'গণবিক্ষোভের মুখে ম্লান হল সৌদি রাজার সফর'
(last modified Sun, 27 Nov 2016 13:10:46 GMT )
নভেম্বর ২৭, ২০১৬ ১৯:১০ Asia/Dhaka
  • 'গণবিক্ষোভের মুখে ম্লান হল সৌদি রাজার সফর'

সৌদি আরবের রাজা সালমান বিন আব্দুল আজিজ দেশটির পূর্বাঞ্চলে কয়েকদিনের সফরে গিয়ে জনগণের ব্যাপক প্রতিবাদ বিক্ষোভের সম্মুখীন হয়েছেন। দায়িত্ব নেয়ার পর এই প্রথম তিনি ওই এলাকা সফরে গেছেন। তার সফরের প্রতিবাদে স্থানীয় জনগণ মানব বন্ধন পালন করেছে।

সৌদি রাজা কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে এবং আগাম প্রচার চালিয়ে দেশটির পূর্বাঞ্চল সফরে গেলেও বিভিন্ন এলাকায় তিনি ব্যাপক প্রতিবাদ বিক্ষোভের সম্মুখীন হয়েছেন। সৌদি আরবের পূর্বাঞ্চল অর্থনৈতিক দিক দিয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সবচেয়ে বড় তেল ক্ষেত্রগুলো ওই এলাকাতেই অবস্থিত। প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর হলেও ওই অঞ্চলের জনগণ চরম বৈষম্য ও জুলুম-নির্যাতনের শিকার। তারা রাজনৈতিক ও সামাজিক নানা সেবা ও সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত।

শিয়া মুসলিম অধ্যুষিত ওই অঞ্চলের জনগণের জীবনমান উন্নয়নে সৌদি শাসকরা কখনই গুরুত্ব দেয়নি এবং স্থানীয় জনগণের ন্যায়বিচারের দাবিও দীর্ঘদিন ধরে উপেক্ষিত হয়ে আছে। এ ছাড়া, সৌদি নিরাপত্তা বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে ওই অঞ্চলের জনগণকে দমন করে আসছে। শিয়া মুসলিম অধ্যুষিত পূর্বাঞ্চলীয় জনগণের অভিযোগ প্রচুর প্রাকৃতিক সম্পদের মজুদ থাকা সত্বেও তাদের অর্থনৈতিক উন্নতি থামিয়ে রাখা হয়েছে। এ অবস্থায় স্থানীয় জনগণের বিক্ষোভের মুখে সৌদি রাজা সালমান বিন আব্দুল আজিজের দেশটির পূর্বাঞ্চল সফর অনেকটা ম্লান হয়ে গেছে।

 

অসন্তোষ কবলিত সৌদি আরবের পূর্বাঞ্চলে সরকার বিরোধীদের ধর পাকড়, বিচার, জেল-জুলুমের হুমকি সত্বেও জনগণ সালমান বিন আব্দুল আজিজের সফরের বিরুদ্ধে অবস্থান কর্মসূচি, মানব বন্ধন ও বিক্ষোভের ঘোষণা দিয়েছে। তারা সৌদি রাজার বিরুদ্ধে নানা শ্লোগানযুক্ত পোস্টার প্রচার কোরে আর্থ-রাজনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে সেদেশের দুরবস্থার জন্য সালমান বিন আব্দুল আজিজকে দায়ী করেছেন। একই সঙ্গে তারা ইয়েমেনে শিশু হত্যার জন্যও সৌদি রাজার তীব্র সমালোচনা করেছেন। প্রতিবাদী জনতা শিয়া মুসলিম নেতা শহিদ শেখ নিমর বাকের আল নিমরের ছবি দেয়ালের গায়ে সেঁটে দেয়। প্রায় এক বছর আগে সৌদি শাসকরা শিয়া মুসলমানদের ওই প্রখ্যাত নেতাকে শহীদ করে। শেখ নিমর বাকের আল নিমর সবসময়ই বঞ্চিত জনগণের অধিকারের দাবিতে সোচ্চার ছিলেন।

সৌদি সরকার সেদেশে রাজনৈতিক ও চিন্তার স্বাধীনতার দাবিতে আন্দোলনকারী জনতাকে নির্মমভাবে দমন করে আসছে। কিন্তু এত চাপ ও জুলুম-নির্যাতন সত্বেও প্রতিদিনই সৌদি আরবে রাজনৈতিক স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচারের দাবিতে আন্দোলন জোরদার হচ্ছে। সৌদি আরবের বর্তমান পরিস্থিতি থেকে বোঝা যায়, ভয়ভীতি ও নির্যাতন সত্বেও জনতার আন্দোলনকে সরকার দমন করতে পারেনি।

অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও সৌদি সরকার ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। আলে সৌদের দীর্ঘ শাসনের ফলে সেদেশটি কেবল অর্থনৈতিক দিক দিয়ে দুর্বল ও পুরোপুরি পরোনির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। সম্প্রতি ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তেলের দাম কমিয়ে দেয়ায় খোদ সৌদি আরবের অর্থনৈতিক পরিস্থিতিরই আরো অবনতি ঘটেছে।

সৌদি আরব তার অর্থের একটি বড় অংশ সন্ত্রাসীদের পেছনে ব্যয় করে। তেল বিক্রির অর্থ দিয়ে সিরিয়া, লেবানন, ইরাকসহ বহু দেশে সন্ত্রাসী লেলিয়ে দিয়ে এবং ইয়েমেনে গত ২০ মাস ধরে গণহত্যা চালিয়ে বিশ্বকে নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দিয়েছে। #             

পার্সটুডে/মোঃ রেজওয়ান হোসেন/২৭