বেঙ্গল ইমামস এসোসিয়েশন:
‘রমজান মাসে মসজিদে ভিড় করবেন না, তারাবিহ নামাজ বাসায় পড়ুন’ (ভিডিও)
-
মুহাম্মাদ ইয়াহিয়া
ভারতে করোনাজনিত লকডাউন পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গের ‘বেঙ্গল ইমামস এসোসিয়েশন’ রমজান মাসে মসজিদে ভিড় না করে তারাবিহ’র নামাজ বাসায় আদায় করার আহ্বান জানিয়েছে। আজ (শুক্রবার) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ওই আহ্বান জানানো হয়েছে।
‘বেঙ্গল ইমামস এসোসিয়েশন’-এর চেয়ারম্যান মুহাম্মাদ ইয়াহিয়া এক বিবৃতিতে মুসসুল্লিদের উদ্দেশ্যে আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘তারাবিহ ‘সুন্নত’ নামাজ। যখন জীবনের প্রয়োজনে ‘ফরজ’ নামাজ আদায়ে আপস করতে হয়েছে, তখন সুন্নতের ক্ষেত্রে তার ব্যতিক্রম করা যাবে না। আমাদের বুঝতে হবে আজকের পরিস্থিতি, আমরা যতটা দেখছি তার হাজারগুণ যা দেখা যাচ্ছে না, যেকোনো সময়ে তা আগ্নেয়গিরির লাভা স্রোতের মতো সব শেষ করে ভাসিয়ে দিতে পারে। জানাজা ও দাফনের সুযোগ থাকবে না। ফরজ নামাজের জামাত যেমন ৪/৫ জন মিলে সঠিক দূরত্ব বজায় রেখে আদায় চলছে তেমনই হবে। তারাবিহ’র নামাজ বাসায় পড়ুন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত নামাজ, কোরআন তেলাওয়াত ও অন্যান্য এবাদত বাসায় করুন।’
তিনি বলেন, ‘যারা মসজিদে ইফতার দিতেন, জাকাত, ফেতরা, সদকা দেন, তাঁরা দয়া করে সেই টাকা (সম্ভব হলে আলোচনা সাপেক্ষে) মসজিদ কমিটির হাতে তুলে দিন। কমিটি সবার টাকা একত্রিত করে এলাকার দরিদ্র মানুষজনের মধ্যে পৌঁছে দিক। যাতে সবাই সমান পেতে পারে। এটাই সহযোগিতার ও সফলতার পথ। স্বচ্ছতা বজায় রাখতে নাম ধরে ধরে হিসাব মসজিদে টাঙিয়ে দিক।’
মুহাম্মাদ ইয়াহিয়া বলেন, ‘আমাদের অনুরোধ ছিল দয়া করে মসজিদ, এলাকার কোনও জায়গা অথবা বাজারে অপ্রয়োজনীয় ভিড় করবেন না। আপনাদেরকে ধন্যবাদ যে, পশ্চিমবঙ্গের হাজার হাজার মসজিদ কমিটি, ইমাম ও মুসুল্লিগণ সেই বার্তাকে মেনে নিয়েছেন। আত্মসন্তুষ্টির জায়গা নেই। আমাদের আরও সাবধান হতে হবে। সরকারি নির্দেশের জন্য নয়, নিজেদের, পরিবারের, এলাকার মানুষের জীবনের হেফাজতের জন্য প্রয়োজনে। হঠকারিতা, নিজের খেয়াল খুশি মতো চলার অর্থ ইসলামের শত্রুতা করা। ইসলাম যুক্তি, বুদ্ধি, চিকিৎসাব্যবস্থাকে সাথে নিয়ে চলার নির্দেশ দেয়। যারা এটাকে মান্যতা না দিয়ে হঠকারিতা করে, তারা ইসলামের ও মুসলিমদের ক্ষতি ডেকে আনছেন। প্রয়োজনে নিজেরা তাদেরকে বুঝিয়ে নিরস্ত করুন, অন্যথায় প্রশাসনের সাহায্য নিন। আজকের সময়ে দাঁড়িয়ে আপনার এলাকার কয়েকজনের হঠকারিতার কারণে ইসলাম ও মুসলিমদের নামে মিডিয়াকে বিষাক্ত প্রচারের সুযোগ দেবেন না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আল্লাহতায়ালা মাঝে মাঝে আমাদের পরীক্ষা নেন। কখনও কখনও সেটা অত্যন্ত কষ্টের ও বেদনার হয়। কিন্তু তার পরে আল্লাহ্ তায়ালা ধৈর্যধারণকারীদের অশেষ নেয়ামতে ভরে দেন।’
করোনাভাইরাস জনিত লকডাউন পরিস্থিতিতে ‘বেঙ্গল ইমামস এসোসিয়েশন’-এর পক্ষ থেকে এরআগে মসজিদে জুমা নামাজ ও পাঁচওয়াক্ত নামাজে ভিড় না করে বাসায় নামাজ আদায়ের জন্য মুসুল্লিদের উদ্দেশ্যে আহ্বান জানানো হয়। বিগত শবেবরাতের সময়েও একইভাবে ওই আবেদন জানানো হয়েছিল। রাজ্যের বহু মসজিদের ইমাম ওই আহ্বান জানালে চলমান জনস্বাস্থ্য পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে মুসল্লিরা তাতে সাড়া দিয়ে বাসায় নামাজ পড়ার সিদ্ধান্ত নেন।#
পার্সটুডে/এমএএইচ/এআর/১৭
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।