ইসরাইল কেন মৌলিকভাবে ইরানের সমকক্ষ নয়? ৪টি সংক্ষিপ্ত কারণ
(last modified Tue, 29 Oct 2024 13:38:42 GMT )
অক্টোবর ২৯, ২০২৪ ১৯:৩৮ Asia/Dhaka
  • ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অব স্টাফ মেজর জেনারেল মোহাম্মাদ বাকেরি (ডানে) এবং ইসরাইলি সেনাপ্রধান হার্জি হালেভি
    ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অব স্টাফ মেজর জেনারেল মোহাম্মাদ বাকেরি (ডানে) এবং ইসরাইলি সেনাপ্রধান হার্জি হালেভি

পার্সটুডে- ইরান বিগত বছরগুলোতে ফিলিস্তিন, লেবানন, সিরিয়া, ইয়েমেন ও ইরাকের সঙ্গে নিজের সম্পর্ককে এতটা ঘনিষ্ঠ করেছে যে, এসব দেশ একপ্রকার ইরানের মিত্র হয়ে উঠেছে। ইহুদিবাদী ইসরাইল ও তার মিত্রদের বিরুদ্ধে ইরান তার এই ঘনিষ্ঠ দেশগুলোকে নিয়ে একসঙ্গে রুখে দাঁড়ানোর সক্ষমতা অর্জন করেছে।

গত শনিবার ভোরে ইরানের বিরুদ্ধে ইসরাইল যে আগ্রাসী হামলা চালিয়েছে তার ফলে পশ্চিম এশিয়া অঞ্চলে ইরানের কৌশলগত শক্তি প্রদর্শনের আরেকটি সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় শুধু যে ইরানের সামরিক শক্তি প্রদর্শিত হয়েছে তা নয় বরং এ ঘটনা ছিল একটি সভ্যতাগত-সাংস্কৃতিক প্রতিরোধ যাতে ইরানের ইসলামি ইতিহাস ও বিশ্বাসের মধ্যে গভীর সম্পর্কের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। এ ঘটনায় ভৌগোলিক সীমারেখার বাইরেও ইরানের গভীর প্রভাবের বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। পার্সটুডে ম্যাগাজিনের আজকের এ নিবন্ধে আমরা সংক্ষেপে এ সংক্রান্ত চারটি দিক তুলে ধরব।

ইরানের ঐতিহাসিক-সভ্যতাগত পরিচয়: এ ধরনের সংঘাতে ইরানের শক্তিমত্তা শুধু সামরিক শক্তির ওপর নির্ভরশীল নয়; বরং একটি ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক পরিচয়ের সঙ্গে এর ওতপ্রোত সম্পর্ক রয়েছে যা ইসলামি বিশ্বাস বিশেষ করে আহলে বায়েত-কেন্দ্রীক বিশ্বাসের সঙ্গে গভীরভাবে সম্পর্কিত। ইরানে আলে বুয়ে শাসনামলেরও আগে থেকে বিশেষ করে সাফাভি শাসনামল থেকে এখন পর্যন্ত এই পরিচিতি ইরানের অভ্যন্তরীণ ও পররাষ্ট্রনীতিতে মূল ভূমিকা পালন করেছে; বলা যায়, ইরানের পররাষ্ট্রনীতিকে অঞ্চলের অন্যান্য দেশ থেকে স্বাতন্ত্র বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত করেছে।

ইরানের প্রতিরোধ ক্ষমতা: ইরানের অভ্যন্তরে হামলা চালাতে গিয়ে ইসরাইলকে নানা ধরনের সীমাবদ্ধতার মধ্যে পড়তে হয়েছে। ফলে তেল আবিবের পক্ষে ইরানের মূল সামরিক ও কৌশলগত কেন্দ্রগুলোর তেমন কোনো ক্ষতি করা সম্ভব হয়নি। এ ঘটনায় ইরানের উচ্চমাত্রার প্রতিরোধ সক্ষমতার প্রমাণ পাওয়া যায়। একথা বোঝা যায় যে, ইরানের সামরিক ঘাঁটিগুলো বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে বিস্তৃত এবং এগুলোর কৌশলগত সক্ষমতা উচ্চমানের। এই সক্ষমতার কারণে ইসরাইল ইরানের বিরুদ্ধে যেকোনো সামরিক পদক্ষেপ নেয়ার কাজে সতর্কতা অবলম্বন করতে বাধ্য করেছে।

মিত্র দেশগুলোকে সঙ্গে নিয়ে আঞ্চলিক শক্তি গঠন: ইরান বিগত বছরগুলোতে ফিলিস্তিন, লেবানন, সিরিয়া, ইয়েমেন ও ইরাকের সঙ্গে নিজের সম্পর্ককে এতটা ঘনিষ্ঠ করেছে যে, এসব দেশ একপ্রকার ইরানের মিত্র হয়ে উঠেছে। ইহুদিবাদী ইসরাইল ও তার মিত্রদের বিরুদ্ধে ইরান তার এই ঘনিষ্ঠ দেশগুলোকে নিয়ে একসঙ্গে রুখে দাঁড়ানোর সক্ষমতা অর্জন করেছে। শত্রুদের বিরুদ্ধে যেকোনো পদক্ষেপ নেয়ার ক্ষেত্রে এই জোট ইরানকে যথেষ্ট শক্তি ও প্রভাব প্রদান করে। এ কারণে বিগত কয়েক দশক আগের তুলনায় ইরানসহ আঞ্চলিক দেশগুলোর শক্তি বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে।

ইসরাইলের ভুয়া পরিচয়: পক্ষান্তরে একটি ভুয়া রাষ্ট্র হিসেবে ইসরাইল ইরানের মতো একটি সামরিক শক্তি ও তার মিত্রদের মোকাবিলায় কয়েকটি ফ্রন্টে লড়াই করতে বাধ্য হচ্ছে। সেইসঙ্গে ইরানের পক্ষ থেকে ইসরাইলের জন্য যে কৌশলগত হুমকি সৃষ্টি করা হয়েছে সে ব্যাপারে তাকে সতর্কতার সঙ্গে পা ফেলতে হচ্ছে। এর ফলে অভিযান পরিচালনার ক্ষেত্রে ইসরাইলকে ব্যাপক সীমাবদ্ধতার মধ্যে কাজ করতে হচ্ছে এবং তার অভ্যন্তরীণ দুর্বলতাও প্রকাশ পেয়ে যাচ্ছে। এক কথায় ইহুদিবাদী ইসরাইল এখন সংকটের ঘূর্ণিপাকে হাবুডুবু খাচ্ছে। ফিলিস্তিন জবরদখর করে অবৈধ এই রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত কখনোই যে সংকট ইসরাইলের পিছু ছাড়েনি।#

পার্সটুডে/এমএমআই/এমএআর/২৯

 

ট্যাগ