অস্থির পম্পেও: ইরান ইস্যুতে তার বিস্ময়কর দাবী প্রচারণার নতুন কৌশল মাত্র
https://parstoday.ir/bn/news/iran-i82612-অস্থির_পম্পেও_ইরান_ইস্যুতে_তার_বিস্ময়কর_দাবী_প্রচারণার_নতুন_কৌশল_মাত্র
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ইরানের বিরুদ্ধে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা নবায়নের জন্য মার্কিন প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর ওয়াশিংটন সর্বশেষ কৌশল হিসেবে মশে ম্যাকানিজম ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছে। এ লক্ষ্যে অজুহাত হিসেবে তারা ইরানের বিরুদ্ধে পরমাণু সমঝোতা লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তেহরানের বিরুদ্ধে সমস্ত নিষেধাজ্ঞা বলবত করার দাবি জানিয়েছে।
(last modified 2025-11-28T10:09:50+00:00 )
আগস্ট ২৮, ২০২০ ১৬:১৯ Asia/Dhaka

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ইরানের বিরুদ্ধে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা নবায়নের জন্য মার্কিন প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর ওয়াশিংটন সর্বশেষ কৌশল হিসেবে মশে ম্যাকানিজম ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছে। এ লক্ষ্যে অজুহাত হিসেবে তারা ইরানের বিরুদ্ধে পরমাণু সমঝোতা লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তেহরানের বিরুদ্ধে সমস্ত নিষেধাজ্ঞা বলবত করার দাবি জানিয়েছে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এক টুইট-বার্তায় লিখেছেন, গত সপ্তাহে নিরাপত্তা পরিষদে ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা নবায়নে ব্যর্থ হওয়ার পর তারা আগামী ৩০ দিনের মধ্যে জাতিসংঘের প্রায় সমস্ত নিষেধাজ্ঞা ফিরিয়ে আনার জন্য সর্বশক্তি নিয়োগ করবে। তিনি দাবি করেন আগামী ২০ সেপ্টেম্বর মধ্যরাত থেকে এসব নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হবে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ প্রচেষ্টার ব্যাপারে এক ব্যাখ্যা তুলে ধরে আরো বলেছেন, নিরাপত্তা পরিষদের কোনো এক সদস্য দেশ যদি নিষেধাজ্ঞা উঠয়ে নেয়ার জন্য প্রস্তাব উত্থাপন করে তাহলে ওয়াশিংটন তার বিরোধিতা করবে। আর যদি এ ধরণের কোনো প্রস্তাব উত্থাপিত না হয় তাহলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইরান-বিরোধী সব নিষেধাজ্ঞা ফিরে আসবে এবং নিরাপত্তা পরিষদে গৃহীত ২২৩১ নম্বর প্রস্তাব এভাবেই বাস্তবায়ন করা হবে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী পম্পেও ২২৩১ নম্বর প্রস্তাবের ভুল ও মনগড়া ব্যাখ্যা দিয়ে অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার চেষ্টা করছেন এবং তিনি এটা বোঝাতে চাইছেন যে, ইরান বিরোধী আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেয়ার জন্য নিরাপত্তা পরিষদে কোনো প্রস্তাব উত্থাপিত হোক বা না হোক তার ভাষায় ইরান পরমাণু সমঝোতা লঙ্ঘন করায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে ২০ সেপ্টেম্বর থেকে তেহরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা চালু হয়ে যাবে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী পম্পেও আরো বলেছেন, নিরাপত্তা পরিষদের কোনো সদস্য কিংবা এ পরিষদের সভাপতি যদি ইরান বিরোধী নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেয়ার জন্য প্রস্তাব উত্থাপন করে তাহলে আমেরিকা তাতে ভেটো দেবে। অর্থাৎ এ সংক্রান্ত প্রস্তাব পাশ না হওয়ার অর্থই হচ্ছে ইরান বিরোধী নিষেধাজ্ঞা বলবত হয়ে যাবে। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, পম্পেও ২২৩১ নম্বর প্রস্তাবের মনগড়া ব্যাখ্যা দিয়ে এসব কথা বলছেন যার কোনো ভিত্তি নেই। কেননা ইরানের বিষয়টি ভোটাভুটির জন্য অবশ্যই নিরাপত্তা পরিষদে উত্থাপিত হতে হবে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, মার্কিন প্রশাসন প্রথমত ইরান বিরোধী নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নের একটা মনগড়া ব্যাখ্যা দাড় করানোর চেষ্টা করেছে এবং দ্বিতীয়ত, নিজের ইচ্ছা বাস্তবায়নে ট্রাম্প সরকারের আন্তরিকতার প্রমাণ দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে মশে ম্যাকানিজম চালুর বিষয়ে মার্কিন প্রচেষ্টার ব্যাপারে মতামত জানানোর জন্য চীন ও রাশিয়ার দাবির জবাবে নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতি গত মঙ্গলবার বলেছেন, ইরান বিরোধী নিষেধাজ্ঞা ফিরিয়ে আনার মতো অবস্থায় আমেরিকা নেই।

এ কারণে মার্কিন সরকার নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য দেশগুলোর বিরুদ্ধে নজিরবিহীন হুমকি দিয়েছে। জাতিসংঘে মার্কিন প্রতিনিধি ওই দেশগুলোকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, যারাই ইরান বিরোধী নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেয়ার পক্ষে কথা বলবে তাদেরকেই মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মোকাবেলা করতে হবে। এ হুমকি থেকে বোঝা যায় আমেরিকা চরম হতাশ হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে ইরান ইস্যুতে এ ধরণের পরাজয় ট্রাম্প প্রশাসন কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না। কারণ ট্রাম্পের এ পরাজয় নির্বাচনেও তার জন্য পরাজয় ডেকে আনতে পারে।#  

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/২৮