ভেনিজুয়েলার নির্বাচনে সংকট ও সহিংসতা সৃষ্টিতে মার্কিন ন্যাক্কারজনক ভূমিকা
পার্সটুডে-ভেনিজুয়েলায়ে আবারও ২০০২ সালের মতই একটি অভ্যুত্থান প্রচেষ্টা হয়েছে। কিন্তু এবার পরিকল্পিত গভীর ষড়যন্ত্র এবং সাইবার হামলা মোকাবেলা করতে হয়েছে।
ভেনিজুয়েলায় অনুষ্ঠিত সাম্প্রতিক নির্বাচনে জাতিসংঘ এবং আফ্রিকান ইউনিয়নের ৬৩৫ জন পর্যবেক্ষকের উপস্থিতিতে লক্ষ লক্ষ ভোটার ভোট দিয়েছেন। ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে পার্সটুডের রিপোর্ট অনুযায়ী,এই নির্বাচন অনেক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়। সম্ভবত সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে। কারণ চিরাচরিত স্বভাব অনুযায়ী আমেরিকা ভেনিজুয়েলার বিরোধীদেরকে উস্কানি দিয়ে এবং বিপুল অর্থ সরবরাহ করে সহিংস পরিস্থিতি সৃষ্টির মাধ্যমে সরকার ফেলে দেয়ার চেষ্টা করেছিল।
নির্বাচনের ফলাফল
গত২৮ জুলাই অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নিকোলাস মাদুরো ৫১.২ শতাংশ ভোট (৫১৫০০৯২ ভোট) নিয়ে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট হিসাবে পুনঃনির্বাচিত হন। তার ডানপন্থী প্রতিদ্বন্দ্বী এডমুন্ডো গঞ্জালেজ ৪৪.২% ভোট পেয়ে হেরে যান। অন্য বিরোধী প্রার্থীরা পেয়েছেন মাত্র ৪.৬% ভোট। ৮০% ভোট পর্যালোচনার করার পর নির্বাচনী কর্তৃপক্ষ এই ফলাফল ঘোষণা করেছে।
সাইবার হামলা
প্রাথমিক ফলাফল ঘোষণা সত্ত্বেও,ইলেকট্রনিক সিস্টেমে ব্যাপক সাইবার আক্রমণের কারণে বাকি ২০% ভোট এখনও প্রকাশিত হয়নি। এই অত্যাধুনিক সাইবার আক্রমণ একশোরও বেশিবার চালানো হয়েছিল যা উত্তর মেসিডোনিয়া এলাকায় ধরা পড়েছিল। হামলার সাথে জড়িত বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে চিহ্নিত করার পাশাপাশি,প্রেসিডেন্ট মাদুরো ইলন মাস্ককে এই হামলার সাথে জড়িত প্রধান সন্দেহভাজনদের একজন হিসাবে উল্লেখ করেছেন।
আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা
এই ঘটনাগুলো এমন সময় ঘটে যখন আমেরিকা এবং কানাডার মতো পশ্চিমা দেশগুলোতে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার জন্য এ রকম কোনো নিয়ম নেই এবং এমনকি কিছু ক্ষেত্রে ফলাফল ঘোষণায় অনেক বিলম্ব করা হয়।
অভ্যুত্থান এবং সহিংসতা
প্রাথমিক ফলাফল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে ভেনিজুয়েলায় ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। ভেনেজুয়েলার বিরোধী নেতা মারিয়া করিনা মাচাদোর নিয়ন্ত্রীত অপরাধী গোষ্ঠী এবং সন্ত্রাসীরা এই সহিংসতা চালিয়েছিল। বাইরের মদদপুষ্ট কলম্বিয়ার সংগঠিত অপরাধী চক্রের সহযোগিতায় প্রশিক্ষিত এই দলগুলো সরকারি ও বেসরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এই সহিংসতার ফলে ৭৭ জন পুলিশ ও সেনা আহত হয় এবং একজন অফিসারের মৃত্যু হয়।
সরকারের প্রতিক্রিয়া
ভেনিজুয়েলা সরকার এই সহিংসতায় জড়িত ১০৬২ জনের বেশী অপরাধীকে গ্রেপ্তার করে দেশে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করে। মাদকাসক্ত হওয়ার কারণে তারা দ্রুত দোষ স্বীকার করে এবং তাদের বিচার করা হয়। সরকারের এই পদক্ষেপ থেকে বোঝা যায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তারা সফল।#
পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/৪
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।