ইহুদিবাদী ইসরাইলের সাংস্কৃতিক সংস্থাগুলোকে বয়কট করলেন বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ১০০০ লেখক
(last modified Wed, 30 Oct 2024 13:20:53 GMT )
অক্টোবর ৩০, ২০২৪ ১৯:২০ Asia/Dhaka
  • ইহুদিবাদী ইসরাইলের সাংস্কৃতিক সংস্থাগুলোকে বয়কট করলেন বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ১০০০ লেখক

পার্সটুডে- বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় এক হাজার লেখক এক বিবৃতিতে ইহুদিবাদী ইসরাইলের সাংস্কৃতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা করবেন না বলে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছেন। তারা বলেছেন, ইহুদিবাদী সরকার ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর যে দমনপীড়ন ও গণহত্যা চালিয়ে আসছে তাতে সহযোগিতা করছে এসব সাংস্কৃতিক সংস্থা।

তাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসরাইলি এসব সংগঠনকে সহযোগিতা করলে প্রকারান্তরে তেল আবিবের বৈষম্যমূলক নীতি বাস্তবায়নে সহযোগিতা করা হবে যার ফলে ইসরাইল তার গণহত্যা, দখলদারিত্ব ও বর্ণবাদী আচরণকে ব্যাখ্যা করার সুযোগ পাবে। পার্সটুডের রিপোর্ট অনুসারে, ওই এক হাজার লেখকের মধ্যে উল্লেখযোগ্য তিনজন হলেন স্যালি রুনি (Sally Rooney), রাচেল কুশনার (Rachel Kushner), ও অরুন্ধতি রায় (Arundhati Roy)। তারা তাদের বিবৃতিতে এই মর্মে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছেন যে, ইসরাইলি প্রকাশনা সংস্থাগুলোকে কোনো বই প্রকাশ করতে দেবেন না, তাদের কোনো বই প্রকাশনা উৎসবে অংশগ্রহণ করবেন না এবং ইসরাইলের কোনো বইমেলায়ও তারা যাবেন না।

আয়ারল্যান্ডের প্রখ্যাত কবি ও চিত্রনাট্য লেখক স্যালি রুনির প্রথম উপন্যাস ‘টক টু ফ্রেন্ডস’ ২০১৭ সালে প্রকাশিত হয়। তবে তিনি পাঠকদের কাছে ব্যাপকভাবে পরিচিত হয়ে ওঠেন ২০১৮ সালে তার ‘অর্ডিনারি পিপল’ বইটি প্রকাশের পর।

স্যালি রুনি বহু বছর যাবত ফিলিস্তিনিদের অধিকার আদায়ের আন্দোলনকে সমর্থন করে আসছেন। একটি ইসরাইলি প্রকাশনা সংস্থা ২০২১ সালে তার তৃতীয় উপন্যাস ‘বিউটিফুল ওয়ার্ল্ড’ হিব্রু ভাষায় অনুবাদ করে প্রকাশ করতে চেয়েছিল। কিন্তু রুনি ওই সংস্থাকে সে অনুমতি দেননি।

স্যালি রুনি চলতি বছরের গোড়ার দিকে ‘পেন পিন্টার’ পুরস্কার জেতার পর ওই পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তৃতায় গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি গণহত্যার তীব্র নিন্দা জানান। তিনি নিজের পুরস্কারের সব অর্থ ফিলিস্তিনি শিশুদের সাহায্যার্থে গঠিত ফান্ডে দান করে দেন।

বিশ্বের প্রখ্যাত লেখকদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক আইনে ফিলিস্তিনিদের জন্য যে সুস্পষ্ট অধিকার লিপিবদ্ধ রয়েছে তাকে যেসব প্রতিষ্ঠান স্বীকৃতি দেয় না সেসব প্রতিষ্ঠান বয়কটের তালিকায় থাকবে।

বিবৃতিতে বলা হয়, অতীতে দক্ষিণ আফ্রিকার বহু বর্ণবাদবিরোধী লেখক একই রকম অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন; কারণ, বর্ণবাদী আচরণ ও লাখ লাখ মানুষকে শরণার্থীতে পরিণত করার বিষয়টি কোনো সুস্থ বিবেকসম্পন্ন মানুষ মেনে নিতে পারেন না।

এর আগে সম্প্রতি স্পেনের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিল্পী সমাজের অন্তত ৩০০ ব্যক্তিত্ব  দেশটির প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজের উদ্দেশে একটি খোলা চিঠি প্রকাশ করেন। ওই চিঠিতে তারা সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ইউরোপের এই দেশটি যতদিন ইহুদিবাদী ইসরাইলের সঙ্গে সামরিক সম্পর্ক ছিন্ন না করবে ততদিন মাদ্রিদ ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর তেল আবিবের গণহত্যার ‘সহযোগী’ হিসেবে চিহ্নিত থাকবে।

এর আগে গত বছরের অক্টোবরে হলিউডের একদল অভিনেতা মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উদ্দেশে লেখা এক খোলা চিঠিতে গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা করার আহ্বান জানিয়েছিলেন।

হলিউড অভিনেতারা তাদের চিঠিতে লিখেছিলেন: আমরা চাইনা ভবিষ্যত প্রজন্ম আমাদেরকে নীরবতা অবলম্বনের দায়ে অভিযুক্ত করুক এবং একথা বলুক যে, আমরা গণহত্যা বন্ধ করতে কোনো ভূমিকা পালন করিনি।

সার্বিকভাবে গাজা উপত্যকায় ইহুদিবাদী ইসরাইলের চলমান গণহত্যা ও অপরাধযজ্ঞের বিরুদ্ধে গত এক বছরে বিশ্বব্যাপী যে জনমত তৈরি হয়েছে ও যেসব আন্দোলন হয়েছে তাতে বিশ্বের প্রখ্যাত লেখক, কবি, শিল্পীসহ সাংস্কৃতিক অঙ্গনের লোকজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। # 

পার্সটুডে/এমএমআই/জিএআর/ ৩০

ট্যাগ