কেন আমরা আন্তর্জাতিক নৌবহর 'গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা' নিয়ে গাজা যাচ্ছি?
-
• গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার গাজা যাত্রা
কেপ টাউন-ভিত্তিক লেখক এবং সাংস্কৃতিক কর্মী 'জারেড স্যাকস' এবং 'জুকিসওয়া ওয়ানার', আল জাজিরায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে লিখেছেন: "আমরা আন্তর্জাতিক নৌবহর 'গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা' নিয়ে গাজা যাচ্ছি কেন?"। সকলের প্রত্যাশা ও আশা পূরণ করাই আমাদের এ যাত্রার উদ্দেশ্য। এখানে হতাশ হওয়ার অর্থ হল গাজার জনগণকে আগ্রাসনের মুখে ছেড়ে দেয়া এবং দখলদার ইসরায়েলের কাছে আত্মসমর্পণ করা।
কেপ টাউন-ভিত্তিক এই লেখক ও সাংস্কৃতিক কর্মীরা লিখেছেন, "গত ২৩ মাস ধরে, আমরা বিশ্বের কিছু শক্তিশালী দেশের পৃষ্ঠপোষকতায় ইসরায়েলের বর্ণবাদী আচরণ প্রত্যক্ষ করছি, যারা গাজার জনগণকে তাদের মৌলিক চাহিদা, যেমন খাদ্য, ওষুধ, আশ্রয়, চলাচলের স্বাধীনতা এবং পানি থেকে বঞ্চিত করছে। আমরা, বিশ্বের অনেকের সাথে, প্রতিবাদ করেছি, বয়কট করেছি এবং গাজার অবরোধ অবসানের জন্য জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছি, কিন্তু এই পদক্ষেপগুলো যথেষ্ট ছিল না।"
আন্তর্জাতিক নৌবহর 'গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা' (GSF) হল গাজার অবরোধ ভেঙে সেখানকার মানুষের কাছে প্রয়োজনীয় সাহায্য পৌঁছে দেওয়ার জন্য সংগঠিত বৃহত্তম নাগরিক মানবিক মিশন। এই বহরের মধ্যে রয়েছে বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার কর্মী, ডাক্তার, শিল্পী, ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব এবং আইনজীবীরা যারা মানবিক সংকট মোকাবেলায় গাজায় যাচ্ছেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিনিধিদলও দেশজুড়ে এবং আন্তর্জাতিকভাবে গড়ে ওঠা আন্দোলনে যোগ দিয়েছে। আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের কাছ থেকে এই নৌবহরটি বিশেষভাবে সমর্থন পেয়েছে, আদালত গাজায় মানবিক সাহায্য পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। তবে, ইসরায়েল এখনও পর্যন্ত এই আদেশ মেনে চলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
৯ জুন, ইসরায়েলি বাহিনী আন্তর্জাতিক জলসীমায় মানবিক সাহায্য জাহাজ ম্যাডেলিনকে আটক করে, তার পরে আরেকটি জাহাজ হান্দালাও আটক করে। এই পদক্ষেপগুলি মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং যুদ্ধাপরাধ যার বিচার করা উচিত।
যদিও অনেক দেশ ইসরায়েলের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে সক্ষম, তবুও এখনও পর্যন্ত তারা কার্যকর কোনও পদক্ষেপ নেয়নি বরং এসব দেশ ইসরায়েলকে সমর্থন দিচ্ছে।
আন্তর্জাতিক নৌবহর 'গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা' কেবল একটি প্রতীকী কাজ নয় বরং ন্যায়বিচার ও মানবাধিকারের জন্য একটি বিশ্বব্যাপী আন্দোলনের অংশ। আজ, ৪০ টিরও বেশি দেশের প্রতিনিধিরা ত্রাণবাহী জাহাজ নিয়ে গাজার দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এই আন্দোলন নিপীড়ন ও অপরাধের বিরুদ্ধে বিশ্বের জনগণের ঐক্যের প্রতিফলন। তারা আত্মবিশ্বাসের সাথে এগিয়ে যাচ্ছে কারণ এই সংগ্রাম ন্যায্য।
বিশ্বজুড়ে শত শত সৎ বিবেকবান মানুষের নেতৃত্বে এই মানবিক অভিযান এটা নিশ্চিত করেছে যে আমরা চুপ করে থাকতে পারি না এবং ইসরায়েলের অপরাধ প্রকাশ করতে এবং গাজার উপর অবরোধ ভাঙতে অবশ্যই এগিয়ে যেতে হবে। এই আন্দোলনের সাথে দক্ষিণ আফ্রিকার জনগণের সংহতি ন্যায়বিচারের প্রতি সমর্থনের প্রতীক।
এই প্রসঙ্গে, দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদ বিরোধী সংগ্রামের সাবেক নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার নাতি ম্যান্ডেলা ম্যান্ডেলাও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ইসরায়েলি দখলদারিত্বের অধীনে ফিলিস্তিনিদের জীবন বর্ণবাদের অধীনে কৃষ্ণাঙ্গ দক্ষিণ আফ্রিকানদের অভিজ্ঞতার চেয়েও খারাপ।#
পার্সটুডে/এমআরএইচ/৮
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।