ভিয়েনা বৈঠক কি পরমাণু সমঝোতা রক্ষা করতে পারবে?
-
ভিয়েনা বৈঠক
আমেরিকা ছাড়া ইরানের পরমাণু সমঝোতায় স্বাক্ষরকারী বাকি দেশগুলোর উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক গতকাল ভিয়েনায় শেষ হয়েছে। তেহরানের পক্ষ থেকে ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইয়্যেদ আব্বাস আরাকচি এবং পরমাণু সমঝোতার অন্য দেশগুলোর পক্ষ থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক উপ প্রধান হেলগা স্মিত এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।
বৈঠক শেষে আব্বাস আরাকচি বলেছেন, পরমাণু সমঝোতা বিষয়ক যৌথ কমিশনের বৈঠকে দু'পক্ষই বিভিন্ন সমালোচনা ও আপত্তি উত্থাপন করলেও একটি বিষয়ে সবাই ঐকমত্যে পৌঁছেছে। আর তা হচ্ছে, এ বৈঠকে সবাই এটা মেনে নিয়েছে যে পরমাণু সমঝোতা ইস্যুতে উত্তেজনা সৃষ্টির জন্য আমেরিকা দায়ী। ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি যৌথ কমিশনের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বলেছেন, সব দেশই মার্কিন একতরফা নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করে বলেছে, "ইরানের স্বার্থের বিষয়টিকে উপেক্ষা করে পরমাণু সমঝোতা টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়।"
ভিয়েনায় রুশ প্রতিনিধি মিখাইল উলিয়ানোভ টুইটবার্তায় বলেছেন, এ বৈঠকে পরমাণু সমঝোতার প্রতি সব দেশ সমর্থন জানিয়েছে এবং সবার পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতি পালনের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এ ছাড়া, পরমাণু সমঝোতা বাস্তবায়নে সবাই একমত হওয়ার পাশাপাশি এটিকে রক্ষায় যতদ্রুত সম্ভব পদক্ষেপ নেয়ার ওপরও গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। আমেরিকা পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে গিয়ে ফের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার এক বছর পর ইরান গত ৮মে পরমাণু সমঝোতায় দেয়া বেশ কিছু প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন স্থগিত রাখার ঘোষণা দেয়। এর মধ্যে পরমাণু সমঝোতার ২৬ ও ৩৬ নম্বর ধারা বাস্তবায়ন স্থগিত রেখেছে ইরান।
ইউরোপ পরমাণু সমঝোতা রক্ষায় কোনো পদক্ষেপ না নিলেও ভিয়েনা বৈঠকের ঠিক আগে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি নিয়ে মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপন করে ইরানের ওপর পাল্টা চাপ সৃষ্টির চেষ্টা করে যাতে তেহরান পরমাণু সমঝোতা বাস্তবায়নের ব্যাপারে ইউরোপের ওপর কোনো চাপ সৃষ্টি করতে না পারে। জার্মানি, ব্রিটেন ও ফ্রান্স গত বুধবার জাতিসংঘ মহাসচিবের কাছে লেখা চিঠিতে দাবি করেছে, ইরানের কোনো কোনো ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার উপযোগী করে তৈরি করা হয়েছে যা নিরাপত্তা পরিষদের ২২৩১ নম্বর প্রস্তাবের লঙ্ঘন। ওই প্রস্তাবে বলা হয়েছে ইরান কোনো ক্ষেপণাস্ত্রকে পরমাণু অস্ত্রে সজ্জিত করতে পারবে না।
অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, ইউরোপীয়রা তাদের প্রতিশ্রুতি পাল না করে উল্টো ইরানকে নানা রকম শর্ত দিচ্ছে যা পরমাণু সমঝোতা নিয়ে সৃষ্ট সংকট মোকাবেলায় সহায়তা করেনি। ইরান এরই মধ্যে অনেক ছাড় দিয়েছে এবং নমনীয়তা দেখিয়েছে। এ অবস্থায় শেষ সুযোগ হিসেবে গতকাল অনুষ্ঠিত ভিয়েনা বৈঠক পরমাণু সমঝোতা রক্ষায় কোনো ভূমিকা রাখতে পারে কিনা সেটাই দেখার বিষয়।#
পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/৭