গাজায় "শান্তির বিভ্রমে" মগ্ন পশ্চিমারা: গার্ডিয়ান
-
ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু
পার্সটুডে-একটি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম লিখেছে: "শান্তি প্রক্রিয়া"র বিভ্রমে ইহুদিবাদী ইসরাইলের দখলদারিত্ব এবং অপরাধের বাস্তবতা থেকে পশ্চিমারা চোখ বন্ধ করে রেখেছে।
এটি এমন একটি প্রক্রিয়া যা গত ৭৫ বছরে কেবল শেষ হয় নি বরং বৈধতার একটি সংগঠিত চেহারাও ধারণ করেছে।
পার্সটুডে অনুসারে, ব্রিটিশ সংবাদপত্র "দ্য গার্ডিয়ান" একটি নতুন বিশ্লেষণে এ বিষয়টিকে সম্বোধন করেছে যে, এ অঞ্চলে ইহুদিবাদী ইসরাইলের সহিংসতা পশ্চিমা বিশ্বের কাছে অদৃশ্য বলে বিবেচিত হয়। কারণ গত দুই বছর ধরে ইসরাইল পরিকল্পিতভাবে গাজা ধ্বংস করেছে এবং লক্ষ লক্ষ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে, কিন্তু পশ্চিমা সরকারগুলোর কাছ থেকে কোনও বাস্তব প্রতিক্রিয়া দেখা যায় নি।
দ্য গার্ডিয়ান লিখেছে: এই ধ্বংসযজ্ঞের প্রতি পশ্চিমাদের প্রতিক্রিয়া যুদ্ধের প্রথম বছরে "নিঃশর্ত সমর্থন" দিয়ে শুরু হয়েছিল। তারপর "উদ্বেগ প্রকাশ" এবং সবশেষে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা বা বাণিজ্য সম্পর্ক হ্রাসের সম্ভাবনা সম্পর্কে "খালি হুমকি" দিয়ে শুরু হয়েছিল। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে, এই একই সরকারগুলো "প্যালেস্টাইন রাষ্ট্রের শর্তসাপেক্ষ স্বীকৃতি" দেওয়ার কথা বলেছে।
এই নিবন্ধকারের মতে, বিশ্ব কখনও ফিলিস্তিনিদের কথা শোনে নি এবং ফিলিস্তিনিদের অধিকার ও জীবনের চেয়ে দখলদার শাসকগোষ্ঠীর নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগকে তারা অগ্রাধিকার দিয়ে এসেছে।
দ্য গার্ডিয়ান জোর দিয়ে বলেছে যে ফিলিস্তিনিরা গত ৭৫ বছরে দুই ধরণের সহিংসতার মুখোমুখি হয়েছে: প্রথমত, ফিলিস্তিনিদের জীবন, ভূমি এবং সমাজের বিরুদ্ধে ইহুদিবাদী শাসকগোষ্ঠীর সরাসরি সহিংসতা এবং দ্বিতীয়ত, পশ্চিমা সহিংসতা যা কেবল সম্পূর্ণ ধ্বংসের মুহূর্তে ফিলিস্তিনিদের দুর্ভোগকে আপাতদৃষ্টিতে এবং ভাসাভাসাভাবে স্বীকৃতি দেয়।
দ্য গার্ডিয়ানের মতে, ইসরাইলি শাসকগোষ্ঠী বসতি সম্প্রসারণ এবং আলোচনার প্রতিটি রাউন্ডে "নতুন বাস্তবতা" তৈরি করে তার অবস্থান শক্তিশালী করার চেষ্টা চালিয়েছে।
গার্ডিয়ানের প্রবন্ধের আরেকটি অংশে বলা হয়েছে যে, বিশ্ব যাকে "শান্তি প্রক্রিয়া" বলে চেনে তা আসলে দখলদারিত্ব এবং নিয়মতান্ত্রিক দমন-পীড়নকে আড়াল করার জন্য একটি প্রতারণামূলক পর্দা এবং বিশ্ব যখন কূটনৈতিক স্লোগানে ডুবে আছে তখন ইসরাইল বসতি সম্প্রসারণ, চেকপয়েন্ট স্থাপন এবং প্রতিদিনের সহিংসতা ব্যবহার করে তার আধিপত্য আরও গভীর ও বিস্তৃত করেছে।
নিবন্ধটি বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করে যে কীভাবে দখলদার ইসরাইল গাজায় ক্যান্সার চিকিৎসার সরঞ্জাম প্রবেশ এবং গাজা থেকে রোগীদের চিকিৎসার জন্য বাইরে যাওয়া নিষিদ্ধ করেছিল। এমনকি ইসরাইলি সেনাবাহিনী গাজাবাসীদের দৈনিক ক্যালোরি গ্রহণের পরিমাণও গণনা করে কত খাদ্য আমদানি করা যেতে পারে তা নির্ধারণ করে।
গার্ডিয়ান এই "প্রশাসনিক নির্যাতন" কে "নিরাপত্তা উদ্বেগ" দ্বারা ন্যায্য বলে অভিহিত করেছে, তবুও পশ্চিমা সরকারগুলো "দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান" সম্পর্কে কথা বলে যাচ্ছে এবং এই নীতিগুলোর নিন্দা করতে অস্বীকার করে আসছে।
ব্রিটিশ মিডিয়া আউটলেট সতর্ক করে দিয়েছে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতাসহ বর্তমান পরিকল্পনাগুলো আবারও ইহুদিবাদী সরকারকে গাজার ওপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ দেয়।#
পার্সটুডে/এনএম/৭
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।