কথাবার্তা: করোনায় নাকি ক্ষুধায় মৃত্যু! কোটি কোটি মানুষের প্রশ্ন
(last modified Mon, 11 May 2020 13:04:53 GMT )
মে ১১, ২০২০ ১৯:০৪ Asia/Dhaka
  • কথাবার্তা: করোনায় নাকি ক্ষুধায় মৃত্যু! কোটি কোটি মানুষের প্রশ্ন

সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতা: ১১ মে সোমবারের কথাবার্তার আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি বাবুল আখতার। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি। এরপর গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিশ্লেষণে যাবো। বিশ্লেষণ করবেন সহকর্মী সিরাজুল ইসলাম।

বাংলাদেশের শিরোনাম:

  • ২৪ ঘন্টায় করোনায় সর্বোচ্চ আক্রান্ত , মৃত ১১ -দৈনিক ইত্তেফাক
  • ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাতেও মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব-দৈনিক মানবজমিন
  • করোনা রোগীর প্রতি নেতিবাচক দৃষ্টি নয়-দৈনিক যুগান্তর
  • গাড়ি থেকে ন্যাশনাল ব্যাংকের প্রায় ১ কোটি টাকা উধাও-দৈনিক সমকাল/ইত্তেফাক
  • আড়াই হাজার করে টাকা পাবে ৫০ লাখ পরিবার-দৈনিক প্রথম আলো
  • পুলিশে করোনা আক্রান্ত বেড়ে ১৭৫৬ জনে পৌ!ছেছে-দৈনিক কালের কণ্ঠ
  • করোনায় মৃত্যুর দায় সরকারকে নিতে হবে-দাবি রিজভীর-বাংলাদেশ প্রতিদিন

ভারতের শিরোনাম:    

  • ভারতে মৃতের সংখ্যা প্রায় ২ হাজার ও আক্রান্ত ৬০ হাজার ছুঁতে চলল-দৈনিক আজকাল 
  • ৩ অভিবাসী শ্রমিকের মৃত্যু ওড়িশ্যা  ও কেরলে, মধ্যপ্রদেশে আর ৫ জন মৃত-দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা
  • সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল -দৈনিক সংবাদ প্রতিদিন

পাঠক/শ্রোতা! এবারে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিশ্লেষণে যাব। 

কথাবার্তার বিশ্লেষণের বিষয়:

১) সরকারের শুদ্ধি অভিযান এখনো চলমান, বলেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আপনার পর্যবেক্ষণ কী?

২)করোনায় পাশ্চাত্যের তিন রকমের ব্যর্থতা প্রমাণিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা। আপনি কি বলবেন? 

বিশ্লেষণের বাইরে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবর:

বিশ্বের করোনা পরিস্থিতি

বিশ্ব করোনা পরিস্থিতির আপডেট খবর একনজরে:লকডাউন তুলতেই বিপড় বাড়ল বিশ্বে- দৈনিক যুগান্তরের এ শিরোনামের প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, করোনায় নাকি ক্ষুধায় মৃত্যু- বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের সামনে এখন এ প্রশ্ন। লকডাউনে ঘরে থাকলে না খেয়ে মৃত্যু। আর আয়-রোজগারের জন্য বের হলে করোনায় মৃত্যুর ভয়।

লকডাউন আর অর্থনীতির চাকা এ দুটির মধ্যে ভারসাম্য আনার চেষ্টা করেছে অনেক দেশ। লকডাউনের কড়াকড়ি কিছুটা শিথিল করে নিয়ম মেনে দোকানপাট, স্কুল-কলেজ এমনকি মদের বার ও নাইট ক্লাবও খুলে দিয়েছে কোনো কোনো দেশ। আর এতেই নতুন করে বিপদে পড়ছে বিশ্ববাসী। যেসব দেশে করোনা সংক্রমণ অনেকটা শূন্যের কোঠায় নেমেছিল সেসব দেশেও ফের শুরু হয়েছে সংক্রমণ। এর ফলে চীন, দক্ষিণ কোরিয়া ও জার্মানিতে লেগেছে করোনার দ্বিতীয় ধাক্কা।

নতুন এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, চীনে করোনার কবল থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন যারা তাদের ৫ থেকে ১৫ শতাংশ মানুষ ফের এ ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন। সংবাদ মাধ্যম ‘ব্লুমবার্গ’র এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। আর এ তথ্যই চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের চিকিৎসকদের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে। পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের সংক্রামক রোগ বিভাগের পরিচালক ওয়াং গুইকিয়াং জানান, লকডাউন শিথিলের সংক্রমণ বেড়েছে।

এদিকে ধাপে ধাপে লকডাউন তুলে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাজ্য সরকার- দৈনিক ইত্তেফাকে ছাপা হয়েছে।

‘করোনা-ঝড়ে’ লণ্ডভণ্ড যুক্তরাষ্ট্র, ২৪ ঘণ্টায় দেড় হাজার মানুষের মৃত্যু-দৈনিক যুগান্তরের এ খবরে লেখা হয়েছে,

কোভিড-১৯ মহামারীতে লণ্ডভণ্ড যুক্তরাষ্ট্র। করোনায় আক্রান্ত ও প্রাণহানিতে যুক্তরাষ্ট্রের ধারেকাছেও নেই কোনো দেশ। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবর– দেশটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে ১ হাজার ৪১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৮০ হাজার ৭৮৭ জনের।তবে এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে প্রায় ৮০০ জনের মৃত্যু হয়েছে।

করোনাভাইরাসে প্রাণহানি ও মৃত্যুর পরিসংখ্যান রাখা আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়ার্ল্ডওমিটারসের পরিসংখ্যান বলছে, দেশটিতে নতুন করে ২৪ হাজার ৯৮৬ জন প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।ওয়ার্ল্ডওমিটারসের তথ্যানুযায়ী, সোমবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত করোনাভাইরাসে ৮০ হাজার ৭৮৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর আক্রান্ত হয়েছেন ১৩ লাখ ৬৭ হাজার ৬৩৮ জন।গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে ১ হাজার ৮১৬ জনের মৃত্যুর পাশাপাশি আক্রান্ত হয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ।বিশ্ব করোনায়  এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে, ২,৮২,৭৪৩, আক্রান্ত  ৪১,৫৩,২৭০ আর সুস্থ্য হয়েছেন ১৪,৬৫,৬১৪ জন।

বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতি:

বাংলাদেশে করোনায় মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। মোট মৃতের সংখ্যা ২৩৯ জন।

বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু, অভিযোগ বাড়ছে-দৈনিক মানবজমিনের এ প্রতিবেদনে লেখf হয়েছে,করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। একই সঙ্গে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যাও। করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন হাসপাতালে আলাদা ইউনিট খোলা হয়েছে। আবার সরকার নির্দিষ্ট ক’টি হাসপাতালকে করোনা হাসপাতাল হিসেবে ঘোষণা করেছে। কিন্তু তারপরও করোনা রোগীরা চিকিৎসা পাচ্ছেন না- এমন অভিযোগ রয়েছে।  অন্যদিকে করোনা রোগী ছাড়া অন্যকোনো রোগীও চিকিৎসা পাচ্ছেন না। এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতাল ঘুরেও তারা ভর্তি হতে পারছেন না। রোগীকে নিয়ে এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে ঘুরতে ঘুরতে এম্বুলেন্সেই মারা যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। সর্বশেষ বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে অতিরিক্ত সচিব গৌতম এইচ সরকারের।

 দৈনিক ইত্তেফাক ও সমকালে পরিবেশিত একটি খবর-গাড়ি থেকে ন্যাশনাল ব্যাংকের প্রায় ১ কোটি টাকা উধাও! গতকাল দুপুরে ইসলামপুর থেকে মতিঝিলে টাকা নেয়ার সময় এ ঘটনা ঘটে। এদিকে পাবনায় এক ব্যবসায়ীকে ছুরিকাঘাত করে ১৩ লাখ টাকা ছিনতাই করে পালানোর সময় জেলা ছাত্রলীলের সহসভাপতি রুহুল আমিনমৃধাসহ ৩ জন আটক।

এবার ভারতের কয়েকটি খবর তুলে ধরছি

ভারতে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে আর আক্রান্ত বেড়ে গেল লাফিয়ে।২৪ ঘণ্টায় সংক্রমিত ৪,২১৩! বড়সড় লাফ দিল দেশে করোনা সংক্রমণ। যার ফলে দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যাও এক লাফে বেড়ে হয়েছে ৬৭ হাজার ১৫২ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৯৭ জনের। দেশে মোট মৃতের সংখ্যা এখন ২ হাজার ২০৬ জন। দেশে সংক্রমণ বাড়লেও, সুস্থ হয়ে ওঠার হারও অনেকটা বেড়েছে। এটি দৈনিক আজকাল ও আনন্দবাজার পত্রিকার খবর।

দৈনিক সংবাদ প্রতিদিন লিখেছে , আর ফাঁকা ফাঁকা নয়! এবার যাত্রী বোঝাই করেই চলবে ‘শ্রমিক স্পেশ্যাল’ ট্রেন

‘শ্রমিক স্পেশ্যাল’ ট্রেনে পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরানো নিয়ে বিস্তর বিতর্কের মধ্যেই নয়া নির্দেশিকা রেল দপ্তরের। এবার আর ফাঁকা ফাঁকা করে ট্রেন চালানো হবে না। যাত্রী ভরতি করেই ছুটবে এই ট্রেনগুলি। শুধু তাই নয়, গন্তব্যে পৌঁছানোর আগে তিনটি স্টেশনে দাঁড়ও করানো হবে ‘শ্রমিক স্পেশ্যাল’ ট্রেনগুলিকে। সোমবার এমনই নির্দেশিকা দিয়েছে রেল মন্ত্রক।কেন্দ্র পরিযায়ী শ্রমিকদের রাজ্যে ফেরানোর কথা ঘোষণা করতেই লক্ষ লক্ষ মানুষ নিজেদের রাজ্যে ফিরতে চেয়ে আবেদন করেছেন। এঁদের বেশিরভাগই শ্রমিক শ্রেণির। কেউ হয়তো সদ্য ভিনরাজ্যে গিয়েছেন, কেউ হয়তো দীর্ঘদিন ধরেই আছেন। কিন্তু সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য এতদিন এক একটি ট্রেনে মোট ১২০০ জন যাত্রী নিয়ে চালানো হচ্ছিল কিন্তু  এখন১৭০০ জন অর্থাৎ মোট আসনসংখ্যার সমান যাত্রী বহন করবে ট্রেনগুলি। 

এদিকে দৈনিক আজকালের খবরে লেখা হয়েছে, ‘একইভাবে বাস এবং বিমান চালাক কেন্দ্র’, যাত্রীবাহী ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে মন্তব্য করেছেন সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পি  চিদম্বরম।  

দৈনিকটির অন্য একটি খবরে লেখা হয়েছে,  লকডাউনের সময়ে স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত সবাই এবং সাফাইকর্মীরাও যাতে সর্বত্র নির্বিঘ্নে চলাফেরা করতে পারে তা নিশ্চিত করতে রাজ্য সরকারগুলোকে আজ নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র।#  

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/১১