ইয়েমেন যুদ্ধে ব্যর্থতা ঢাকতে মরিয়া হয়ে উঠেছে সৌদি আরব
সৌদি আগ্রাসনের মোকাবেলায় ইয়েমেনের জনগণের অব্যাহত প্রতিরোধ পরিস্থিতিকে ক্রমেই পাল্টে দিচ্ছে। সৌদি আরব ইয়েমেনের সাধারণ মানুষ হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞের মাধ্যমে এখন ওই যুদ্ধে নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকার চেষ্টা করছে।
কিন্তু ইয়েমেনের সরকার ও জনগণ তীব্র প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়া থেকে বোঝা যায়, সৌদি আরবের ব্যর্থতার পাল্লা ক্রমেই ভারী হচ্ছে। গত কয়েকদিনে ইয়েমেনের যোদ্ধারা মাআ'রিব প্রদেশে সৌদি ভাড়াটে সেনাদের অবস্থান লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়ে। এতে করে সৌদি এক কমান্ডারসহ ৬০ সেনা হতাহত হয়। এ ছাড়া, ইয়েমেনের ক্ষেপণাস্ত্র ইউনিট সম্প্রতি সৌদি আরবের দক্ষিণাঞ্চলীয় জিযানে একটি মধ্যমপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েছে।
ইয়েমেনের বিভিন্ন পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের সক্ষমতা সৌদি আরবের ঘুম কেড়ে নিয়েছে। ইয়েমেনের সেনা ও গণবাহিনী বহুবার বলেছে, আগ্রাসী শক্তির বিরুদ্ধে তাদেরও আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে। তাই আত্মরক্ষার জন্য সৌদি আরবের অভ্যন্তরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর অধিকারও তাদের রয়েছ। সৌদি বর্বর আগ্রাসনে এ পর্যন্ত ইয়েমেনের ১২ হাজার মানুষ নিহত এবং ৩৫ হাজার আহত হয়েছ। এ ছাড়া, দেশটির লাখ লাখ মানুষ শণার্থীতে পরিণত হয়েছে এবং গুরুত্বপূর্ণ অবাকাঠামোগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে সৌদি আরব। এসবই মারাত্মক যুদ্ধাপরাধ।
সৌদি আরব ২০১৫ সালের ২৬ মার্চ থেকে ইয়েমেনের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ওপর হামলা শুরু করে। তাদের ধারণা ছিল খুব সহজেই ইয়েমেনের গণপ্রতিরোধ বাহিনী ‘আনসারুল্লাহ'কে পরাজিত করা যাবে এবং পলাতক প্রেসিডেন্ট আব্দ রাব্বু মানসুর হাদিকে ফের ক্ষমতায় বসানো যাবে। কিন্তু তাদের সে ধারণা ভুল প্রমাণিত হয় এবং প্রায় আড়াই বছর ধরে ইয়েমেনের জনগণ প্রতিরোধ চালিয়ে যাচ্ছে। যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হওয়ার প্রধান কারণ হচ্ছে, সৌদি কর্মকর্তারা আনসারুল্লাহ যোদ্ধাদের প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং জনগণের মধ্যে তাদের ব্যাপক জনপ্রিয়তার বিষয়টিকে হাল্কাভাবে দেখেছিল। সৌদি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আনসারুল্লাহ যোদ্ধারা প্রতিরোধের প্রতীকে পরিণত হয়েছে। তারা এখন সৌদি আরবের অনেক ভেতরে সৌদি সেনা ও তাদের ভাড়াটে সেনাদের অবস্থানে হামলা চালানোর ক্ষমতা রাখে।
ইয়েমেনের রাজধানী সানায় সম্প্রতি দেশটির হাজার হাজার মানুষ সমবেত হয়ে দেশটির বিরুদ্ধে সৌদি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে দাবি জানিয়ে মার্কিন বিরোধী শ্লোগান দেয়।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইয়েমেন যুদ্ধের বর্তমান পরিস্থিতি লক্ষ্য করলে বোঝা যায়, সৌদি আগ্রাসনের ফলে ওই দেশটি আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হচ্ছে। ইয়েমেনকে কোণঠাসা করতে গিয়ে সৌদি আরব নিজেই কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। এ কারণে সৌদি আরব ইয়েমেনে আগ্রাসন চালাতে বদ্ধ পরিকর। তবে এর ফলে শেষ পর্যন্ত সৌদি আরবই যে ক্ষতির মুখে পড়বে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।#
পার্সটুডে/মো. রেজওয়ান হোসেন/২০