গাজায় যুদ্ধের অবসান চাইলে ইসরাইলে আরো অস্ত্র পাঠানোর ঘোষণা দিত না আমেরিকা
(last modified Sat, 17 Aug 2024 12:39:59 GMT )
আগস্ট ১৭, ২০২৪ ১৮:৩৯ Asia/Dhaka
  • গাজায় যুদ্ধের অবসান চাইলে ইসরাইলে আরো অস্ত্র পাঠানোর ঘোষণা দিত না আমেরিকা

পার্সটুডে: একটি নিবন্ধে আতওয়ান গাজা যুদ্ধবিরতি আলোচনার প্রতি আরব দেশগুলোর দৃষ্টিভঙ্গি বিশ্লেষণ করেছেন। মিশর ও কাতারের মতো আরব মধ্যস্থতাকারীদের ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করে বলেছেন, ইহুদিবাদী ইসরাইলের যুদ্ধবাজ প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ইচ্ছাকৃতভাবে গাজার আল-দারজ এলাকায় একটি গণহত্যা চালানোর পরও এসব আরব দেশ কোনো শর্ত ছাড়াই ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধ বিরতির আলোনায় অংশ নিয়েছে।

আরব বিশ্বের বিশিষ্ট লেখক ও বিশ্লেষক আব্দ আল-বারী আতওয়ান রে-ই-ইয়ুম পত্রিকায় একটি নিবন্ধে ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের নতুন নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারের সাহসী সিদ্ধান্তের বিশ্লেষণ করেছেন। সিনওয়ার  দোহায় অনুষ্ঠানরত যুদ্ধবিরতির আলোচনা বয়কট করেছেন। পার্সটুডের মতে এই নিবন্ধে তিনি বাইরের চাপের বিরুদ্ধে হামাসের মর্যাদা এবং শক্তি বলবৎ রাখার জন্য সিনওয়ারের সিদ্ধান্তকে  স্বাগত জানিয়েছেন।

তিনি হামাস আন্দোলনের এই সিদ্ধান্তকে গাজা উপত্যকারর বিরুদ্ধে যুদ্ধের শেষ ১০ মাসে আমেরিকার হুমকি এবং আরব মধ্যস্থতাকারীদের তীব্র চাপের ব্যর্থতার প্রতিনিধিত্ব হিসেবে বিবেচনা করেছেন।

তিনি আরও বলেন যে এই গাজা যুদ্ধ ভিত্তিক সর্বশেষ পরিস্থিতি সিআইএ নামে পরিচিত আমেরিকার  গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান উইলিয়াম বার্নসের তত্ত্বাবধানে সাজানো হয়েছিল এবং এর উদ্দেশ্য ছিল শহীদ ইসমাইল হানিয়াহকে হত্যা করে প্রতিরোধ অক্ষের সংগ্রাম স্থগিত করা। তেহরানে হামাস আন্দোলনের রাজনৈতিক কার্যালয়ের প্রধান ইসমাইল হানিয়া এবং বৈরুতের দক্ষিণে দাহিয়াতে হিজবুল্লাহর সিনিয়র কমান্ডার ফাওয়াদ শুকুরকে হত্যা করা সিদ্ধান্ত নেতানিয়াহু ইচ্ছাকৃতভাবে নিয়েছিল যাতে এই অঞ্চলে যুদ্ধ  অব্যাহত থাকে।  এমনকি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও যুদ্ধ থামানোর চেষ্টা করছেন এবং যুদ্ধ বন্ধে নেতানিয়াহু ও তার মন্ত্রিসভার ওপর চাপ দেওয়ারও সাহস পান না। উল্টো গাজায় যুদ্ধ অব্যাহত রাখার জন্য বাইডেন সরকার ইসরাইলকে আরো  বিশ বিলিয়ন ডলার মূল্যের উন্নত সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহের ঘোষণা দিয়েছে। এসব অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে এফ-৩৫ যুদ্ধ বিমান, উচ্চ ধ্বংসাত্মক শক্তি সম্পন্ন রক-ব্রেকার বোমা যা পাহাড়ের নীচে অবস্থিত দুর্গ ভেদ করার ক্ষমতা রাখে।

এই বিশ্লেষক হামাস আন্দোলনের রাজনৈতিক ব্যুরোর প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ার যিনি গাজার একটি টানেলের নীচে থেকে সামরিক ও রাজনৈতিক যুদ্ধ পরিচালনা করেন তার বিষয়ে বলেন যে সিনওয়ার প্রমাণ করেছেন যে তিনি আমেরিকা এবং দখলদার শাসক গোষ্ঠীকে ভয় পান না এবং তিনি আরব নেতাদের পরোয়া করেন না যাদের ভয় পেয়ে আত্মসমর্পণ করার ইতিহাস রয়েছে।

আতাওয়ান লিখেছেন,  নেতানিয়াহু মনে করেছেন যে গাজার আল-দরজ আশেপাশের স্কুলে গণহত্যা এবং হানিয়াহকে হত্যা করে তিনি প্রতিরোধ শক্তিকে ভয় দেখাতে পারবেন কিংবা তিনি তার শর্ত চাপিয়ে দিতে পারবেন যেখানে রয়েছে তার আগ্রাসী বাহিনীকে মিশরের সীমান্তে সালাদিন অক্ষে বা ফিলাডেলফিয়ায় ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে রাখা যাতে যখনই চাইবেন গাজা উপত্যকায় যেনো আবার হামলা করতে পারেন এবং একইসঙ্গে  গাজা উপত্যকার নেটসারিম অক্ষে একটি চেকপয়েন্ট স্থাপন করবেন যাতে  প্রতিরোধ যোদ্ধারা গাজার উত্তরে ফিরে যেতে না পারে। কিন্তু ফলাফল হয়েছে সম্পূর্ণ উল্টো। গাজায় গত ১০ মাস ধরে বর্বরোচিত এবং পাশবিক হামলা চালিয়েও হামাস নেতাদের কাবু করতে সক্ষম হয় নি ইসরাইল। নিজেদের শর্ত না মানা হলে দোহায় নতুন দফার আলোচনায় অংশ নিতে হামাস অস্বীকৃতি জানিয়েছে। অথচ অতীতে 'ক্যাম্প ডেভিড' এবং 'অসলো' এর সমঝোতা চুক্তি কয়েক দিন এবং কয়েক ঘন্টার মধ্যে পৌঁছেছিল।#

পার্সটুডে/এমবিএ/১৭

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের  ফেসবুক পেইজে  লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ