হামাসকে ধ্বংস: গাজায় ইহুদিবাদী ইসরাইলের অসম্ভব এবং অপূরণীয় সামরিক অভিলাষ
https://parstoday.ir/bn/news/west_asia-i132152-হামাসকে_ধ্বংস_গাজায়_ইহুদিবাদী_ইসরাইলের_অসম্ভব_এবং_অপূরণীয়_সামরিক_অভিলাষ
গাজা যুদ্ধ তৃতীয় মাস অতিক্রম করছে কিন্তু ইহুদিবাদী ইসরাইল হামাসকে ধ্বংস করাসহ তাদের কোনো সামরিক লক্ষ্যই অর্জনে সফল হয়নি।
(last modified 2025-10-27T13:35:51+00:00 )
ডিসেম্বর ১৬, ২০২৩ ১৩:২৩ Asia/Dhaka

গাজা যুদ্ধ তৃতীয় মাস অতিক্রম করছে কিন্তু ইহুদিবাদী ইসরাইল হামাসকে ধ্বংস করাসহ তাদের কোনো সামরিক লক্ষ্যই অর্জনে সফল হয়নি।

ইসরাইল ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসকে ধ্বংস করার জন্য গাজায় তাদের সর্বাত্মক সামরিক অভিযানের লক্ষ্য ঘোষণা করেছে। ইসরাইলের শাসক গোষ্ঠী একদিকে মনে করছে হামাস যোদ্ধারা আল-আকসা তুফান অভিযান পরিচালনা করায় অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় নিজেদের চলমান আগ্রাসনের ব্যর্থতার দায় ধামাচাপা দেয়া সম্ভব হবে যদি তারা হামাসকে ধ্বংস  করতে না পারে। অন্যদিকে হামাসকে নিশ্চিহ্ণ করে নিজের বিরুদ্ধে ক্রমাগত এবং স্থায়ী হুমকি মুছে ফেলার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে তেল আবিবের অবৈধ সরকার।

গাজার বিরুদ্ধে ইসরাইলের বর্বরোচিত এবং পাশবিক আগ্রাসন প্রায় ৭০ দিন পেরিয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত তারা হামাসকে নির্মূল করতে কেবল ব্যর্থই হয়নি বরং যুদ্ধ অব্যাহত থাকায়  ইহুদিবাদীদের বিরুদ্ধে নিন্দা ও ক্ষোভ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ছে। অনেক পশ্চিমা এবং ইউরোপীয় কর্মকর্তারা সম্প্রতি বলেছেন যে হামাস কেবল একটি প্রতিরোধকামী সংগঠনই নয়, এটি একটি আদর্শের নাম। তাই একে নির্মূল করা মোটেও সম্ভব নয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক প্রধান কর্মকর্তা জোসেপ বোরেল সম্প্রতি বার্সেলোনায় এক সভায় বলেছেন যে হামাস একটি আদর্শ এবং এটি ধ্বংস করা যাবে না। এর আগে আমেরিকান কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন্সের প্রধান রিচার্ড হাস বলেছিলেন যে হামাসকে নির্মূল করা যাবে না কারণ এটি একটি আদর্শ। তাই এসব পরিস্থিতে ইসরাইলের যুদ্ধমন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট হামাসের সাথে যুদ্ধের অসুবিধার কথা তুলে ধরে বলেছিলেন যে এই যুদ্ধ কয়েক মাস ধরে চলবে।

বাস্তবতা হল যে, গাজা উপত্যকায় উচ্চ জনপ্রিয়তা থাকায় ইহুদিবাদী ইসরাইল হামাসকে নির্মূল করতে সক্ষম হবে না। যে কোনো আন্দোলনের প্রতি জনগণের কি পরিমাণ সমর্থন রয়েছে সেটা সেই আন্দোলনের পরিধি এবং এর আকার থেকে বোঝা যায়। একদিকে হামাস একটি বৃহৎ সংগঠন যার সমর্থনের ডালপালা পুরো ফিলিস্তিন জুড়ে রয়েছে। কারণ গত দুই মাসে প্রায় চার হাজার পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনি ইহুদিবাদী শাসক গোষ্ঠীর হাতে বন্দী হয়েছেন এবং এই বন্দীদের অধিকাংশই হামাস আন্দোলনের সদস্য। গাজা উপত্যকায় গত দুই মাসে এই আন্দোলন ইসলামিক জিহাদসহ অন্যান্য প্রতিরোধকামী সংগঠনের সহায়তায় হানাদার ইসরাইলি বাহিনীর বিরুদ্ধে ভয়ানক যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে এখনো বীরদর্পে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।অন্যদিকে আইন এবং সাংবিধানিক দৃষ্টিকোন থেকে দেখলে ফিলিস্তিনে হামাসের জনপ্রিয়তার ব্যাপকতা বোঝা যায়।২০০৬ সালের সংসদীয় নির্বাচনে হামাস ১৩২টি আসনের মধ্যে ৭৪টি বা প্রায় ৬০ ভাগ ভোট লাভ করে এবং সরকার গঠনের যোগ্যতা অর্জন করে। ফলে এর মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের মধ্যে হামাস আন্দোলনের জনপ্রিয়তা এবং ব্যাপক সামাজিক ভিত্তির মাত্রা বোঝা যায়।

যাইহোক ইসরাইলিরা আশা করেছিল যে তারা গাজা উপত্যকার বাসিন্দাদের হত্যা ও তাদের ঘরবাড়ি ধ্বংস করে দিলে গাজার জনগণ হামাস আন্দোলনকে সমর্থন করা থেকে সরে আসবে কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি বরং ফিলিস্তিনের পুরো ভূখণ্ডে হামাসের জনপ্রিয়তা আবো বেশি বেড়ে গেছে। ফিলিস্তিনি সমাজ এবং গাজা উপত্যকার একটি অংশ হিসেবে ফিলিস্তিনের মুক্তির জন্য  হামাস শত শত এবং হাজার হাজার শহীদদের আত্মত্যাগ করেছে। আর এই কারণেই হামাসকে ধ্বংস করা যাবে না। তাই যুদ্ধ যত দীর্ঘায়িত হবে ইহুদিবাদী ইসরাইল ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে তার অপরাধযজ্ঞের মাত্রা কেবল বাড়িয়ে তুলতে পারবে হামাসকে নিশ্চিহ্ণ করার আশা তাদের কোনো দিনই পূরণ হবে না। #

পার্সটুডে/ এমবিএ/ ১৬

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।