মে ০৫, ২০২৪ ১৭:৫১ Asia/Dhaka
  • ডান দিক থেক: ইরানের তুদেহ পার্টির লোগো, সোভিয়েত পতাকা, সাদ্দাম হোসেন ও সাদ্দামের পাশে সোভিয়েত নেতা ব্রেজনেভ
    ডান দিক থেক: ইরানের তুদেহ পার্টির লোগো, সোভিয়েত পতাকা, সাদ্দাম হোসেন ও সাদ্দামের পাশে সোভিয়েত নেতা ব্রেজনেভ

ইরানের ইসলামি বিপ্লবের বিজয়ের পর, শাহের শাসনামলে নিষিদ্ধ করা তুদেহ পার্টির কার্যক্রম ত্রিশ বছর পর আবার শুরু হয়। কিন্তু কার্যক্রম শুরুর পর এই পার্টির সদস্যরা ইরানে সোভিয়েত ইউনিয়নের অবৈধ স্বার্থ রক্ষার চেষ্টা অব্যাহত রাখে।

গুপ্তচরবৃত্তি, অভ্যুত্থান প্রচেষ্টা এবং ইরানে হামলার পর ইরাকি বাথ সরকারকে রক্ষা করতে সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে গোপন সহযোগিতার মতো কার্যকলাপ চালায়।

ইরানের তুদেহ পার্টি ফার্সি ১৩২০ সালে কমিউনিস্ট আদর্শ নিয়ে গঠিত হয়েছিল। কিন্তু এই দলটি ইরানে সোভিয়েত ইউনিয়নের এজেন্ট ও ভাড়াটে শক্তি হিসাবে আবির্ভূত হয়ে উঠতে বেশি সময় নেয়নি এবং এ কারণে ইরানের মুসলিম জনগণ ধর্মবিদ্বেষী এই দলটিকে কখনোই স্বাগত জানায়নি। তুদেহ দল ইরানের তেল শিল্পের জাতীয়করণের প্রক্রিয়ার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল এবং কথিত ভারসাম্য প্রতিষ্ঠার নামে দেশের দক্ষিণাঞ্চল থেকে ইংল্যান্ডে তেল রপ্তানির বিনিময়ে ইরানের উত্তর থেকে তেল সোভিয়েত ইউনিয়নের কাছে হস্তান্তর করার দাবি করেছিল।

শাহের শাসনামলে নিষিদ্ধ করা তুদেহ পার্টির কার্যক্রম ত্রিশ বছর পর আবার শুরু হয় ইরানের ইসলামী বিপ্লবের বিজয়ের পর। কিন্তু এই দলের সদস্যরা ইরানে সোভিয়েতদের জন্য গোয়েন্দাগিরিসহ তাদের অবৈধ স্বার্থ রক্ষার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা অব্যাহত রাখে। তখন তুদেহ পার্টির নেতারা স্বীকার করেছিলেন, সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে তারা সর্বোচ্চ সহযোগিতা বজায় রাখতে  চায়, এমনও হয়েছিল যে, তেহরানে নিযুক্ত সোভিয়েত রাষ্ট্রদূত তুদেহ পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্তগুলোকে চূড়ান্তভাবে অনুমোদন করতো।

এসব স্বীকারোক্তি এবং ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে সোভিয়েত ইউনিয়নের ভূমিকা থাকার বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ার পর, বিশেষ করে ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সাদ্দামকে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিপুল সমর্থনের বিষয়টি বিবেচনা করে, ইরানে সোভিয়েত দূতাবাসের আঠারো জন কূটনীতিককে বহিষ্কার করা হয়। ইরানে লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হওয়ার পর, দেশটির সেনাবাহিনীতে সোভিয়েত ইউনিয়ন তার এজেন্টদের সহযোগিতায় ইসলামি প্রজাতন্ত্র ব্যবস্থাকে উৎখাত করার ষড়যন্ত্র করে। কিন্তু সেনাবাহিনী ও নিরাপত্তা বাহিনীতে ইরানে দেশপ্রেমিক কর্মকর্তাদের সচেতনতার কারণে ওই ষড়যন্ত্র শেষ পর্যন্ত ভেস্তে যায়। ফার্সি ১৩৬‌১ সালে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের বিরুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের অভ্যুত্থান ষড়যন্ত্রে ইরানের তুদেহ পার্টির ভূমিকা থাকার বিষয়টি প্রকাশ হয়ে পড়ার পর, ইরানের কর্মকর্তারা জানান, এই পার্টির অব্যাহত কার্যকলাপ ইরানের ইসলামি শাসন ব্যবস্থার জন্য ক্ষতিকর এবং এরপরই তুদেহ পার্টি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয় যা সোভিয়েত ইউনিয়নকে ক্ষুব্ধ করে তুলেছিল ।

তুদেহ পার্টির অন্যতম নেতা নুরুদ্দিন কিয়ানুরি বলেছেন,

'আমাদের মতে, তুদেহ পার্টির এইসব কর্মকাণ্ডের মধ্যে গুপ্তচরবৃত্তি, বিশ্বাসঘাতকতা, দেশ বিরোধী নানা কার্যকলাপ প্রভৃতি অনেক বড় অপরাধ। এসব অপরাধ এতোটাই মারাত্মক যে আমার মতে, সর্বোচ্চ শাস্তি দেয়ার অধিকার ইসলামি সরকারের রয়েছে....।'

খ্রি: ১৯৭৯ সালে ইরানের ইসলামি বিপ্লব বিজয় এবং বিপ্লব বিজয়ের আগে, ইরাকের সাদ্দাম সরকার ছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন বলয়ের। আর ইরানের শাহ সরকার ছিল পশ্চিমা ব্লক অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্র বলয়ের। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেবেছিল ইরানের বিরুদ্ধে চাপিয়ে দেয়া যুদ্ধে ইরাক বিজয়ী হলে ইরান কমিউনিস্ট শাসিত পূর্ব ব্লকের দেশগুলোর দিকে ঝুঁকে পড়বে। সোভিয়েত ইউনিয়ন ছিল ইরাকে সামরিক সরঞ্জামের বৃহত্তম রপ্তানিকারক দেশ। #

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/৫

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

 

ট্যাগ