শ্রোতাদের মতামত
'কুরআনের আলো প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে প্রজ্বলিত হোক'
আসসালামু আলাইকুম। আমার প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানবেন। রেডিও তেহরানের বাংলা বিভাগ থেকে ১২ জুলাই,বুধবার যেসব অনুষ্ঠান প্রচারিত হয় সেগুলোর মধ্যে কুরআনের আলো অনুষ্ঠানটি ছিল অতুলনীয়। আসলে এটি শুধু নিছক একটি অনুষ্ঠান নয়, বরং একটি জীবন ব্যবস্থা। আল্লাহকে, মহানবীকে, ইসলামকে জানা ও বুঝার জন্য উত্তম অনুষ্ঠান এটি।
আকতার জাহান ও সোহেল আহমদের উপস্থাপনায় ওই দিনের কুরআনের আলোতে সূরা মুলকের ১৫ থেকে ১৯ নম্বর আয়াতের তেলাওয়াত, তরজমা ও বিশ্লেষণ প্রচারিত হয়। অসাধারণের তেলাওয়াতের সাথে নির্ভুল তরজমা ও সঠিক বিশ্লেষণ আমাদেরকে মুগ্ধ করেছে, অনুপ্রাণিত করেছে।
শুরুতে উক্ত সূরার ১৫ নম্বর আয়াতে বলা হয় যে, মহান আল্লাহ মানুষের জন্য জমিনকে সুগম করে দিয়েছেন। ভূ-পৃষ্ঠ স্থির না থাকলে মানুষের পক্ষে জীবন ধারন সহজ হতো না। মানুষের রিযিক মহান আল্লাহর দান। ভূ-পৃষ্ঠের একাংশ স্থলভাগ, যেখানে মানুষ বসবাস করে এবং কাজকর্ম করে জীবিকা নির্বাহ করে। এছাড়া ভূপৃষ্ঠের অভ্যন্তরে আল্লাহ নানা খনিজ সম্পদ লুকিয়ে রেখেছেন, যা মানুষ ব্যবহার করতে পারবে।
অতঃপুর সূরা মুলকের ১৬ ও ১৭ নম্বর আয়াতের তেলাওয়াত, তরজমা ও ব্যাখ্যা প্রচার করা হয়। এটি শুনে আমাদের হৃদয় কাঁপতে থাকে, আল্লাহর ক্ষমতা ও দয়া দেখে আমরা মুগ্ধ হযে যাই। উক্ত আয়াত দুটিতে বলা হয় যে, মানুষ আল্লাহর ইচ্ছা শক্তির কাছে নিতান্তই অক্ষম। আল্লাহ ইচ্ছা করলে সবাইকে ধ্বংস করে দিতে পারেন, শাস্তি দিতে পারেন। মানুষ যেন তা না ভুলে যায়।
সবশেষে এ সূরার ১৮ ও ১৯ নম্বর আয়াত থেকে আমরা জানতে পারি যে, অতীত জাতিগুলোর যারা আল্লাহকে অস্বীকার করেছে তিনি তাদের কঠোর শাস্তি দিয়েছেন। দম্ভকারীদের দম্ভ চূর্ণ করে দিয়েছেন। এরপর এখানে পাখির উদাহরণ দেয়া হয়েছে। মহান আল্লাহ পাখিকে ডানা দিয়েছেন, উড়বার ক্ষমতা দিয়েছেন, হাজার হাজার কিলোমিটার দূরে যাওয়ার সক্ষমতা দিয়েছেন। নির্দিষ্ট গন্তব্যে নির্ভুলভাবে পৌঁছার উপায় দিয়েছেন। আল্লাহ সর্ববিষয়ে জ্ঞাত, সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী।
অনুষ্ঠান শুনতে শুনতে মনে পড়ছে, গত ২৩ জুন ২০২৩ তারিখে ঢাকায় ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে কুরআনের আলো অনুষ্ঠানের তাফসিরকারক জনাব কারাআতিকে সম্মাননা জানিয়ে হয়ে যাওয়া অনুষ্ঠানে কথা। সে অনুষ্ঠান থেকে আমরা জনাব কারাআতি সম্পর্কে অনেক কিছুই জানতে পারি। আমি নিজেও তাতে কথা বলার সুযোগ পাই। মনে পড়ছে, অনেক কথার সাথে আমি এটিও বলেছিলাম যে, কুরআনের আলো অনুষ্ঠানটি যেন বই আকারে প্রকাশ করে বিভিন্ন মাদ্রাসা ও স্কুল-কলেজে বিতরণ করা হয়। সেদিন আমার এ প্রস্তাব অনেকের প্রশংসা কুড়িয়েছিল। আর আজকের অনুষ্ঠান শুনতে শুনতে সে দাবিটাই আরো জোড়ালোভাবে করার কথাই মনে আসছে।
পরিশেষে কুরআনের আলো প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে প্রজ্বলিত হোক- সে কামনাই করি।
ধন্যবাদান্তে,
মোঃ শাহাদত হোসেন
সহকারী অধ্যাপক, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ
গুরুদয়াল সরকারি কলেজ, কিশোরগঞ্জ- ২৩০০, বাংলাদেশ।
পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/১