কমিউনিস্ট পার্টির বার্ষিক সভায়
আমেরিকার চীন বিরোধী নীতির কঠোর সমালোচনা করলেন শি জিন পিং
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে আক্রমণাত্মক ভাষায় বলেছেন: ওয়াশিংটন চীনকে 'নিয়ন্ত্রণ, অবরোধ এবং দমন' করার কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছে। চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির বার্ষিক সভায় দেওয়া বক্তব্যে তিনি ওই মন্তব্য করেন।
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁর তৃতীয় মেয়াদ শুরু করতে যাচ্ছেন। তারই প্রাক্কালে তিনি আরও বলেন: বেইজিং পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে নজিরবিহীন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। তাঁর ভাষায় গত পাঁচ বছরে চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পথ রোধ করতে পশ্চিমারা বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে নতুন নতুন প্রতিবন্ধকতা ও সমস্যা তৈরি করেছে।
আমেরিকার চীন বিরোধী নীতি ডোনাল্ড ট্রাম্প এর প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন মাত্রায় তীব্র হয়েছে। অবশ্য বারাক ওবামার সময় থেকে চীনকে নিয়ন্ত্রণ এবং ঘেরাও করার ওপর আমেরিকা নজর দিতে শুরু করে। সেইসঙ্গে পূর্ব এশিয়া অঞ্চলে বিশেষ করে সামুদ্রিক অঞ্চলে আমেরিকা তাদের বাহিনী প্রেরণ করে চীনকে অবরোধ করার সূচনা করে। এরপর ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে কার্যত এ দেশের সাথে বাণিজ্যিক যুদ্ধই শুরু করে দেয়।
রাজনীতি বিশেষজ্ঞ মোহসেন রুয়ি সেফাত এ প্রসঙ্গে বলেন: চীন সম্পর্কে আমেরিকায় দুটি দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। একটি দৃষ্টিভঙ্গি হলো চীনকে তারা বিবেচনা করে যদি এই দেশটিকে নিয়ন্ত্রণে রাখা না হয়, তাহলে বিশ্বব্যাপী মার্কিন আধিপত্য মারাত্মকভাবে বিপন্ন হবে। সে কারণে চীনের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে আমেরিকা। দ্বিতীয় দৃষ্টিকোণটি প্রতিযোগী হিসাবে চীনের সাথে কৌশলগত অংশীদারিত্বের উপর গুরুত্ব দেয়। তবে প্রথম দৃষ্টিকোণটিই বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে আমেরিকার বাস্তব নীতি।
তাই, চীনের প্রেসিডেন্ট কমিউনিস্ট পার্টির কংগ্রেস-প্রতিনিধিদের সমাবেশে জোর দিয়ে বলেন চীনের যথার্থ লড়াই করার সাহস থাকতে হবে। কারণ চীন অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে মৌলিক এবং জটিল অনেক পরিবর্তনের সম্মুখিন। এর মানে চীনের দৃষ্টিকোণ থেকে আমেরিকা বেইজিংয়ের রেড-লাইন অতিক্রম করছে বিশেষ করে তাইওয়ানের ব্যাপারে। সম্প্রতি চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও এ বিষয়ে আমেরিকার বিরুদ্ধে হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছে।
আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশেষজ্ঞ বাহরাম জাহিদ এ প্রসঙ্গে বলেছেন: চীনের ওপর চাপ প্রয়োগের মার্কিন টার্গেট হলো রাশিয়ার মতো এই দেশটিকেও অস্ত্র প্রতিযোগিতার ময়দানে প্রবেশ করতে বাধ্য করা। যাতে চীনের শক্তি দুর্বল করা যায়। তবে চীন আমেরিকার সঙ্গে খুব বুদ্ধিমত্তার সাথেই খেলছে।#
পার্সটুডে/এনএম/৯
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।