ক্যামোমাইল: ইরানে ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসায় বহুল ব্যবহৃত ভেষজ উদ্ভিদ
-
ক্যামোমাইল ফুল
পার্সটুডে: সাদা ও হলুদ রঙের ফুলে ভরা ক্যামোমাইল বা ববুনে, ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসাশাস্ত্রে অন্যতম পরিচিত ভেষজ উদ্ভিদ। উষ্ণ ও শুষ্ক প্রকৃতির এই উদ্ভিদ শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে নানান রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
পার্সটুডের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ক্যামোমাইল শুধু ইরানেই নয়, সারা বিশ্বের ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসায় সুপরিচিত একটি ভেষজ। চিকিৎসা গ্রন্থগুলোতে একে 'পাকস্থলীর মিত্র' এবং 'হৃদয়ের উপকারী' হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
পাচনতন্ত্রের জন্য উপকারিতা:
পাচনতন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যার চিকিৎসায় ক্যামোমাইল ব্যবহৃত হয়। এর চা পেটের গ্যাস কমায়, পাচনতন্ত্রের পেশীর খিঁচুনি দূর করে এবং পাকস্থলীর ব্যথা উপশম করে। ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসাশাস্ত্রে যাঁরা বদহজম, পেট মোচড়ানো বা ক্ষুধামন্দায় ভোগেন, তাঁদের নিয়মিত ক্যামোমাইল চা পান করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
স্নায়ু শান্তকারী
ক্যামোমাইলের সবচেয়ে পরিচিত গুণ হলো এর প্রশান্তিদায়ক প্রভাব। ঘুমের আগে এর চা খেলে উদ্বেগ কমে যায় এবং ঘুম ভালো হয়। এ কারণে অনিদ্রা, হালকা বিষণ্নতা ও স্নায়বিক অস্থিরতায় প্রাচীন চিকিৎসকরা এটি ব্যবহার করতেন।

ত্বকের যত্নে ব্যবহার
ক্যামোমাইলে রয়েছে প্রদাহনাশক ও জীবাণুনাশক গুণ। শুকনো ফুলের ভাপ নেওয়া ত্বক পরিষ্কার রাখতে এবং ব্রণ কমাতে সহায়তা করে। এছাড়া হালকা ক্ষত, সামান্য দগ্ধ হওয়া কিংবা চোখের প্রদাহ চিকিৎসায়ও এর ব্যবহার রয়েছে।
সহজে জন্মানো উদ্ভিদ
ক্যামোমাইল একটি সহনশীল উদ্ভিদ, যা হালকা বেলে ও চুনাপাথরযুক্ত মাটিতে অল্প পানিতেই ভালোভাবে জন্মায়। তাই ইরানের বহু শীতল ও আধা-শুষ্ক অঞ্চলে এটি স্বাভাবিকভাবে জন্মায় কিংবা চাষ করা হয়।
কিছু সতর্কতা
যদিও ক্যামোমাইলকে নরম ও নিরাপদ ভেষজ ধরা হয়, তবে অতিরিক্ত সেবনে ঘুমভাব, পাকস্থলীর জ্বালা বা অ্যালার্জি হতে পারে। গর্ভবতী নারীদের জন্যও এর ব্যবহার সতর্কতার দাবি রাখে।
ক্ষুদ্র ও সুগন্ধিযুক্ত এই ফুলটি- মানুষের চিকিৎসায় প্রকৃতির শক্তির প্রতীক। এটি ঐতিহ্য ও স্বাস্থ্যের এমন এক সেতুবন্ধন, যা আজও ইরানি ঘরোয়া চিকিৎসার অংশ হয়ে আছে।#
পার্সটুডে/এমএআর/১৮
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।