'নাহিদ-২' উপগ্রহ উৎক্ষেপণ: মহাকাশ যোগাযোগ প্রযুক্তিতে ইরানের বড় অগ্রগতি
-
নাহিদ-২ উপগ্রহ সফলভাবে মহাকাশে উৎক্ষেপণ
পার্স টুডে- ইরানের নিজস্ব প্রযুক্তিতে নির্মিত যোগাযোগ উপগ্রহ 'নাহিদ-২' সফলভাবে মহাকাশে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। ইরান স্পেস এজেন্সির তত্ত্বাবধানে এবং ইরান স্পেস রিসার্চ ইনস্টিটিউট ও বিভিন্ন জ্ঞানভিত্তিক কোম্পানির সহযোগিতায় তৈরি এই টেলিযোগাযোগ উপগ্রহটি ইরানের মহাকাশ টেলিকম প্রযুক্তির উন্নয়নের ক্ষেত্রে একটি বড় মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
ফার্স নিউজ এজেন্সি'র বরাত দিয়ে পার্স টুডে জানিয়েছে, 'নাহিদ ২' প্রথমবারের মতো কে.ইউ. (Ku-band) ব্যান্ড যোগাযোগ, থ্রি-অ্যাক্সিস অ্যাটিটিউড কন্ট্রোল এবং দ্বিমুখী যোগাযোগ প্রযুক্তি পরীক্ষা করবে। এই উপগ্রহের মূল লক্ষ্য হলো লো আর্থ অরবিট (LEO)-এ টেলিযোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নয়ন ও পরীক্ষা করা। এটি আরও উন্নত উপগ্রহ তৈরির জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে এবং ভবিষ্যতের টেলিযোগাযোগ উপগ্রহগুলোর জন্য হার্ডওয়্যার ভিত্তি তৈরি করবে।
এই উপগ্রহটির ওজন প্রায় ১১০ কেজি এবং এটি পৃথিবী থেকে প্রায় ৫০০ কিলোমিটার উচ্চতায় কক্ষপথে স্থাপন করা হয়েছে। এটি দ্রুত ও সরাসরি স্থল স্টেশনের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের উপযোগী করে নির্মিত হয়েছে। এর মূল কাজের মধ্যে রয়েছে ডেটা প্রেরণ ও গ্রহণ, বিভিন্ন ব্যান্ডে (UHF, Ku, X, এবং S) যোগাযোগ সিস্টেম পরীক্ষা করা। এর মধ্যে কে.ইউ ব্যান্ড ব্যবহার করা হয় স্যাটেলাইট ইন্টারনেট ও টিভি সম্প্রচারের মতো বাণিজ্যিক কাজে। এছাড়া, নাহিদ ২-এ থ্রি-অ্যাক্সিস অ্যাটিটিউড কন্ট্রোল সিস্টেম রয়েছে, যা এটিকে তিনটি মূল দিক নিয়ন্ত্রণ ও স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে।
উল্লেখযোগ্য দিক হলো—এই উপগ্রহে প্রথমবারের মতো বাস্তব আকারে "ফোল্ডিং সোলার অ্যারে" প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়েছে, যা সৌরশক্তি গ্রহণ ক্ষমতা বাড়িয়ে উপগ্রহকে দীর্ঘ সময় সক্রিয় রাখতে সাহায্য করবে।
'নাহিদ ২' হলো 'নাহিদ' প্রোগ্রামের দ্বিতীয় ধাপ, যা দ্বিমুখী যোগাযোগ এবং আরও জটিল মিশন সম্পাদনের সক্ষমতা রাখে। এটি ভবিষ্যতে উচ্চ কক্ষপথে জাতীয় টেলিযোগাযোগ উপগ্রহ তৈরির জন্য একটি পরীক্ষামূলক প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে। এছাড়া, এই উপগ্রহটি নাহিদ-২ প্রকল্প থেকে প্রাপ্ত প্রযুক্তিগত জ্ঞান অন্যান্য মহাকাশ কর্মসূচিতে স্থানান্তর করতে সহায়তা করবে।
নাহিদ-২- রাশিয়ার ভোস্তোচনি কসমোড্রোম থেকে সোয়ুজ রকেটের মাধ্যমে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। রাশিয়ার সাথে এই সহযোগিতা ইরানের সফল মহাকাশ কূটনীতির প্রমাণ, যা মহাকাশ-সংক্রান্ত পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা অতিক্রম করতে সক্ষম হয়েছে। সোয়ুজ উৎক্ষেপণযানে ইরান স্পেস এজেন্সি ও স্পেস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের লোগো দৃশ্যমান থাকায় তা ইরানের সক্রিয় অংশগ্রহণের একটি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি বহন করে।#
পার্সটুডে/এমএআর/২৬