ফিলিস্তিন স্বশাসন কর্তৃপক্ষ কেন পশ্চিম তীরে রাজনৈতিক গ্রেপ্তার বাড়িয়ে দিয়েছে?
https://parstoday.ir/bn/news/west_asia-i154544-ফিলিস্তিন_স্বশাসন_কর্তৃপক্ষ_কেন_পশ্চিম_তীরে_রাজনৈতিক_গ্রেপ্তার_বাড়িয়ে_দিয়েছে
পার্সটুডে- ফিলিস্তিন স্বশাসন কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে পশ্চিম তীরে রাজনৈতিক গ্রেপ্তার বৃদ্ধি পাওয়ায় ফিলিস্তিনিদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে এবং পরিণতি নিয়েও উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
(last modified 2025-11-30T13:57:36+00:00 )
নভেম্বর ২৯, ২০২৫ ১৯:৫৩ Asia/Dhaka
  • ফিলিস্তিন স্বশাসন কর্তৃপক্ষ কেন পশ্চিম তীরে রাজনৈতিক গ্রেপ্তার বাড়িয়ে দিয়েছে?
    ফিলিস্তিন স্বশাসন কর্তৃপক্ষ কেন পশ্চিম তীরে রাজনৈতিক গ্রেপ্তার বাড়িয়ে দিয়েছে?

পার্সটুডে- ফিলিস্তিন স্বশাসন কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে পশ্চিম তীরে রাজনৈতিক গ্রেপ্তার বৃদ্ধি পাওয়ায় ফিলিস্তিনিদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে এবং পরিণতি নিয়েও উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

সাম্প্রতিক দিনগুলোতে স্বশাসন কর্তৃপক্ষ পশ্চিম তীরে বিশেষকরে হেবরনসহ বিভিন্ন এলাকায় সক্রিয় অধিকারকর্মী, শিক্ষার্থী এমনকি সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার অভিযান জোরদার করেছে। এ ঘটনা এমন সময় ঘটছে যখন ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর পক্ষ থেকেও ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে হামলা ও নির্যাতন অব্যাহত রয়েছে।

এর পেছনে প্রথম কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে, ফিলিস্তিনি স্বশাসন কর্তৃপক্ষের এ পদক্ষেপ ইসরায়েলের সঙ্গে তাদের নিরাপত্তা সহযোগিতার সঙ্গে সম্পর্কিত। বহু বছর ধরে চলমান এই নিরাপত্তা সমন্বয় সাম্প্রতিক সময়ে আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের সঙ্গে সমন্বয় করেই স্বশাসন কর্তৃপক্ষ অধিকারকর্মী, শিক্ষার্থী এবং মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দিদের গ্রেপ্তার করছে। এই নীতি পশ্চিম তীরে প্রতিরোধ আন্দোলনকে নিয়ন্ত্রণ করার বৃহত্তর নিরাপত্তা কৌশলের অংশ।

দ্বিতীয় কারণ হলো, স্বশাসন কর্তৃপক্ষ এসব গ্রেপ্তারের মাধ্যমে প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোর পাশাপাশি অন্যান্য ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক ধারার ওপর নিজেদের রাজনৈতিক প্রভাব প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে। কিছু ফিলিস্তিনি বিশ্লেষক মনে করেন, হেবরনের মতো শহরে শিক্ষার্থী ও অধিকারকর্মীদের লক্ষ্যে পরিণত করা মূলত হামাস ও ইসলামি জিহাদের ক্রমবর্ধমান প্রভাব ঠেকানোর প্রচেষ্টা মাত্র।

তৃতীয় কারণটি বাহ্যিক চাপের সঙ্গে সম্পর্কিত। কিছু বিশ্লেষক এই পদক্ষেপকে যুক্তরাষ্ট্র ও দখলদার ইসরায়েলের চাপের ফল বলে মনে করেন—নতুন কোনো ইন্তিফাদা বা প্রতিরোধ আন্দোলনের বিস্তার রোধের লক্ষ্যে এটা করা হচ্ছে। এই কারণেই হামাসসহ বিভিন্ন প্রতিরোধ সংগঠন ও রাজনৈতিক কর্মীরা স্বশাসন কর্তৃপক্ষের এসব পদক্ষেপকে দখলদারদের সঙ্গে যোগসাজশ এবং জাতীয় সংগ্রামের বিরুদ্ধে পেছন থেকে ছুরি মারা বলে আখ্যা দিয়েছেন।

পশ্চিম তীরে রাজনৈতিক গ্রেপ্তার বাড়ানোর এই পদক্ষেপ ফিলিস্তিনিদের মাঝে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। হামাস একে “ঝুঁকিপূর্ণ আগ্রাসন” এবং “জাতীয় ঐক্যের ওপর আঘাত” বলে উল্লেখ করে তাৎক্ষণিকভাবে তা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে। হেবরনের কর্মীরাও এসব গ্রেপ্তারকে “পেছন থেকে ছুরি মারা” এবং জনগণের রাজনৈতিক চেতনা ও প্রতিরোধ আন্দোলন দমন করার চেষ্টা হিসেবে বর্ণনা করেছেন। প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলো এসব কর্মকাণ্ডকে ইসরায়েলের সঙ্গে পূর্ণ সমন্বয়ের প্রমাণ এবং ফিলিস্তিনের জাতীয় লক্ষ্যের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

ফিলিস্তিনি স্বশাসন কর্তৃপক্ষের এই সমন্বিত পদক্ষেপ ফিলিস্তিনিদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পরিণতি বয়ে আনতে পারে।

এটি ফিলিস্তিনিদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ বিভাজন আরও বাড়াবে। একই সঙ্গে এই রাজনৈতিক গ্রেপ্তার কোনোভাবেই ফিলিস্তিনের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা জোরদার করবে না, বরং স্বশাসন কর্তৃপক্ষের রাজনৈতিক বৈধতাকে সংকটে ফেলবে এবং ফিলিস্তিনি সমাজে আরও ভাঙন সৃষ্টি করবে। আর এটাই ফিলিস্তিন ইস্যুতে ইসরায়েলের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য।

বাস্তবতা হলো, দখলদার ইসরায়েল কখনোই ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ঐক্য বা জাতীয় সমন্বয় মেনে নিতে পারে না, কারণ তা তাদের স্বার্থের বিরুদ্ধে যায়।
এ ছাড়া স্বশাসন কর্তৃপক্ষের এসব পদক্ষেপের আরেকটি বড় পরিণতি হলো—ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে বিশেষকরে পশ্চিম তীরে আক্রমণের মাত্রা আরও বাড়াবে।#

পার্সটুডে/এসএ/২৯

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।