কেন সর্বস্ব নিয়ে ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়াল ইয়েমেনিরা?
মজলুম ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে ইয়েমেনিদের সংগ্রাম অব্যাহত রয়েছে। তারা লোহিত সাগরে ইসরাইলের অর্থনীতির লাইফ লাইনে আঘাত হানতে সক্ষম হয়েছে। ইয়েমেনিরা কেন গাজাবাসীর পক্ষে সংগ্রামে নেমেছেন তার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন ইরানে নিযুক্ত ইয়েমেনের রাষ্ট্রদূত ইব্রাহিম মুহাম্মাদ আদদেইলামি।
ইরানের একটি গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ইয়েমেন ফিলিস্তিনি প্রতিরোধকে নানা ভাবে সমর্থন করে এবং এই সমর্থন শুধু সামরিক ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ নয়। আমরা আমাদের নৈতিক, ধর্মীয় এবং মানবিক দায়িত্ববোধ থেকে গাজার সমর্থনে সোচ্চার হয়েছি। কারণ, আমরা ফিলিস্তিনি জাতির বিরুদ্ধে ইহুদিবাদী ইসরাইলের ব্যাপক মাত্রার অপরাধযজ্ঞ দেখেও চুপচাপ বসে থাকতে পারি না। আল-আকসা তুফান অভিযান শুরু হওয়ার মুহূর্ত থেকেই ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন করে এসেছি আমরা। ফিলিস্তিনের সমর্থনে বিক্ষোভ, সেইসাথে রাজনৈতিক দল ও সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক বিবৃতির মধ্যদিয়ে ফিলিস্তিনিদের প্রতি ইয়েমেনের সর্বস্তরের জনগণের সমর্থনের বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আল-আকসা তুফান অভিযান ফিলিস্তিনিদের জন্য একটা বড় ধরণের বিজয়। এই অভিযানের পর থেকেই কাফের পশ্চিমা দেশগুলোর স্পষ্ট, প্রকাশ্য এবং সীমাহীন সমর্থন নিয়ে গাজার বিরুদ্ধে ইহুদিবাদী ইসরাইল বর্বর ও ঘৃণ্য আগ্রাসন শুরু করে। গাজায় ইহুদিবাদী ইসরাইলের সামরিক আগ্রাসন এবং তার ভয়ঙ্কর অপরাধে এ পর্যন্ত হাজার হাজার ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছেন। মুসলিম উম্মাহর সন্তানদের প্রতি এই অপরাধযজ্ঞের মধ্যদিয়ে দখলদার ইসরাইলের প্রকৃত চেহারা আরও একবার উন্মোচিত হয়েছে। বিভিন্ন দেশ, সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সংস্থার নীরবতা ও সহযোগিতায় এবং দুর্ভাগ্যবশত কিছু আরব ও মুসলিম দেশের নীরবতা ও মিত্রতার ছায়ায় এসব অপরাধ অব্যাহত রয়েছে। এ অবস্থায় ইয়েমেনি জাতি নিজেদের দায়িত্ববোধ থেকে ফিলিস্তিনের সমর্থনে সংগ্রামে নেমেছে।
ইয়েমেনের রাষ্ট্রদূত বলেন, ইয়েমেনের সংসদ সেদেশে যাতে কোনো ইসরাইলি ও মার্কিন পণ্য প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য একটি আইন পাস করেছে। সবাই এই আইন মেনে চলতে বাধ্য। একইসঙ্গে ইয়েমেনের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ পর্যন্ত যেসব মার্কিন কোম্পানিকে সেদেশে বাণিজ্যিক তৎপরতা চালানোর অনুমতি দিয়েছিল সেগুলোও বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। এরপর থেকে ইয়েমেনের জনগণ গণমাধ্যমসহ সর্বত্র ফিলিস্তিনিদের পক্ষে ক্যাম্পেইন চালু করে। এই ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি জুলুম, ফিলিস্তিনিদের আত্মত্যাগ, অর্জন ও সাফল্যগুলো সারা দেশে তুলে ধরা হয়। এসবের পাশাপাশি ইয়েমেনের হুথি আনসারুল্লাহ আন্দোলনের প্রধান আব্দুল মালিক বদরউদ্দিন আল হুথির পরামর্শে প্রেসিডেন্ট মাহদি আল মাশাত ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ জারি করেন। এরপর থেকে সামরিক অভিযান চলছে। ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইল ও তার মিত্রদের বর্বরতা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত ইয়েমেনিদের সংগ্রাম চলবে বলে জানান রাষ্ট্রদূত আদদেইলামি।#
পার্সটুডে/এসএ/২০
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন