ইরাকি বিশ্লেষকের অভিমত
'পশ্চিমা আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর কারণে বিশ্বব্যাপী ইয়েমেনের জনপ্রিয়তা বাড়ছে'
ইরাকি বিশ্লেষক এবং রাজনৈতিক কর্মী নাজাহ মুহাম্মদ আলী বলেছেন, "ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়ানোর ইয়েমেনের সিদ্ধান্ত একটি স্বাধীন সিদ্ধান্ত যা ইয়েমেনি জনগণের ইচ্ছাকে প্রতিফলিত করে।"
মেহের নিউজ এজেন্সির বরাত দিয়ে পার্সটুডে জানিয়েছে, ইরাকি বিশ্লেষক এবং রাজনৈতিক কর্মী নাজাহ মুহাম্মদ আলী রোববার "ইয়েমেন-আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আশ্চর্যজনক প্রতিরোধ" শীর্ষক একটি শিরোনামে লিখেছেন, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে যখন ইয়েমেনের আবাসিক এলাকা এবং অবকাঠামোতে মার্কিন বিমান হামলার বৃদ্ধি,গাজায় ষোল মাস ধরে গণহত্যা চলছে তখন ইহুদিবাদী শাসক গোষ্ঠীর প্রতি ওয়াশিংটন এবং তার মিত্রদের অব্যাহত সমর্থনের মধ্যে সানা হামলা আবারও প্রমাণ করেছে যে এসব হামলা ইয়েমেনি জনগণের উপর আগ্রাসন চালানোর জন্য একটি নতুন লিঙ্ক মাত্র। ইয়েমেনিরা এমন এক জনগোষ্ঠী যারা যুদ্ধের বছরগুলোতে বিরল প্রতিরোধকামীতা দেখিয়েছে এবং তাদের ন্যায্য আদর্শ রক্ষায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
ইহুদিবাদী শাসনের প্রতি মার্কিন সমর্থন
নাজাহ মুহাম্মদ আলী আরও বলেন, আমেরিকা এবং ন্যাটো ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইহুদিবাদী শাসনব্যবস্থার অপরাধযজ্ঞ সমর্থন করে আসছে এবং এই অপরাধ বিরুদ্ধে দাঁড়ানো যেকোনো কণ্ঠস্বরকে রোধ করার চেষ্টা করছে। জাতীয় স্যালভাসন সরকার এবং জাতীয় সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে ইয়েমেন গাজার জনগণের গণহত্যার সময় দৃঢ়ভাবে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং আরব ও ইসলামি বিষয়গুলোর প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি নিশ্চিত করেছে। এই অবস্থান বিদেশী চাপের কাছে আত্মসমর্পণ করতে অস্বীকারকারী এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে তাদের সার্বভৌমত্ব এবং স্বাধীনতা রক্ষার উপর জোর দেওয়া জনগণের ইচ্ছাকে প্রতিফলিত করে।
ইয়েমেনি সেনাবাহিনীর প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সক্ষমতা জোরদার করা
ইরাকি বিশ্লেষক এবং রাজনৈতিক কর্মী বলেন, ইয়েমেনি জাতীয় সেনাবাহিনী তার প্রতিরক্ষা এবং নিরাপত্তা সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে শক্তিশালী করতে সক্ষম হয়েছে। এই উন্নয়নের ফলে ব্যক্তি এবং স্পর্ষকাতা কেন্দ্রগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করার হার হ্রাস পেয়েছে। যার ফলে ইঙ্গো-মার্কিন জোট বিকল্প হিসাবে জনসাধারণের স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করতে বাধ্য হয়েছে।
গাজার শান্তি লোহিত সাগরের শান্তির চাবিকাঠি
"নাজাহ মুহাম্মদ আলী" বারবার বলতে থাকেন যে সানার বার্তা স্পষ্ট; গাজায় শান্তি হলো লোহিত সাগরে শান্তির চাবিকাঠি। অন্যথায় ফিলিস্তিনের প্রতি ইয়েমেনের সমর্থন অব্যাহত থাকবে। যা আবারও প্রমাণ করবে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইহুদিবাদী সরকার এই অঞ্চল এবং লোহিত সাগরে নিরাপত্তাহীনতার মূল কারণ।
ইয়েমেন ইরানের মিত্র প্রক্সি নয়
ইরাকি বিশেষজ্ঞ আরও বলেন: "ইয়েমেনকে আরব ও ইসলামী দেশগুলোর সাথে সংযুক্ত করে এমন গভীর ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক বন্ধন স্পষ্টভাবে দেখায় যে ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়ানোর ইয়েমেনের সিদ্ধান্ত একটি স্বাধীন সিদ্ধান্ত যা ইয়েমেনি জনগণের ইচ্ছাকে প্রতিফলিত করে।"
নাজাহ মোহাম্মদ আলী আরও বলেন: ইয়েমেনে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের কোন প্রক্সি বাহিনী নেই, বরং তারা সাধারণ চ্যালেঞ্জের বিরুদ্ধে একসাথে দাঁড়ানো মিত্র। ইয়েমেনের সিদ্ধান্ত জনগণের অংশগ্রহণে তার নেতৃত্বের দ্বারা গৃহীত একটি সার্বভৌম সিদ্ধান্ত এবং এটিই এর স্বাধীনতাকে নিশ্চিত করে।
এই ইরাকি বিশ্লেষক এবং রাজনৈতিক কর্মী এই বলে উপসংহারে পৌঁছেছেন যে ইয়েমেন আজ ইহুদিবাদী শাসনব্যবস্থা এবং আমেরিকার বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জের মুখে প্রতিরোধ এবং অবিচলতার প্রতীক হিসেবে দাঁড়িয়েছে। এভাবে নিপীড়কের কাছে আত্মসমর্পণ না করা জাতির ইতিহাসে এটি একটি নতুন সম্মান তৈরি করেছে।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদক নরিম আল-মুসাওয়েহের মতে, গাজায় ইসরাইলের যুদ্ধ মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে ইসরাইল এবং তার প্রধান মিত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে জনরোষের জন্ম দিয়েছে এবং ইয়েমেনি সামরিক বাহিনীকে বিশ্বব্যাপী আলোচনায় এনেছে। যদিও অনেক আরব সরকার সাহায্য এবং কূটনীতির মাধ্যমে যুদ্ধে প্রবেশ করেছে। ইয়েমেনি সেনাবাহিনীই এক ভয়াবহ সামরিক আক্রমণ শুরু করেছিল, যা এই অঞ্চল জুড়ে তাদের জনপ্রিয়তাকে বৃদ্ধি করেছে।#
পার্সটুডে/এমবিএ/২৪
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।