মহারাষ্ট্রে মুসলমানদের জন্য শিক্ষা ও চাকরিতে সংরক্ষণের দাবিতে সোচ্চার সমাজবাদী পার্টি
মহারাষ্ট্রে মুসলমানদের জন্য শিক্ষা ও চাকরিতে সংরক্ষণের জোরালো দাবি তুলেছে সমাজবাদী পার্টি (সপা)। অন্যদিকে, আজই রাজ্যটিতে মারাঠাদের জন্য সংরক্ষণ বিল পাস হয়েছে।
আজ (মঙ্গলবার) মারাঠাদের জন্য সংরক্ষণ বিলটি যখন রাজ্য বিধানসভায় পাস হয়, তখন বিধানসভা চত্বরের বাইরে সমাজবাদী পার্টির (সপা) বিধায়ক আবু আজমিকে সেখানে মুসলমানদেরও সংরক্ষণের দাবি তুলতে দেখা গেছে। এ সময়ে তার সাথে আরও একজন নেতা ছিলেন এবং তাদের দু’জনের হাতে থাকা ব্যানারের মাধ্যমে মহারাষ্ট্রে মুসলমানদের ৫ শতাংশ সংরক্ষণের দাবি জানানো হয়। ব্যানারে লেখা ছিল-মুসলিমদের সাথে অবিচার বন্ধ করো। মারাঠাদের সাথে মুসলিমদের শিক্ষা ও চাকরিতে ৫ শতাংশ সংরক্ষণ দাও। ওই ইস্যুতে তারা শ্লোগানও দেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক বার্তায় সমাজবাদী পার্টির বিধায়ক আবু আজমি বলেন, মারাঠা সংরক্ষণের জন্য ডাকা মহারাষ্ট্র বিধানসভার বিশেষ অধিবেশন চলাকালীন সমাজবাদী পার্টির দাবি- মারাঠা সংরক্ষণের পাশাপাশি, সরকার মুসলমানদেরও ৫ শতাংশ সংরক্ষণ সুবিধা দিক। মুসলিমদের সংরক্ষণের জন্যও মহারাষ্ট্র সরকার বিল আনুক।
‘সপা’ নেতা অন্য একটি বার্তায় বলেন- আমরা মারাঠা সম্প্রদায়ের সংরক্ষণকে স্বাগত জানাই, কিন্তু মুসলমানদের বোকা বানানো এবং তাদের প্রতি অবিচার করার প্রতিবাদে মুসলিম সংরক্ষণের জন্য মহারাষ্ট্র সরকারের ২০১৪ সালের অধ্যাদেশ বিধানসভায় চত্বরে ছিঁড়ে নিন্দা জানাচ্ছি। আমরা মুসলিম সংরক্ষণের ভবিষ্যৎ কৌশল নির্ধারণ করব এবং এই দাবিতে আমাদের লড়াই অব্যাহত থাকবে।
বিধায়ক আবু আজমি রাজ্যে ক্ষমতাসীন শিবসেনা-বিজেপি সরকারকে টার্গেট করে বলেন, যে সরকার ছত্রপতি শিবাজী মহারাজের আদর্শ মেনে চলার দাবি করে, যিনি সকল ধর্ম ও শ্রেণীর প্রতি ন্যায়বিচার করেছিলেন, তারা মহারাষ্ট্রের মুসলমানদের প্রতি অবিচার করছে এবং তাদের সঙ্গে সৎ মায়ের আচরণ করছে। কেন মারাঠা সংরক্ষণের পাশাপাশি মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য কোনও সংরক্ষণ নেই?
পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, মুসলিমদের মধ্যে যারা অনগ্রসর তাদের জন্য সরকার অধ্যাদেশের মাধ্যমে সংরক্ষণের ঘোষণা করেছিল। কিন্তু এ পর্যন্ত তা স্থগিত রাখা হয়েছে। এমনকী হাইকোর্টও বলেছিল মুসলিমদের ৫ শতাংশ শিক্ষায় সংরক্ষণ দিতে। কিন্তু আজও তা দেওয়া হয়নি বলেও মন্তব্য করেছেন সমাজবাদী পার্টির বিধায়ক আবু আজমি।
প্রসঙ্গত, রাজ্যে মুসলমানদের হার ১০ শতাংশের বেশি। বিচারপতি রাজেন্দ্র সাচার কমিশন (২০০৬) এবং বিচারপতি রঙ্গনাথ মিশ্র কমিটি (২০০৪) প্রদত্ত তথ্য-পরিসংখ্যানে প্রকাশ, মুসলিম সম্প্রদায় অর্থনৈতিক এবং শিক্ষাগতভাবে পিছিয়ে রয়েছে। ২০০৯ সালে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সরকার রহমান কমিটি গঠন করে, যা পরবর্তীতে চাকরি এবং শিক্ষায় মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য 8 শতাংশ সংরক্ষণের সুপারিশ করেছিল। এসবের মধ্যে এবার মহারাষ্ট্র বিধানসভায় মারাঠা সম্প্রদায়কে শিক্ষা এবং সরকারি চাকরিতে ১০ শতাংশ সংরক্ষণ সুবিধা সম্বলিত একটি বিল পাস হল।#
পার্সটুডে/এমএএইচ/এমবিএ/২০
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।