স্ন্যাপব্যাক ও ইরান–রাশিয়া সম্পর্কের গভীরতার কয়েকটি দিক
https://parstoday.ir/bn/news/world-i153398-স্ন্যাপব্যাক_ও_ইরান_রাশিয়া_সম্পর্কের_গভীরতার_কয়েকটি_দিক
পার্সটুডে: অ্যাটলান্টিক কাউন্সিল-এর ওয়েবসাইটে গত ২৪ অক্টোবর একটি প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে স্ন্যাপব্যাক (Snapback) সক্রিয় হওয়ার পর ইরান ও রাশিয়ার সম্পর্ক নিয়ে বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
(last modified 2025-11-28T10:09:50+00:00 )
অক্টোবর ২৬, ২০২৫ ১০:১২ Asia/Dhaka
  • ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন
    ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন

পার্সটুডে: অ্যাটলান্টিক কাউন্সিল-এর ওয়েবসাইটে গত ২৪ অক্টোবর একটি প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে স্ন্যাপব্যাক (Snapback) সক্রিয় হওয়ার পর ইরান ও রাশিয়ার সম্পর্ক নিয়ে বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

পার্সটুডে জানিয়েছে, অ্যাটলান্টিক কাউন্সিলের প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ইউরোপের তিন দেশ (ফ্রান্স, জার্মানি ও যুক্তরাজ্য) ইরানের বিরুদ্ধে যে স্ন্যাপব্যাক নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করেছে, তা ইরান ও পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে পারমাণবিক উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলেছে।

এই পদক্ষেপের ফলে ইরান আরও বেশি রাশিয়ার দিকে ঝুঁকে পড়েছে— যে দেশটি এই নিষেধাজ্ঞাগুলোকে অবৈধ বলে মনে করে।
এই ঘটনা ইরানের 'পূর্বমুখী কৌশলগত ঘনিষ্ঠতা'কে আরও ত্বরান্বিত করেছে। এই প্রবণতাটি ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক চুক্তি (জেসিপিওএ) থেকে বেরিয়ে আসার পর থেকেই শুরু হয়।

স্ন্যাপব্যাক সক্রিয় করার বিরোধী রাশিয়া মনে করে, ইউরোপীয় দেশগুলো নিজেরাই জেসিপিওএ লঙ্ঘন করেছে। তাই এই প্রক্রিয়া সক্রিয় করার কোনও আইনগত অধিকার তাদের নেই। যদিও রাশিয়া ও চীনের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও এই নিষেধাজ্ঞাগুলো ঠেকানো যায়নি, তবে মস্কো এখনও এই নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন বিঘ্নিত করার ক্ষমতা রাখে।

নিষেধাজ্ঞার জবাবে, ইরান ও রাশিয়া তাদের অর্থনৈতিক ও সামরিক সহযোগিতা আরও বিস্তৃত করেছে। দুই দেশের মধ্যে নয় মাস আগে স্বাক্ষরিত 'বিস্তৃত কৌশলগত অংশীদারিত্ব চুক্তি' বর্তমানে বাস্তবায়নের পথে। ইরান একইসঙ্গে ব্রিকস+ এবং সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা (এসসিও)–এর দিকেও ঝুঁকছে। এছাড়া, রাশিয়ার সঙ্গে গোয়েন্দা ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়াতেও ইরান আগ্রহী।

'জর্জিও কাফিয়েরো'–এর  লেখা প্রবন্ধের সারাংশ চারটি মূল বিষয়ের সারসংক্ষেপ তুলে ধরা হল-

১. স্ন্যাপব্যাক সক্রিয়করণ ও ইরানরাশিয়ার প্রতিক্রিয়া

  • ইউরোপের তিন দেশ ইরানের পারমাণবিক চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ২০১৫-পূর্ববর্তী নিষেধাজ্ঞাগুলো পুনরায় চালু করেছে।
  • রাশিয়া এই পদক্ষেপকে অবৈধ ঘোষণা করে তা প্রতিহত করার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু সফল হয়নি।
  • ইরান এই নিষেধাজ্ঞাগুলোকে পশ্চিমের প্রতি আরও একবার অবিশ্বাসের প্রমাণ হিসেবে দেখছে।

২. স্ন্যাপব্যাক বিষয়ে রাশিয়ার অবস্থান

  • রাশিয়া এই নিষেধাজ্ঞার কঠোর বিরোধিতা করছে।
  • রাশিয়ার যুক্তি: ইউরোপীয় দেশগুলো নিজেরাই চুক্তি ভঙ্গ করেছে, তাই তারা স্ন্যাপব্যাক সক্রিয় করার যোগ্য নয়।
  • রাশিয়া তার ভেটো ক্ষমতা ব্যবহার করে নিষেধাজ্ঞার কিছু দিক বাস্তবায়নে বিলম্ব ঘটাতে পারে।

৩. নিষেধাজ্ঞার ছায়ায় ইরানরাশিয়া সম্পর্কের গভীরতা

  • দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত কৌশলগত অংশীদারিত্ব চুক্তি বাস্তবায়নের পথে।
  • পারমাণবিক শক্তি, বাণিজ্য, প্রযুক্তি ও সামরিক খাতে সহযোগিতা বাড়ছে।
  • ইরান প্রতিরক্ষা ও গোয়েন্দা ক্ষেত্রে রাশিয়ার সঙ্গে আরও নিবিড়ভাবে কাজ করতে চায়।
  • রাশিয়া জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ইরানের স্বার্থ রক্ষায় সক্রিয় ভূমিকা নিচ্ছে।

৪. ইরানের পূর্বমুখী কৌশল ও পশ্চিমাবিরোধী জোটে অংশগ্রহণ

  • ইরান ব্রিকস+ এবং সাংহাই সহযোগিতা সংস্থায় যোগদানকে কৌশলগত পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে।
  • চীন, রাশিয়া, পাকিস্তান এবং মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে সহযোগিতাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে।
  • 'পূর্বমুখী নীতি' এখন ইরানের পররাষ্ট্রনীতির অন্যতম প্রধান ভিত্তি হয়ে উঠেছে।

পার্সটুডে/এমএআর/২৬

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।