ইয়েমেন ইস্যুতে পাশ্চাত্য ও জাতিসংঘের ভণ্ডামি; ইরানের সর্বোচ্চ নেতার যৌক্তিক প্রতিবাদ
https://parstoday.ir/bn/news/west_asia-i88570-ইয়েমেন_ইস্যুতে_পাশ্চাত্য_ও_জাতিসংঘের_ভণ্ডামি_ইরানের_সর্বোচ্চ_নেতার_যৌক্তিক_প্রতিবাদ
বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে বেশি মাত্রায় মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে যেসব জাতির তাদের অন্যতম হল দরিদ্র ইয়েমেনি জাতি।
(last modified 2025-09-29T12:37:45+00:00 )
মার্চ ১২, ২০২১ ২০:৩৭ Asia/Dhaka

বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে বেশি মাত্রায় মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে যেসব জাতির তাদের অন্যতম হল দরিদ্র ইয়েমেনি জাতি।

ইয়েমেনের ওপর গত ছয় বছর ধরে আগ্রাসন ও প্রায় সর্বাত্মক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে দিয়েছে সৌদি সরকার ও তার জোটভুক্ত কয়েকটি দেশ। অবশ্য সৌদি জোটের এই বর্বরতার প্রধান হোতা ও মূল সহযোগী হিসেবে সক্রিয় রয়েছে মার্কিন সরকার। ব্রিটেনসহ পশ্চিমা বিশ্ব এবং ইহুদিবাদী ইসরাইলও ইয়েমেনে যুদ্ধ-অপরাধ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অন্যতম বড় সহযোগী। 

সৌদি জোটের পৈশাচিক ও নির্বিচার বোমা হামলায় হতাহত হয়েছে হাজার হাজার নারী ও শিশুসহ প্রায় অর্ধলক্ষ ইয়েমেনি। ধ্বংস হয়ে গেছে ইয়েমেনের বেশিরভাগ অবকাঠামো এবং দুর্ভিক্ষ, ক্ষুধা, অপুষ্টি ও দারিদ্রের শিকার হয়ে সেখানে মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছে লাখ লাখ শিশুসহ কয়েক মিলিয়ন মানুষ। 

অবশ্য পশ্চিম এশিয়ার সবচেয়ে দরিদ্র এই দেশটির জনগণ অবশ্য সৌদি-জোটের আগ্রাসনের মোকাবেলায় বেশ সফল প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে এবং আগ্রাসীদের ক্রমেই  একের পর এক বড় ধরনের বিপর্যয় ও পরাজয়ের দিকে তাড়িয়ে নিচ্ছে। এ অবস্থায় সম্প্রতি জাতিসংঘ ইয়েমেনের কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ মারিব প্রদেশে জনপ্রিয় হুথি-আনসারুল্লাহ আন্দোলনের নেতৃত্বাধীন প্রতিরোধকামী বাহিনীর অগ্রাভিযানের নিন্দা জানিয়ে বক্তব্য রেখেছে। এ প্রদেশটির বেশিরভাগ গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল এখন প্রতিরোধকামী ইয়েমেনিদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। 

বিস্ময়ের ব্যাপার হল জাতিসংঘ ইয়েমেনি শিশুদের ওপর সৌদি হত্যাযজ্ঞের ব্যাপারে রিয়াদ সরকারকে শিশু-ঘাতকদের তালিকাভুক্ত করেও পরে সৌদি চাপের মুখে ও চাঁদা বন্ধ হয়ে যাওয়ার ভয়ে  ওই তালিকা থেকে সৌদি সরকারের নাম বাদ দিতে বাধ্য হয়। অন্যদিকে পশ্চিমা সরকারগুলো মানবাধিকারের বুলি কপচাতে অভ্যস্ত হলেও সৌদি বর্বরতার মৌখিক নিন্দা জানাতেও ব্যর্থ হয়েছে। পশ্চিমা সরকারগুলোর পক্ষ থেকে সৌদি জোটকে অস্ত্রসহ সব ধরনের সহায়তা দেয়া হচ্ছে ইয়েমেনিদের বিপক্ষে। সৌদি আগ্রাসন ও অবরোধে পরোক্ষভাবে সহায়তা করছে জাতিসংঘও। এভাবে ইয়েমেনে ঘটেছে একবিংশ শতকের সবচেয়ে বড় মানবীয় বিপর্যয়। 

এ অবস্থায় পশ্চিমা বিশ্ব ও জাতিসংঘের কথিত মানবাধিকার নীতির ভণ্ডামি আর কপটতার স্বরূপ তুলে ধরে সবচেয়ে জোরালো ও স্পষ্ট ভাষায় যিনি প্রতিবাদ আর নিন্দা জানিয়ে আসছেন তিনি হলেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ি। গতকালও মহানবীর (সা) নবুওতি মিশন শুরুর বার্ষিকী উপলক্ষে দেয়া এক ভাষণে তিনি বলেছেন, বাস্তবতাকে ১৮০ ডিগ্রি উল্টো করে তুলে ধরতে সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলোর কোনো জুড়ি নেই। কোনো ধরনের চক্ষুলজ্জা ও ভয় ছাড়াই তারা ডাহা মিথ্যা বলে বেড়ায়।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আরও বলেছেন: আমেরিকার পূর্ণ সমর্থন নিয়ে সৌদি আরব গত ছয় বছর ধরে ইয়েমেনের নিরস্ত্র জনগণের ওপর ভয়াবহ হামলা চালিয়ে গেলেও পাশ্চাত্যে এ সম্পর্কে টু শব্দটি পর্যন্ত করেনি। তারা ইয়েমেনে অবরোধ আরোপ করে ইয়েমেনে খাদ্য এবং ওষুধ পৌঁছতে দিচ্ছে না। যতক্ষণ ইয়েমেনিরা মার খাচ্ছিল ততদিন আমেরিকাসহ জাতিসংঘ পর্যন্ত নীরবতা অবলম্বন করেছে। কিন্তু যখনই ইয়েমেনিরা সৌদি আরবে পাল্টা হামলা শুরু করেছে তখনই পাশ্চাত্যের চিৎকার চেঁচামেচি শুরু হয়েছে। বাস্তবতা সম্পর্কে এর চেয়ে নির্লজ্জ মিথ্যাচার আর হতে পারে না।

এটা স্পষ্ট জাতিসংঘকে এই বিশ্বসংস্থার নীতি অনুযায়ী মজলুম জাতিগুলোর সহযোগী ও রক্ষক হতে হবে এবং ন্যায়নীতির আলোকে বক্তব্য রাখতে হবে। অথচ জাতিসংঘ নিরপেক্ষতা বজায় রাখতেও ব্যর্থ হচ্ছে। #

পার্সটুডে/এমএএইচ/১২

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।