অনর্থক ১০০ কোটি ডলার ব্যয়; যুদ্ধে ওয়াশিংটন হেরেছে: মার্কিন মিডিয়ার স্বীকারোক্তি
-
অনর্থক ১০০ কোটি ডলার ব্যয়; ইয়েমেনের সাথে যুদ্ধে ওয়াশিংটন হেরেছে: মার্কিন মিডিয়ার স্বীকারোক্তি
পার্সটুডে - মার্কিন গণমাধ্যম স্বীকার করেছে যে ইয়েমেনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে।
সিএনএন সম্প্রতি এক বিশ্লেষণে স্বীকার করেছে যে বিমান হামলার মাধ্যমে ইয়েমেনি প্রতিরোধ বাহিনীকে চ্যালেঞ্জ করার ক্ষেত্রে আমেরিকার সামরিক লক্ষ্য ব্যর্থ হয়েছে। ইয়েমেনে আক্রমণে মার্কিন ব্যর্থতার কথা এমন এক সময় বলা হচ্ছে যখন বুধবার ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারি দেশটির আকাশে আরেকটি আমেরিকান এমকিউ-৯ ড্রোন ভূপাতিত করার ঘোষণা দিয়েছেন। পার্সটুডে জানিয়েছে, এটি ইয়েমেনে ১৮তম মার্কিন ড্রোন ভূপাতিত করার ঘটনা।
সিএনএন, সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের বোমা হামলার সময় ইয়েমেনিদের উচ্চ প্রতিরোধ সক্ষমতার কথা উল্লেখ করে স্বীকার করেছে যে তিন সপ্তাহেরও কম সময়ে ইয়েমেনি বাহিনীর বিরুদ্ধে মার্কিন সামরিক অভিযানের মোট ব্যয় প্রায় ১০০ কোটি ডলার বলে অনুমান করা হচ্ছে। তবে এই আক্রমণগুলো এখনও পর্যন্ত ইয়েমেনিদের সামরিক শক্তি ধ্বংস করার ক্ষেত্রে খুব কম প্রভাব ফেলেছে।
কিছু আঞ্চলিক কূটনৈতিক সূত্রের পাশাপাশি বিশ্লেষকদের উদ্ধৃতি দিয়ে সিএনএন আরও দাবি করেছে যে, কেবল স্থল আক্রমণই ইয়েমেনের আনসারুল্লাহ আন্দোলনকে পরাজয় ও ধ্বংসের দিকে নিয়ে যেতে পারে।
এই প্রসঙ্গে, ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের ইয়েমেন বিষয়ক সিনিয়র বিশ্লেষক আহমাদ নাগি বলেন: "মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভুল হলো তারা মনে করে বিমান হামলা ইয়েমেনের আনসারুল্লাহকে পিছু হটতে বাধ্য করতে পারে; যদিও সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমলে এই সামরিক কৌশল ব্যর্থ হয়েছিল, আর এখন নতুন মার্কিন প্রশাসনের অধীনে এই সমর কৌশল সফল হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।"
এদিকে, দৈনিক নিউইয়র্ক টাইমস এক বিশ্লেষণে লিখেছে যে পেন্টাগনের কর্মকর্তারা কংগ্রেসকে জানিয়েছেন যে আনসারুল্লাহর ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন ধ্বংস করার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র খুব বেশি সফল হয়নি।
নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে: "ইয়েমেনে আনসারুল্লাহর বিরুদ্ধে মার্কিন সামরিক অভিযান আরও জটিল পর্যায়ে প্রবেশ করায়, মার্কিন কংগ্রেসের ওয়াকিবহাল সূত্রগুলি বলছে যে পেন্টাগনের কর্মকর্তারা বিদেশী প্রতিপক্ষ, কংগ্রেসের প্রতিনিধি এবং তাদের উপদেষ্টাদের সাথে গোপন বৈঠকে স্বীকার করেছেন যে আনসারুল্লাহর ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন ও লঞ্চারের বিশাল অস্ত্রাগার ধ্বংস করতে মার্কিন সেনাবাহিনী খুব সীমিত সাফল্য পেয়েছে।"
অন্যদিকে, হিব্রু ভাষার দৈনিক "ডেমার্কার" পত্রিকা এক বিশ্লেষণে স্বীকার করেছে যে, ইসরাইলের গভীরে ধারাবাহিকভাবে ইয়েমেনি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ইসরাইলের উপর সরাসরি এবং গুরুতর প্রভাব ফেলছে। এই বিশ্লেষণে বলা হয়েছে যে ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনীর আক্রমণগুলো কেবল তাদের মনস্তাত্ত্বিক এবং প্রতীকী দিকের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় বরং ইসরাইল এবং তার সেনাবাহিনীর জন্য সরাসরি নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক ক্ষতিও বয়ে এনেছে।
এদিকে, এই পরিস্থিতিতে, লোহিত সাগরে ইসরাইলি এবং তার মিত্রদের জাহাজের উপর সানা সরকার যে নৌ অবরোধ আরোপ করেছে, তাকে খাটো করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। কেননা এই অবরোধ ইসরাইলি বন্দরগুলোকে বিশাল ক্ষতির সম্মুখীন করেছে।#
পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/৯
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।