মিউনিখ সম্মেলন আমেরিকার মিত্রদের জার্মানির বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে
https://parstoday.ir/bn/news/world-i147150-মিউনিখ_সম্মেলন_আমেরিকার_মিত্রদের_জার্মানির_বিরুদ্ধে_অবস্থান_নেওয়ার_কেন্দ্রে_পরিণত_হয়েছে
পার্সটুডে - "পুতিন-ট্রাম্প সংলাপ" এবং " আমদানি করা পণ্যের উপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপ" এ দুটি প্রধান বিষয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রদের মধ্যে তীব্র বিতর্ক তৈরি করেছে।
(last modified 2025-07-29T12:16:04+00:00 )
ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৫ ১৪:৪০ Asia/Dhaka
  • মিউনিখ সম্মেলন আমেরিকার মিত্রদের জার্মানির বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে
    মিউনিখ সম্মেলন আমেরিকার মিত্রদের জার্মানির বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে

পার্সটুডে - "পুতিন-ট্রাম্প সংলাপ" এবং " আমদানি করা পণ্যের উপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপ" এ দুটি প্রধান বিষয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রদের মধ্যে তীব্র বিতর্ক তৈরি করেছে।

মিউনিখ সম্মেলনের অবকাশে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি এ কথা ফাস করে দিয়ে বলেছেন, সৌদি আরবে আসন্ন রুশ-মার্কিন শীর্ষ সম্মেলনে ইউক্রেনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি! পার্সটুডে জানিয়েছে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট পরোক্ষভাবে ইউরোপকে একটি স্বাধীন সেনাবাহিনী তৈরি করতে উৎসাহিত করেছেন এবং মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে বার্তা পাঠিয়েছেন যে কিয়েভের উপস্থিতি ছাড়া তিনি কোনও চুক্তি মেনে নেবেন না।

মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে জেলেনস্কি বলেন, "আমেরিকা কখনোই আমাদের ন্যাটোতে যোগ দানের বিষয়টি নিয়ে ভাবেনি বরং তারা এ নিয়ে কেবলমাত্র লোক দেখানো কথাবার্তা বলেছে। তারা আসলে আমাদের ন্যাটোতে থাকতে দিতে চায়নি।"

ইউরোপীয় দেশগুলো কী অবস্থান নিয়েছিল?

এরআগে, জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিটসোরিয়াস পরোক্ষভাবে ইউক্রেনের এ নীতিকে সমর্থন করে বলেছিলেন, "যদি ইউরোপীয় ইউনিয়নকে ইউক্রেন বিষয়ক শান্তি আলোচনা থেকে বাদ দেওয়া হয়, তাহলে ইউরোপ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্কের পরিবর্তন ঘটবে।"

ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান নিয়ে আলোচনা করার জন্য এই মাসের শেষের দিকে দুই দেশের মধ্যে একটি শীর্ষ সম্মেলনের পথ তৈরি করতে আগামী সপ্তাহে সৌদি আরবে মার্কিন ও রাশিয়ার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বৈঠক করবেন।

ন্যাটোর অবস্থান কী?

এই প্রসঙ্গে, ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুট মিউনিখে বার্ষিক নিরাপত্তা সম্মেলনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে অবস্থান নিয়ে বলেছেন, ইউক্রেন বিষয়ক শান্তি আলোচনায় ইউরোপীয়দের অংশগ্রহণ না থাকার বিষয়ে অভিযোগ উত্থাপন করা উচিত নয়, বরং এই বিষয়ে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা পেশ করা উচিত।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটেনের বিপরীত অবস্থান

মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেটও ন্যাটো সদস্য রাষ্ট্র এবং মিত্রদের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের বৈঠকে খোলাখুলিভাবে বলেছেন: "ইউরোপ এবং ইউক্রেন আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে অগ্রাধিকার পাচ্ছে না। তিনি ন্যাটোতে ইউক্রেনের সদস্যপদ লাভের সম্ভাবনা প্রত্যাখ্যান করেন এবং বলেন যে ইউক্রেনের পক্ষে ২০১৪ সালের সীমান্তে ফিরে যাওয়াও সম্ভব নয়।

তবে, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিপরীত অবস্থান গ্রহণ করেছেন। তিনি ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেদেশে সামরিক বাহিনী পাঠানোর জন্য ব্রিটেনের প্রস্তুতির ঘোষণা দিয়েছেন।

শুল্ক যুদ্ধের সূচনা

অন্যদিকে, মার্কিন সরকারের আমদানিকৃত পণ্যের উপর শুল্ক আরোপের ফলে দেশটির মিত্রদের কাছ থেকে প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনের অবকাশে চ্যান্সেলর ওলাফ শুলজ বলেছেন, "ইউরোপীয় অর্থনীতির ক্ষতি করে এমন যেকোনো পদক্ষেপের প্রতি প্রতিক্রিয়া জানাতে আমরা যথেষ্ট দৃঢ়।"

ট্রাম্প বলেছেন যে তিনি ১২ মার্চ থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানির উপর ২৫% শুল্ক আরোপ করবেন এবং এপ্রিল মাসে গাড়ির উপর নতুন শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করছেন। বৃহস্পতিবার তিনি তার প্রশাসনকে অসংখ্য বাণিজ্য অংশীদার দেশগুলোর উপর শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন, যেটাকে বাণিজ্য ক্ষেত্রে তার অনেক বড় পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।

অদ্ভুত এক সমাপ্তি

শুক্রবার মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্টের ভাষণের পর, মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনের সভাপতি ক্রিস্টোফ হিউসগেন তার সমাপনী বক্তৃতায় বলেন আমাদের নৈতিক মূল্যবোধ আর যুক্তরাষ্ট্রের মতো নাও থাকতে পারে।

শুক্রবার ইউরোপীয় নেতাদের উদ্দেশ্যে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন যে তাদের সবচেয়ে বড় নিরাপত্তা হুমকি রাশিয়া বা চীনের সামরিক আগ্রাসন নয়, বরং সমস্যা হচ্ছে সেসব দেশের বাকস্বাধীনতার দমন, যার মধ্যে রয়েছে অতি-ডানপন্থী দলগুলোকে সরকারে প্রবেশে বাধা দেওয়ার প্রচেষ্টা।#

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/১৮

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।