ওয়াশিংটনে ফরাসি রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যে তেহরানের তীব্র প্রতিবাদ: ব্যাখ্যা দিল প্যারিস
(last modified Tue, 16 Apr 2019 09:34:07 GMT )
এপ্রিল ১৬, ২০১৯ ১৫:৩৪ Asia/Dhaka
  • ওয়াশিংটনে নিযুক্ত ফরাসি রাষ্ট্রদূত জেরার্ড আরভ্‌ড
    ওয়াশিংটনে নিযুক্ত ফরাসি রাষ্ট্রদূত জেরার্ড আরভ্‌ড

দীর্ঘ আলোচনার পর ২০১৫ সালের ১৪ জুলাই ছয় জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে ইরানের পরমাণু সমঝোতা সই হয় এবং তা বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে। জার্মানি, ফ্রান্স ও ব্রিটেনসহ ইউরোপীয় ইউনিয়ন মনে করে পরমাণু সমঝোতা একটি বহুজাতিক চুক্তি এবং এটি আন্তর্জাতিক যে কোনো সমস্যা সমাধানে উদাহরণ হয়ে থাকবে।

এ কারণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ৮মে পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এ সমঝোতা টিকিয়ে রাখার ওপর জোর দিয়ে আসছে ইউরোপ। এমনকি তারা এটি টিকিয়ে রাখার জন্য কিছু পদক্ষেপও নিয়েছে যদিও তারা তা এখনো বাস্তবায়নের কাজ শুরু করেনি।

ওয়াশিংটনে নিযুক্ত ফরাসি রাষ্ট্রদূত জেরার্ড আরভ্‌ড সম্প্রতি দাবি করেছেন, ২০২৫ সালে ইরানের পরমাণু সমঝোতার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরও ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার অধিকার রাখবে না। তিনি আরো দাবি করেন, পরমাণু অস্ত্র উৎপাদন ও বিস্তাররোধ সংক্রান্ত এনপিটি'র বাড়তি প্রটোকল বা সম্পূরক চুক্তি অনুযায়ী ইরানের পরমাণু কর্মসূচির ওপর পূর্ণ নজরদারি অব্যাহত রাখতে হবে যাতে প্রমাণিত হয় যে দেশটির পরমাণু কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ। তার ওই বক্তব্যের প্রতিবাদে তেহরানে সদ্য নিযুক্ত ফরাসি রাষ্ট্রদূত ফিলিপ থিয়েবুকে ডেকে পাঠিয়ে এর ব্যাখ্যা চাওয়া হয়।

আব্বাস আরাকচি

ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইয়্যেদ আব্বাস আরাকচি গতকাল এক টুইট বার্তায় সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, "ওয়াশিংটনে নিযুক্ত ফরাসি রাষ্ট্রদূতের এ বক্তব্য যদি ফ্রান্স সরকারের রাষ্ট্রীয় অবস্থান হয়ে থাকে তাহলে তা পরমাণু সমঝোতা এবং জাতিসংঘে গৃহীত ২২৩১ নম্বর প্রস্তাবের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।" তিনি আরো বলেছেন, " ফ্রান্স সরকার যদি এ ব্যাপারে তার অবস্থান পরিষ্কার না করে এবং প্যারিসের বক্তব্যে যদি তেহরান সন্তুষ্ট হতে না পারে তাহলে ওই সমঝোতায় বর্ণিত ধারা অনুযায়ী ইরান এর প্রতিকারের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।"

ইরানের তীব্র প্রতিবাদের মুখে যদিও ওয়াশিংটনে নিযুক্ত ফরাসি রাষ্ট্রদূত পরমাণু সমঝোতার ব্যাপারে টুইটারে দেয়া তার ওই বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিয়েছেন কিন্তু এ ব্যাপারে তেহরানের দাবির কারণে প্যারিস ক্ষমা চাওয়ার পাশাপাশি রাষ্ট্রদূতের ওই অনাকাঙ্ক্ষিত মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে বাধ্য হয়েছে। ফরাসি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, প্যারিস পরমাণু সমঝোতা বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

এদিকে, ইউরোপীয়রা ইরানের সঙ্গে আর্থিক লেনদেনের বিশেষ ব্যবস্থা 'ইনসটেক্স' চালুর প্রতিশ্রুতি দিলেও তারা তা এখনো বাস্তবায়ন না করায় ইরান এর তীব্র সমালোচনা করে এটি বাস্তবায়নে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইউরোপীয়রা পরমাণু সমঝোতায় ইরানকে ধরে রাখার জন্য তেহরানের ন্যায়সঙ্গত দাবিদাওয়া পূরণের পরিবর্তে এমন সব অসংলগ্ন কথাবার্তা বলছে যা কেবল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের হাতকেই শক্তিশালী করছে। নিঃসন্দেহে ইউরোপের এ আচরণ আন্তর্জাতিক এ চুক্তিকে দুর্বল করবে। অথচ তারাই স্বীকার করেছে এ চুক্তি বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য খুবই জরুরি। #   

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/১৬

 

 

ট্যাগ