কাতারে হামাসের উপস্থিতি নিয়ে মিথ্যাচারে ইসরাইলের সঙ্গে মার্কিন গণমাধ্যমগুলোর সহযোগিতা
পার্সটুডে- মার্কিন ও ইহুদিবাদী ইসরাইলি কর্মকর্তারা গাজা যুদ্ধে দখলদার বাহিনীর ব্যর্থতাকে ধামাচাপা দিতে প্রচারণা যুদ্ধ এবং হামাসের বিরুদ্ধে মিথ্যা খবর প্রচারের দিকে মনোনিবেশ করেছে।
হামাসের শীর্ষস্থানীয় নেতা মাহমুদ মারদাওয়ি বলেছেন, হামাস ও কাতারকে নিয়ে যেসব সংবাদ প্রচার ও রিপোর্টিং করা হয়েছে তা মিথ্যা ও প্রচারণা যুদ্ধ ছাড়া আর কিছু নয়। পার্সটুডের রিপোর্ট অনুযায়ী, মারদাওয়ি আরো বলেন: প্রতিরোধ ফ্রন্টের যোদ্ধা ও সমর্থকদের মনোবল ভেঙে দিতে এ ধরনের খবর প্রচার করা হচ্ছে।
এর আগে লেবাননের আল-মায়াদিন টেলিভিশন জানায়, কাতার সরকার হামাস নেতাদেরকে দেশটিতে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে বলে যে সংবাদ প্রচারিত হয়েছে তা সত্য নয়। ইসরাইলি টিভি চ্যানেল ‘কান’ শুক্রবার, ৮ নভেম্বর, এক রিপোর্টে দাবি করে যে, মার্কিন চাপের মুখে কাতার সরকার দেশটিতে অবস্থানরত হামাস নেতাদের জানিয়ে দিয়েছে, তাদেরকে আর দোহায় থাকতে দেয়া হবে না।
তবে কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজিদ বিন মোহাম্মাদ আল-আনসারি এ ধরনের অসত্য তথ্য প্রচারের প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন: দোহায় হামাসের দপ্তরের উপস্থিতি সম্পর্কে যে খবর প্রচার করা হয়েছে তা সুনির্দিষ্ট তথ্যনির্ভর নয়। বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করার স্বার্থেই হামাসকে দোহায় দপ্তর খোলার অনুমতি দেয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মার্কিন কর্মকর্তা আশ-শারক পত্রিকাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, গাজায় আটক ইহুদিবাদী পণবন্দিদের মুক্ত করার ব্যাপারে আমেরিকার সর্বশেষ প্রস্তাব হামাস নাকচ করে দেয়ার পর ওয়াশিংটন দোহাকে জানায়, হামাস নেতাদেরকে আর কাতারে থাকতে দেয়া যাবে না।
একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে আল-আরাবি টিভি চ্যানেল জানায়: কাতার এখন পর্যন্ত গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার আলোচনায় মধ্যস্থতা করার ভূমিকা থেকে সরে আসার কথা কাউকে জানায়নি। এসব সূত্র বলেছে, কাতার আর মধ্যস্থতা করতে রাজি নয় বলে যে গুজব রটানো হয়েছে তার উৎপাদনকারী খোদ ইহুদিবাদী ইসরাইল। ইসরাইলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পশ্চিমা সূত্রগুলো এর আগে দাবি করেছিল, গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার ৪০০ দিনের মাথায় কাতার এই যুদ্ধ বন্ধের আলোচনায় মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা থেকে সরে যাওয়ার কথা ঘোষণা করেছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর আল-আকসা তুফান অভিযান শুরুর পর থেকে আমেরিকা ও ইহুদিবাদী ইসরাইলি গণমাধ্যমগুলো উদ্দেশ্যপ্রণোদিত খবর প্রচার করে গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর ভয়াবহ গণহত্যা ও অপরাধযজ্ঞ ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেছে।
কিন্তু পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, ইহুদিবাদী ইসরাইলকে সহযোগিতা করার লক্ষ্যে পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলো যে প্রতারণা ও মিথ্যাচারের কৌশল বেছে নিয়েছে তাতে কোনো লাভ হবে না। কারণ, বর্তমানে পশ্চিম এশিয়া অঞ্চলের পরিস্থিতি প্রতিরোধ ফ্রন্টের যোদ্ধারা নিয়ন্ত্রণ করছেন। কাজেই ইহুদিবাদী ইসরাইল যে চরম সংকটের মধ্যে রয়েছে মিথ্যাচার করে তা থেকে তাকে বের করে আনা যাবে না।#
পার্সটুডে/এমএমআই/জিএআর/ ১১