ইরান সম্পর্কে ট্রাম্পের চিন্তাভাবনায় সবচেয়ে বড় ভুল কী ছিল?
https://parstoday.ir/bn/news/world-i151292-ইরান_সম্পর্কে_ট্রাম্পের_চিন্তাভাবনায়_সবচেয়ে_বড়_ভুল_কী_ছিল
পার্সটুডে- “ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে সৃষ্ট বিতর্কের সাথে ইরাক, সিরিয়া ও লিবিয়ার ঘটনাবলীকে এক করে দেখা ছিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সবচেয়ে বড় ভুল। এই ভুল ধারণা মূলত ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে, যিনি তার রাজনৈতিক প্রভাব প্রতিপত্তি ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচির বিরোধিতার উপর ভিত্তি করে তৈরি করেছেন।”
(last modified 2025-08-21T10:39:09+00:00 )
আগস্ট ২০, ২০২৫ ১৮:৩৭ Asia/Dhaka
  • ইরান সম্পর্কে ট্রাম্পের চিন্তাভাবনায় সবচেয়ে বড় ভুল কী ছিল?
    ইরান সম্পর্কে ট্রাম্পের চিন্তাভাবনায় সবচেয়ে বড় ভুল কী ছিল?

পার্সটুডে- “ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে সৃষ্ট বিতর্কের সাথে ইরাক, সিরিয়া ও লিবিয়ার ঘটনাবলীকে এক করে দেখা ছিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সবচেয়ে বড় ভুল। এই ভুল ধারণা মূলত ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে, যিনি তার রাজনৈতিক প্রভাব প্রতিপত্তি ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচির বিরোধিতার উপর ভিত্তি করে তৈরি করেছেন।”

পার্সটুডে অনুসারে, মিডল ইস্ট মনিটর ওয়েবসাইট “ইরানের পারমাণবিক বিষয় এবং বল প্রয়োগের কৌশলের সীমা” শীর্ষক এক প্রতিবেদনে লিখেছে: ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইসরায়েলি কর্মকর্তারা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির ধরণ সম্পর্কে ভুলভাবে মূল্যায়ন করেছেন। “সর্বোচ্চ চাপ” প্রচারণা, যা শেষ পর্যন্ত ১২ দিনের যৌথ মার্কিন-ইসরায়েলি সামরিক আক্রমণে পরিণত হয়েছিল তা তেহরানের পারমাণবিক ক্ষমতা হ্রাসে করার ক্ষেত্রে কোনও বাস্তব প্রভাব ফেলেনি।

এই পরিবর্তন কূটনীতির ক্ষেত্র এবং আলোচনার প্রকৃতিকে নতুন করে সংজ্ঞায়িত করেছে। ইরাক, সিরিয়া বা লিবিয়ার বিপরীতে, ইরান শুধু যে পারমাণবিক অবকাঠামো এবং স্থাপন তৈরি করেছে তাই নয় একইসাথে তারা বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে পারমাণবিক পদার্থবিদ্যা অনুষদ প্রতিষ্ঠা, প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে শিক্ষার্থীদের এ বিষয়ে শিক্ষা দান এবং দেশীয় বৈজ্ঞানিক ও প্রকৌশল দক্ষতার  বিকাশ ঘটিয়ে পারমাণবিক জ্ঞানকে নিজস্ব সামর্থ্যের ভিত্তিতে গড়ে করে তুলেছে।

এই কারণেই সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রশাসন, আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (IAEA)'র  মাধ্যমে ইরানের পারমাণবিক সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেছিল। এই পদ্ধতিটি বুশ এবং ট্রাম্প প্রশাসনের মতের সম্পূর্ণ বিপরীত। কারণ বুশ ও ট্রাম্প প্রশাসন ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি পুরোপুরি বন্ধ করার উপর জোর দিয়েছে।

ইসরায়েল ইরানের ক্রমবর্ধমান পারমাণবিক জ্ঞান এবং অবকাঠামো সম্পর্কে ভালভাবে অবগত আছে। ফলে, মোসাদের সাবেক প্রধান মেইর ডাগানের মতো ব্যক্তিরা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচী ব্যাহত করার জন্য একটি গোপন নাশকতা অভিযান শুরু করেছিল। এসব নাশকতার মধ্যে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ সাইটগুলো ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য স্টাক্সনেট ভাইরাস ছড়িয়ে দেয়া ছিল অন্যতম এবং দ্বিতীয়ত, ইরানের পারমাণবিক বিজ্ঞানীদের হত্যা করা।

আধুনিক ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো সরকারগুলো অন্য দেশের বৈজ্ঞানিক জ্ঞানকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করার চেষ্টা করেছে। তবে, দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে এ প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকা সত্ত্বেও, মার্কিন-ইসরায়েলি চাপের মধ্যে মধ্যে ইরান তার কাজ অব্যাহত রেখেছে।  

ট্রাম্প প্রশাসনের চিন্তাভাবনায় সবচেয়ে বড় ভুল ছিল পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে সৃষ্ট বিতর্কের সাথে ইরাক, সিরিয়া ও লিবিয়ার ঘটনাবলীকে এক করে দেখা। এই ভুল ধারণা মূলত ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে, যিনি তার রাজনৈতিক প্রভাব প্রতিপত্তি ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচির বিরোধিতার উপর ভিত্তি করে তৈরি করেছেন। নেতানিয়াহুর ধারণা ইরান ইস্যু যত দীর্ঘায়িত হবে, তত বেশি ইরানকে ইসরায়েলের অস্তিত্বের জন্য হুমকি হিসেবে তুলে ধরতে পারবে এবং ইসরায়েলি রাজনীতিতে তার অব্যাহত ভূমিকাকে ন্যায্যতা দিতে পারবেন।

কিন্তু বাস্তবতা হল ইরানের পারমাণবিক ক্ষমতায় কোনও বড় ধরনের ব্যাঘাত ঘটেনি। ইরানি কর্মকর্তারা বারবার বলেছেন যে তারা কখনই এমন কিছু মেনে নেবে না যার ফলে পরমাণু কর্মসুচি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।#

পার্সটুডে/এমআরএইচ/২০

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।