ইসরাইলের স্বপ্ন পূরণ হয়নি
বাশার আসাদকে মেনে নিয়েই সিরিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের পথে আরব বিশ্ব
সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট বাশার আসাদের নেতৃত্বাধীন সিরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে আরব দেশগুলোর তৎপরতা ব্যাপক বেড়েছে। আরব দেশগুলোর সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সফরের পর মিশরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সামেহ শুকরি সিরিয়া গেছেন। প্রেসিডেন্ট বাশার আসাদের সঙ্গে তাদের বৈঠক হয়েছে। এক দশকেরও বেশি সময় পর সিরিয়ার সঙ্গে আরব দেশগুলোর সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠার জোরালো ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
৬ ফেব্রুয়ারির ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর মানবিক দিক বিবেচনায় এসব সফর অনুষ্ঠিত হলেও বাশার আসাদের সঙ্গে আরব প্রতিনিধিদের একের পর এক হৃদ্যতাপূর্ণ বৈঠক নিঃসন্দেহে কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক সম্পর্কেও প্রভাব ফেলবে। আরব দেশগুলোর প্রতিনিধিদের স্বাগত জানিয়ে বাশার আসাদ বলেছেন, এসব সফরের অর্থ হচ্ছে যুদ্ধ ও ভূমিকম্পের পর সৃষ্ট কঠিন পরিস্থিতিতে তারা সিরিয়ার প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। অবশ্য ভূমিকম্পের আগে থেকেই কোনো কোনো আরব দেশ সিরিয়াকে আরব সংগঠনগুলোতে ফিরিয়ে নেয়ার জন্য জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে।
সিরিয়া ইস্যুতে বড় যে পরিবর্তন লক্ষণীয় তাহলো- এখন আর কোনো আরব দেশ সিরিয়ার রাষ্ট্র ও সরকার ব্যবস্থায় পরিবর্তনের কথা বলছে না। যেসব আরব রাষ্ট্র বাশার আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করতে সর্বশক্তি নিয়োগ করেছিল তারাও এখন তাদের সুর পাল্টে ফেলেছে। বাশার আসাদের বৈধতার প্রশ্নটি এখন একেবারেই অবান্তর। তারা এখন বাশার আসাদের সরকারের প্রতি সমর্থন ঘোষণা করে সম্পর্ক আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য আগ্রহ দেখাচ্ছে।
সব ঝড় ঝাপটা সামলে বাশার আসাদ এখন বীরের আসনে। সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দিয়ে আমেরিকাসহ গোটা পাশ্চাত্য, দখলদার ইসরাইল ও কিছু প্রতিবেশী দেশ সিরিয়ায় ইসরাইলপন্থী যে সরকার ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চেয়েছিল তা পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। আরব দেশগুলো বাস্তবতা মেনে নিয়ে নিজেদের মধ্যে আবারও বন্ধন শক্তিশালী করতে চাইছে যা গোটা আরব অঞ্চলের আর্থ-রাজনৈতিক অঙ্গনকেই প্রভাবিত করবে।
সিরিয়া সফরে যাওয়া আরব সংসদীয় প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন ইরাকের সংসদ স্পিকার মুহাম্মাদ আল হালবুসি। তিনি বলেছেন, সব আরব দেশের প্রতিনিধি হিসেবেই তারা সিরিয়া সফর করেছেন এবং সিরিয়ার জনগণের প্রতি তাদের সমর্থন রয়েছে। এই সফরে সৌদি আরব ও কাতারের মতো কয়েকটি দেশের কোনো প্রতিনিধি ছিল না। তবে এসব দেশও এরিমধ্যে নানা উপায়ে সিরিয়ার বাশার আসাদ সরকারের প্রতি তাদের সমর্থনের কথা জানিয়ে দিয়েছে। এসব দেশও সিরিয়ার সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করছে। সিরিয়ার সঙ্গে আরব দেশগুলোর সম্পর্ক স্বাভাবিক হলে সন্ত্রাস দমনও অনেক সহজ হয়ে ওঠবে।#
পার্সটুডে/এসএ/২৮
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।