন।’

 তিনি আরও বলেন, ‘মানুষ যখন বাড়ছে, সেখানে ন্যায়সঙ্গত ভাবে আসন সংখ্যা বাড়ার কথা। কিন্তু আসন সংখ্যা কীভাবে কমে যায়? আসলে সরকারের উদ্দেশ্য মোটেও স্বচ্ছ হয়, তাদের উদ্দেশ্য পক্ষপাতিত্বমূলক’  বলেও মন্তব্য করেন অসমের হাইলাকান্দি জেলার বিশিষ্ট সমাজকর্মী আব্দুল মান্নান লস্কর।#

 

পার্সটুডে/এমএএইচ/এমবিএ/২৫   

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।