ব্রিকসে যোগ দেবে আলজেরিয়া: আরো চারটি গরুত্বপূর্ণ দেশের আগ্রহ প্রকাশ
আলজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট আব্দুল মাজেদ তাবুন আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিকস জোটে যোগ দেয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। একই সাথে তিনি রাশিয়া এবং এই জোটের সদস্য দেশগুলোর সাথে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদার করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
আলজেরিয়ার পার্লামেন্ট স্পিকার মুসা খারাফি এ ব্যাপারে বলেছেন, তার দেশ ব্রিক্স জোটে যোগ দিতে পারলে আফ্রিকার বহু দেশ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপক উপকৃত হবে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বিশেষ করে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং এই যুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা ইউক্রেনকে সমর্থন করার পর রাশিয়া ও চীনের নেতৃত্বাধীন ব্রিকস গ্রুপের সদস্যপদ পাওয়া গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে এবং বহু দেশ এই জোটে যোগ দেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
ব্রিকস হল বিশ্বের উদীয়মান অর্থনীতির সমন্বয়ে গঠিত একটি ইউনিয়নের নাম, যেটি ২০০৯ সালে সদস্য দেশগুলোর মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করেছিল। এর প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে বিশ্ববাণিজ্যে ডলারের একক আধিপত্যকে উপেক্ষা করে বিকল্প অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা। এই ইউনিয়ন গঠনের প্রায় ১৪ বছর পর, বিভিন্ন দেশ থেকে সদস্য হওয়ার অনুরোধ বেড়েছে। সৌদি আরব, মিশর, আর্জেন্টিনা ও তুরস্কও এই সংস্থায় যোগ দিতে চায়। সর্বশেষ আলজেরিয়াও আবেদন জানালো। ব্রিকস জোটে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিনিধি অনিল শুকলান জানিয়েছেন, অন্তত ১৯টি দেশ ব্রিকসে যোগ দেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং আন্তর্জাতিক অর্থনীতিতে একটি প্রভাবশালী সংস্থায় পরিণত হওয়ার মতো ক্ষমতা বা যোগ্যতা ব্রিকসের রয়েছে। তাদের মতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের কর্মকাণ্ড এবং মার্কিন নীতির কাছে নতি স্বীকার করার জন্য বিভিন্ন দেশকে চাপ দেওয়ার একটি হাতিয়ার হিসাবে ডলারের ব্যবহার, ওই দেশগুলোকে নতুন এই অর্থনৈতিক ব্লকের সদস্য হওয়ার জন্য উৎসাহিত করেছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ব্রিকস সদস্যভুক্ত দেশগুলোর উচিত বিশ্বব্যাপী আর্থিক ব্যবস্থার ত্রুটিগুলোর অবসান ঘটানো এবং বাণিজ্য বিনিময় ও বৈদেশিক রিজার্ভের জন্য ডলারের ওপর নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসা।
প্রকৃতপক্ষে, বিভিন্ন দেশ ব্রিকসে যোগদানের মাধ্যমে, কেবল বিশ্ব অর্থনীতিতে ডলারের আধিপত্য কমানোর চেষ্টা করছে তাই নয় একইসাথে নিজেদের মধ্যে বাণিজ্য বিনিময় এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদারের চেষ্টা করছে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপ-প্রধান মা ঝাওশু এ প্রসঙ্গে বলেছেন, তার দেশ ব্রিকস সদস্য দেশগুলো ছাড়াও উন্নয়নশীল দেশগুলোর সাথে অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদার করতে প্রস্তুত।
বাস্তবতা হচ্ছে, ব্রিকস বৃহত্তম এবং সবচেয়ে শক্তিশালী "অ-পশ্চিমী" আর্থ-রাজনৈতিক শক্তিতে পরিণত হওয়ার চেষ্টা করছে যা ডলার এবং পশ্চিমা মুদ্রার আধিপত্যকে প্রতিরোধ করতে সক্ষম। এ ক্ষেত্রে বিশ্বের অনেক দেশ ব্রিকসকে সহযোগিতা করতে চায়।
যাইহোক, ব্রিকসে যোগদানের জন্য আলজেরিয়ার অনুরোধ এবং এই ইউনিয়নে যোগদানের জন্য আরো অনেক দেশের অনুরোধ থেকে এ জোটের গুরুত্ব উপলব্ধি করা যায়।#
পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/২৪
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।