বিপুল সংখ্যক তুর্কি সেনার মৃত্যু এরদোগানের ভবিষ্যতকে অন্ধকার করবে
সিরিয়া নিয়ে রুশ-তুর্কি বিরোধ বাড়ছেই! এরদোগানের ভবিষ্যত কী হুমকির মুখে?
সিরিয়া নিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রভাবশালী দেশগুলো, বিশেষ করে রাশিয়ার সঙ্গে তুর্কি সরকারের বিরোধ ক্রমেই বাড়ছে।
এই প্রেক্ষাপটেই সম্প্রতি আঙ্কারায় রুশ রাষ্ট্রদূতকে তলব করার খবর দিয়েছে তুর্কি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সিরিয়ার ইদলিব প্রদেশের পরিস্থিতি শোচনীয় হওয়ায় সেখানে উত্তেজনা কমানোর লক্ষ্যে এই পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানিয়েছে তুর্কি পররাষ্ট্র বিভাগ।
তুরস্ক ও রাশিয়ার মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়ার প্রেক্ষাপটে এটা স্পষ্ট মস্কো ও আঙ্কারার মধ্যে সামরিক সহযোগিতা জোরদার এবং তুরস্কের কাছে গুরুত্বপূর্ণ রুশ অস্ত্র বিক্রি সত্ত্বেও এ দুই শক্তি পরস্পরের কৌশলগত মিত্র হতে পারছে না। এ অবস্থায় তুরস্কে এরদোগান সরকারের-বিরোধী দলগুলো বলছে, অতীতের তুর্কি সরকারগুলোর সঙ্গে প্রতিবেশী দেশগুলোর তেমন একটা বিরোধ না থাকলেও এই সরকারের সময়ে তা শতভাগ বেড়েছে।
সিরিয়ায় সামরিক হস্তক্ষেপ করতে গিয়ে তুর্কি সেনারা কিছুই অর্জন করতে পারেনি, বরং সিরিয় জনগণের কাছে দিনকে দিন অজনপ্রিয় হয়ে উঠছে এরদোগান সরকার। আর এই ব্যর্থতা ঢাকতেই তুর্কি সরকার সিরিয়ায় নিজেকে বিজয়ী হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করছে নানা ধরনের তৎপরতার মাধ্যমে। রাশিয়া অবশ্য এ বিষয়টাকে তেমন একটা গুরুত্ব দিচ্ছে না।
তুরস্কের ঘরোয়া রাজনীতিতে জনপ্রিয়তা ধরে রাখতেই এইসব প্রচেষ্টা চালাতে হচ্ছে এরদোগান সরকারকে।
এরদোগান বিরোধী তুর্কি দলগুলো মনে করে সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে তুর্কি সেনা উপস্থিতি দেশটির জন্য নানা ধরনের ক্ষতি বয়ে আনছে ও আনবে। বিপুল সংখ্যক তুর্কি সেনার মৃত্যু এরদোগানের রাজনৈতিক ভবিষ্যতকে বিপদাপন্ন করতে পারে। সম্প্রতি ইদলিবে তুর্কি সীমান্তের কাছে তুর্কি-মদদপুষ্ট সন্ত্রাসীদের ওপর রুশ ও সিরিয় জঙ্গি বিমানের হামলায় বহু সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। এসব সন্ত্রাসী গাড়ি বহর নিয়ে সিরিয়ার তেল পাচার করছিল। সিরিয়ার তেল চুরিতে তুরস্ক সহযোগিতা করে আসছে বলে বিভিন্ন সময়ে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে সিরিয়ার আসাদ সরকার।
সিরিয়ায় রাজনৈতিক ও সামরিক দিক থেকে তুরস্কের সুবিধাজনক অবস্থান না থাকায় এরদোগানের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ বিপদাপন্ন হওয়ার আশঙ্কাই বেশি বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। অথচ এরদোগান সিরিয়ার ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্বের কারণে সেখানে তুর্কি সেনা মোতায়েন করে এ অঞ্চলে, বিশেষ করে পূর্ব ভূমধ্যসাগরে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব বিস্তারের ও এ অঞ্চলের প্রধান রাজনৈতিক শক্তি হওয়ার আশা করছেন।
এরদোগানের এইসব লক্ষ্য বাস্তবায়ন এখন পর্যন্ত হালে পানি না পাওয়ায় তুর্কি জনগণের দৃষ্টিকে অন্যদিকে সরাতেই রুশ রাষ্ট্রদূতকে তলবের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু তার এ লক্ষ্যও সফল হবেনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ গণমাধ্যমের ব্যাপক সক্রিয়তার কারণে। #
পার্সটুডে/এমএএইচ/২৪
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন