রোহিঙ্গা ইস্যুতে কর্ণাটক সরকারের অবস্থান পরিবর্তন, সুপ্রিম কোর্টে সংশোধিত হলফনামা দাখিল
ভারতে বিজেপি নেতৃত্বাধীন কর্ণাটক সরকার রোহিঙ্গাদের বিতাড়নের বিষয়ে তাদের অবস্থান পরিবর্তন করেছে এবং সুপ্রিম কোর্টে এই বিষয়ে একটি সংশোধিত হলফনামা দাখিল করেছে। কর্ণাটক সরকার সম্প্রতি স্পষ্ট করে দিয়েছে যে বর্তমানে রাজধানী বেঙ্গালুরুতে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর কোনো পরিকল্পনা নেই। আজ (শনিবার) সংবাদ সংস্থা ‘এএনআই’ ওই তথ্য জানিয়েছে।
কর্ণাটক সরকার বলেছে, তারা এ ব্যাপারে আদালতের সমস্ত নির্দেশ মেনে চলবে। সরকার এরআগে অবৈধ রোহিঙ্গাদের বিতাড়নের নির্দেশনা চেয়ে অ্যাডভোকেট অশ্বিনী উপাধ্যায় কর্তৃক ২০১৭ সালে দায়ের করা একটি পিটিশন খারিজ করার দাবি জানিয়েছিল। রাজ্য সরকারের স্বরাষ্ট্র দফতর সর্বশেষ হলফনামায় বলেছে, ‘রাজ্য পুলিশ তাদের এখতিয়ারের অধীনে কোনো ক্যাম্প বা ডিটেনশন সেন্টারে রোহিঙ্গাদের রাখেনি। কিন্তু কর্ণাটকে ১২৬ জন রোহিঙ্গাকে শনাক্ত করা হয়েছে।’
কর্ণাটক বিজেপি সরকার অবৈধ অভিবাসীদের নির্বাসন চেয়ে একটি আবেদনের জবাবে সুপ্রিম কোর্টে একটি সংশোধিত হলফনামা দাখিল করেছে। তারা বলেছে, রাজ্যে ১২৬ জন রোহিঙ্গা রয়েছে এবং আদালত এ ব্যাপারে যা নির্দেশ দেবে সরকার তা মেনে চলবে। এরআগে, আদালতে দাখিল করা হলফনামায় রাজ্য সরকার বলেছিল, ‘বেঙ্গালুরু সিটি পুলিশ তার এখতিয়ারের অধীনে কোনও ক্যাম্প বা আটক কেন্দ্রে রোহিঙ্গাদের রাখেনি।’
আজ ‘টিভি-৯ হিন্দি ডটকম’ গণমাধ্যমে প্রকাশ, রাজ্য সরকার বলেছে, বেঙ্গালুরু শহরে ৭২ জন রোহিঙ্গাকে চিহ্নিত করা হয়েছে, যারা বিভিন্ন এলাকায় কাজ করছে এবং বেঙ্গালুরু সিটি পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত কোনো কঠোর ব্যবস্থা নেয়নি এবং তাদের বিতাড়নের কোন তাৎক্ষণিক পরিকল্পনা নেই।’ রাজ্য সরকার রোহিঙ্গাদের ৭২ জনের একটি তালিকাও আদালতে জমা দিয়েছিল। এবং অ্যাডভোকেট অশ্বিনী কুমার উপাধ্যায়ের করা আবেদন খারিজ করার দাবি জানিয়েছিল।
২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে, একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছিল, যাতে এক বছরের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে আসা সমস্ত অবৈধ অভিবাসীদের অবিলম্বে নির্বাসন চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করা হয়। ওই আবেদনে বলা হয়, দেশে রোহিঙ্গাদের উপস্থিতি নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। বাংলাদেশ থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশ হয়েছে বলেও আবেদনে বলা হয়। আবেদনটি অবৈধ অভিবাসন এবং অনুপ্রবেশকে একটি আমলযোগ্য, অ-জামিনযোগ্য এবং অ-কম্পাউন্ডেবল অপরাধ করার জন্য প্রাসঙ্গিক আইনের সংশোধনও চেয়েছিল।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের আগস্টে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেণ রিজিজু সংসদে বলেছিলেন, রাজ্যগুলোকে রোহিঙ্গাসহ অবৈধ অভিবাসীদের খুঁজে বের করতে এবং তাদের বিতাড়িত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরপর রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুই ব্যক্তি বিতাড়নের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন।#
পার্সটুডে/এমএএইচ/বাবুল আখতার/২৯
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।