যতই দিন গড়াচ্ছে ততই সৌদি যুবরাজের যুদ্ধাপরাধের মাত্রা বেড়ে চলেছে
https://parstoday.ir/bn/news/west_asia-i116128-যতই_দিন_গড়াচ্ছে_ততই_সৌদি_যুবরাজের_যুদ্ধাপরাধের_মাত্রা_বেড়ে_চলেছে
দিন যতই গড়াচ্ছে ততই সৌদি যুবরাজ বিন সালমানের যুদ্ধাপরাধের মাত্রা বেড়েই চলেছে। যদিও পাশ্চাত্যের গণমাধ্যমগুলোর নজর এখন ইউক্রেনের দিকে কিন্তু ইয়েমেনের শিশুদের মতো নির্যাতিত হতে দেখা যায়নি বিশ্বের আর কোনো অঞ্চলের শিশুদের।
(last modified 2025-07-29T12:16:04+00:00 )
নভেম্বর ২০, ২০২২ ১৪:১৭ Asia/Dhaka

দিন যতই গড়াচ্ছে ততই সৌদি যুবরাজ বিন সালমানের যুদ্ধাপরাধের মাত্রা বেড়েই চলেছে। যদিও পাশ্চাত্যের গণমাধ্যমগুলোর নজর এখন ইউক্রেনের দিকে কিন্তু ইয়েমেনের শিশুদের মতো নির্যাতিত হতে দেখা যায়নি বিশ্বের আর কোনো অঞ্চলের শিশুদের।

ইয়েমেনের স্বাস্থ্য  মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে সেদেশে প্রতিদিন জন্ম নেয়া শিশুদের মধ্যে ৮০ টিরও বেশি শিশু প্রাণ হারাচ্ছে। ইয়েমেনে বছরে  প্রায় ১১ লাখ ২০ হাজার জন্ম নেয় যাদের মধ্যে ৩৯ শতাংশ শিশুরই অকাল জন্ম হচ্ছে। সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ইয়েমেনে নিষিদ্ধ অস্ত্র ব্যবহার করার কারণে পরিবেশ দুষিত হয়ে ওঠায় এসব শিশুর অকাল জন্ম হচ্ছে। ইয়েমেনের স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে জন্ম নেয়া এসব প্রিম্যাচিউর বাচ্চা বা সময়ের আগেই জন্ম নেয়া শিশু সংরক্ষণের জন্য অন্তত দুই হাজারটি বেবি কেয়ার যন্ত্র দরকার। অথচ সেখানে রয়েছে মাত্র ৬৩২টি বেবি কেয়ার যন্ত্র। এর স্বল্পতার কারণেই মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে।

ইয়েমেনের ন্যাশনাল সালভেশন সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিশাম শারাফুদ্দৌলা রাজধানী সানায় ইউনিসেফের নতুন প্রতিনিধির সঙ্গে সাক্ষাতে বলেছেন, ইয়েমেনে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে। তিনি বলেন সৌদি আগ্রাসনের ফলে ইয়েমেনের নারী ও শিশুরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিরামহীন সৌদি বিমান হামলায় ইয়েমেনের বহু হাসপাতাল ধ্বংস অথবা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খুব কম হাসপাতালই ভালো সেবা দিতে পারছে। বেশিরভাগ স্কুল বন্ধ রয়েছে এবং প্রতি তিনটি শিশুর মধ্যে একটি শিশু কোনমতে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারছে।  

ইয়েমেনের ক্ষতিগ্রস্ত একটি স্কুল

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের হামলায় শুধু যে শিশুরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তাই নয় একই সাথে দেশটির মোট জনসংখ্যার ৮০ শতাংশের বেশি মানুষ ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন। ইউনিফেস ও বিশ্ব-স্বাস্থ্য সংস্থা বহুবার সতর্ক করে দিয়ে বলেছে ইয়েমেনের বিরুদ্ধে আগ্রাসন অব্যাহত থাকলে গত ১০০ বছরে  বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের কবলে পড়বে এ দেশটি।

ইয়েমেনের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, সামরিক হামলা ও অবরোধের কারণে বহু অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় ডেঙ্গুসহ নিরাময় অযোগ্য বহু ধরনের রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। গত পাঁচ বছরে দুই লাখ ৬০ হাজার মানুষ বিভিন্ন রোগে প্রাণ হারিয়েছে। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশনারের দফতর থেকে বলা হয়েছে ইয়েমেনের দুই তৃতীয়াংশ মানুষের জন্য জরুরি মানবিক সাহায্যের প্রয়োজন এবং দেশটির ৮০ শতাংশ মানুষ চরম দারিদ্রসীমার নীচে দিনাতিপাত করছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, যদিও ইয়েমেনে মানবিক বিপর্যয়ের জন্য সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের আগ্রাসনকে দায়ী করা হচ্ছে কিন্তু আন্তর্জাতিক স্বাধীন তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা গেছে এর জন্য জাতিসংঘও কম দায়ী নয়। এই সংস্থা চায়নি অথবা পারেনি ইয়েমেন সংকট থামাতে।

সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট গত সাত বছর ধরে ইয়েমেনে আগ্রাসন চালিয়ে গেলেও দেশটির জনগণ পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে এবং এখন আগ্রাসীদের ওপর পাল্টা আঘাত হানা শুরু করেছে। আগ্রাসীরা আজ পর্যন্ত ইয়েমেনে কোনো লক্ষ্যই অর্জন করতে পারেনি। এ অবস্থায় সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের সামনে দুটি পথ খোলা রয়েছে। হয় তাদেরকে ইয়েমেনের জনগণের দাবির কাছে মাথা নত করে যুদ্ধের অবসান ঘটাতে হবে অথবা ইয়েমেনি যোদ্ধাদের পক্ষ থেকে পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা মোকাবেলা করতে হবে।# 

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/২০

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।