শিরাজের বাগ-ই এরাম: যার সৌন্দর্য মানুষকে বিস্মিত ও মোহিত করে
https://parstoday.ir/bn/news/iran-i18520-শিরাজের_বাগ_ই_এরাম_যার_সৌন্দর্য_মানুষকে_বিস্মিত_ও_মোহিত_করে
ইরানিদের বিশ্বাস ও মূল্যবোধের মাঝে বাগিচা সবসময়ই বেহেশতের মতোই একটি পবিত্র স্থান হিসেবে সম্মান ও মর্যাদাময়। এ কারণে সেই ইসলামপূর্ব কাল থেকেই ইরানে বাগিচা নির্মাণের ধারা প্রচলিত হয়ে আসছে। সৌন্দর্যপ্রিয় ইরানি জাতির তৈরি করা বাগানগুলো যুগে যুগে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের মানুষকে করেছে মোহিত ও বিস্মিত। এগুলোর একটি বাগ-ই এরাম। এটি একটি বিশাল উদ্যান।
(last modified 2025-09-11T14:06:22+00:00 )
এপ্রিল ০৫, ২০১৯ ০৬:১১ Asia/Dhaka

ইরানিদের বিশ্বাস ও মূল্যবোধের মাঝে বাগিচা সবসময়ই বেহেশতের মতোই একটি পবিত্র স্থান হিসেবে সম্মান ও মর্যাদাময়। এ কারণে সেই ইসলামপূর্ব কাল থেকেই ইরানে বাগিচা নির্মাণের ধারা প্রচলিত হয়ে আসছে। সৌন্দর্যপ্রিয় ইরানি জাতির তৈরি করা বাগানগুলো যুগে যুগে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের মানুষকে করেছে মোহিত ও বিস্মিত। এগুলোর একটি বাগ-ই এরাম। এটি একটি বিশাল উদ্যান।

২০১১ সালে প্যারিসে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির পঁয়ত্রিশতম বৈঠকে ইরানের ৯টি বাগান বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে বাগ-ই এরামও রয়েছে।

‘এরাম’ শব্দটির আরবী শব্দ ‘ইরাম’। পবিত্র কুরআন শরীফে যার অর্থ দেয়া আছে বেহেশত/জান্নাত। ‘বাগ-ই এরাম’ অর্থ ‘বেহেশতের বাগান’। এর সৌন্দর্য আর নান্দনিক আকর্ষণই একে বেহেশত বা স্বর্গের সদৃশ করেছে।

ইরানের এ ঐতিহাসিক উদ্যানের অবস্থান ফার্স প্রদেশের শিরাজ নগরের কুশ্ক্ নদীর বাম তীরে। সুন্দর ফুল, নির্মল হাওয়া আর দৃষ্টিনন্দন সাইপ্রেস বৃক্ষ উদ্যানের প্রধান পর্যটক-আকর্ষণ। উদ্যানের অভ্যন্তরে স্থাপিত দু’টি মুক্ত স্থাপনা বা ভবন একে করেছে আরো বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত, যেন সে রূপকথার ভুবনমোহিনী কোনো পরী।

বাগ-ই এরাম প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮ শতকে। বিভিন্ন রাজবংশের আমলে এটি সংস্কার ও উন্নয়ন করা হয়। বর্তমানে এটি শিরাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পত্তি। আসলে এটি বিশ্বসম্পদ; দুনিয়ার অনেক মানুষেরই এ বাগানের প্রতি আকর্ষণ দেখা যায়।

রাস্তা এবং বৃক্ষ সজ্জার কৌশলের দিক থেকে বাগ-ই এরাম কেবল শিরাজের বাগানগুলোর মধ্যেই নয় বরং সমগ্র ইরানের মধ্যেই বিরল। বাগানের ভেতরে মূল যে ভবনটি রয়েছে তার সামনে বানানো হয়েছে বিশাল একটি জলাধার। ওই জলাধারের জলের ওপর ভবনটির পুরো চিত্রই প্রতিবিম্বিত হয়। বাগানের ভেতরে যে ঝর্ণাধারা রয়েছে তার জলের প্রবাহের উৎস হলো এই জলাধার।

জলাধারের দুই পাশে কেয়ারি করে সাজানো রয়েছে শেমশদ বা বক্স ট্রি'র সারি। বাগানের ভেতরের রাস্তাগুলোর পাশে বিশাল বিশাল গাছ এতো চমৎকার এক পরিবেশের সৃষ্টি করেছে যে শীতল ছায়াময় সেই পরিবেশ যে কাউকেই আকর্ষণ না করে পারে না।

বাগানের ভেতরকার ইমারত গুলোতে সপ্তরঙের টাইলসের যে নয়নাভিরাম কারুকাজ করা হয়েছে তা আজও কাজারি শাসনামলের অনাবিল সুন্দর শিল্প-সৌকর্যের নিদর্শন হিসেবে কালের সাক্ষ্য দিয়ে যাচ্ছে।#

পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/২৯