অর্থ ছাড় না দিলে পরিণতি ভোগের ব্যাপারে আমেরিকাকে তালেবানের হুঁশিয়ারি
(last modified Sun, 13 Mar 2022 13:54:13 GMT )
মার্চ ১৩, ২০২২ ১৯:৫৪ Asia/Dhaka

আফগানিস্তানে তালেবান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার দেশের সম্পদ আটকে রাখার পরিণতির ব্যাপারে মার্কিন সরকারকে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মোত্তাকি আফগানিস্তান বিষয়ক মার্কিন প্রতিনিধি টম ওয়েস্টের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় বলেছেন, আফগানিস্তানের সম্পদ আটকে রাখা বা জব্দ করা হলে তা দুদেশের সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

এ বৈঠকে তালেবান সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতিমন্ত্রী মোল্লা খেইরুল্লাহ খেইর খ' উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে দুপক্ষই আফগানিস্তানের সাড়ে ৩০০ কোটি ডলার দেশটির কেন্দ্রিয় ব্যাংকে স্থানান্তর করার বিষয়ে  সমঝোতায় পৌঁছান। অন্যদিকে, গত শুক্রবার তালেবান ও কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এবং  আফগানিস্তান  বিষয়ক  মার্কিন বিশেষ প্রতিনিধির মধ্যেও তুরস্কের আন্তালিয়ায় ত্রিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং বিভিন্ন বিষয়ে তাদের মধ্যে কথাবার্তা হয়েছে। তালেবান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এমন সময় তাদের সম্পদ ফেরত না দিলে যুক্তরাষ্ট্রকে পরিণতি ভোগ করতে হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন যখন এ অর্থ দেশ পরিচালনায় তাদের খুবই প্রয়োজন।  

গত গ্রীষ্মে তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করার পর মার্কিন সরকার আফগানিস্তানের শতশত কোটি ডলার জব্দ করেছে। আমেরিকার এ পদক্ষেপের কারণে তালেবান সরকার দেশ পরিচালনায় বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। তালেবান কর্তৃপক্ষ তাদের আটকে পড়া অর্থ উদ্ধারের জন্য যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের কয়েকটি দেশের সঙ্গে গত কয়েক মাস ধরে ব্যাপক আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে কিন্তু তারপরও মার্কিন নীতিতে কোনো পরিবর্তন আসেনি।

সর্বশেষ সাড়ে ৩০০ কোটি ডলার আফগানিস্তানের কেন্দ্রিয় ব্যাংকে স্থানান্তর করার বিষয়ে তালেবান ও আমেরিকার মধ্যে যে সমঝোতা হয়েছে তাতে বোঝা যায় তালেবানের ওপর প্রচণ্ড অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টির যে চেষ্টা আমেরিকা করছিল তা থেকে তারা কিছুটা সরে এসেছে। যদি এ  অর্থ ছাড় পায় তাহলে তালেবান সরকারের অবস্থান কিছুটা ভালো হবে। এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র কেন স্বল্প সময়ের জন্য হলেও জব্দকৃত অর্থের প্রায় অর্ধে ছাড় দিল সেটাই এখন প্রশ্ন। ধারণা করা হচ্ছে অর্থ ছাড়ের বিনিময়ে আমেরিকা তালেবানের কাছ থেকে এমন কিছু সুবিধা পেতে চায় যার প্রভাব এ অঞ্চলের অন্য দেশগুলোর ওপরে পড়তে পারে।

আফগান বিষয়ক মার্কিন প্রতিনিধি কিছুদিন আগে বলেছিলেন, তালেবানের সাথে তাদের কূটনৈতিক যোগাযোগ সবার জন্যই কল্যাণকর। এরপর এই অর্থ ছাড়ের ঘটনা ঘটল। যদিও গত ছয় মাসে তালেবান নারী অধিকার বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন ইস্যুতে তাদের কট্টর অবস্থান থেকে সরে আসেনি কিন্তু তারপরও তালেবানের ব্যাপারে মার্কিন নীতিতে পরিবর্তনের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। পর্যবেক্ষকরা আমেরিকার এ নীতিকে এ অঞ্চলের অন্য দেশগুলোর জন্য বিপদজনক হিসেবে দেখছেন কারণ মার্কিন সরকার তাদের বিভিন্ন এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য তালেবানকে ব্যবহার করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।#               

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/১৩

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ