সাইয়্যেদ নাসরুল্লাহর স্মরণ সভায় ইরানের পার্লামেন্ট স্পিকার:
জুলুমের বিরুদ্ধে সংগ্রাম ও নির্যাতিতদের রক্ষা করতে হিজবুল্লাহ গঠিত হয়েছে
পার্সটুডে- ইরানের পার্লামেন্ট- মজলিসে শুরায়ে ইসলামির স্পিকার মোহাম্মাদ বাকের কলিবফ বলেছেন: ইহুদিবাদী অপরাধী চক্রের সঙ্গে আপোষ আলোচনা যে অনর্থক কাজ ছাড়া আর কিছু নয় তা হিজবুল্লাহ নেতা সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহর শাহাদাতের ঘটনায় প্রমাণিত হয়েছে।
সাইয়্যেদ নাসরুল্লাহর শাহাদাতের চল্লিশতম দিবস উপলক্ষে শনিবার তেহরানে অনুষ্ঠিত এক স্মরণ সভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে কলিবফ আরো বলেন: মুমিন ও মুজাহিদ সাইয়্যেদ নাসরুল্লাহর শাহাদাত তার নিজের পাশাপাশি প্রতিরোধ অক্ষের জন্য পরাজয় নয়; বরং তার শাহাদাতের ফলে তার জাহান্নামবাসী ঘাতকদের স্বরূপ অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় আরো বেশি স্পষ্ট হয়েছে এবং এই অপরাধী ও শয়তানি চক্রের সঙ্গে আপোষ আলোচনা যে অনর্থক কাজ ছাড়া আর কিছু নয় তা প্রমাণিত হয়েছে।
বার্তা সংস্থা ইরনার বরাত দিয়ে পার্সটুডে জানাচ্ছে, কলিবফ আরো বলেন: সাইয়্যেদ নাসরুল্লাহ আল-আকসা তুফান অভিযানের শুরু থেকে হামাস যোদ্ধাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন এবং তিনি বিশ্বাস করতেন, ইহুদিবাদীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার চেয়ে বৈধ ও ন্যায়সঙ্গত আর কোনো কাজ হতে পারে না।
ইরানের পার্লামেন্ট স্পিকার বলেন: সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ ছিলেন একজন বিজ্ঞ রাজনীতিবিদ, যিনি একটি উত্তেজনাপূর্ণ যুদ্ধের ময়দানে ধর্ম ও যুক্তির ভিত্তিতে কথা বলতেন এবং কাজ করতেন; নাসরুল্লাহ শিয়া জনগোষ্ঠীকে অভ্যন্তরীণভাবে সংগঠিত করেছিলেন এবং লেবাননের অন্যান্য জনগোষ্ঠীর সঙ্গে শিয়াদের একটি সহাবস্থানের পরিবেশ তৈরি করেছিলেন।
কলিবফ আরো বলেন: শহীদ সাইয়্যেদ আব্বাস মূসাভি কিংবা সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহর মতো নেতাদের শাহাদাতে হিজবুল্লাহর যেমন শেকড় উৎপাটিত হয়নি তেমনি নিজের লক্ষ্য থেকেও বিচ্যুত হয়নি। জুলুমের বিরুদ্ধে সংগ্রাম ও মজলুমকে রক্ষা করতে হিজবুল্লাহ গঠিত হয়েছে; যে শিক্ষাটি শুধু ইসলামের কথা নয় বরং মানুষের সুস্থ বিবেকও তা উপলব্ধি করে।
ইরানের আইন সভার প্রধান বলেন: সাইয়্যেদ নাসরুল্লাহ হিজবুল্লাহকে নিছক একটি সামরিক সংগঠনে সীমাবদ্ধ রাখেননি বরং তিনি এটিকে একটি সামাজিক সংগঠনে পরিণত করেন। সেইসঙ্গে তিনি হিজবুল্লাহর সামরিক শক্তিতে এতটা উন্নত করেন যে, পশ্চিম এশিয়া অঞ্চলে এটি একটি কৌশলগত শক্তিতে রূপ নেয়।
উগ্র জঙ্গি গোষ্ঠী আইএস দমনে হিজবুল্লাহর ভূমিকার কথা বিশ্ববাসী ভুলে যাবে না বলে মনে করেন মোহাম্মাদ বাকের কলিবফ। তিনি বলেন: এই হিজবুল্লাহই নিজের যোদ্ধাদের রক্তে বিনিময়ে আইএস নাম বৈশ্বিক হুমকি প্রতিহত করেছে এবং বিশ্বে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করেছে।
কলিবফ বলেন: বর্তমানে বিশ্বে যে নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠিত রয়েছে বিশেষ করে ইউরোপ মহাদেশের নিরাপত্তা সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহর অবদান। হিজবুল্লাহ শান্তি ও স্থিতিশীলতার প্রতীক এবং মার্কিন সরকার যদি সত্যিই পশ্চিম এশিয়া অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে চাইত তাহলে সে ইহুদিবাদী ক্ষেপাটে কুকুরকে নিয়ন্ত্রণ করত। তা না করে ওয়াশিংটন হিজবুল্লাহর বিজ্ঞ ও বীর নেতাদের হত্যা করতে ইহুদিবাদী ইসরাইলকে সমরাস্ত্র ও গোয়েন্দা তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছে।
সাইয়্যেদ নাসরুল্লাহর শাহাদাতের চল্লিশতম দিবস উপলক্ষে শনিবার তেহরানে অনুষ্ঠিত স্মরণ সভায় বিশ্বের ১৩ দেশের চিন্তাবিদগণ অংশগ্রহণ করেন।#
পার্সটুডে/এমএমআই/এমএআর/১০