ট্রাম্পের বিতর্কিত শান্তি প্রস্তাব: আমেরিকার ক্রমবর্ধমান চাপ; ইউক্রেনের কঠিন পরীক্ষা
-
জেলেনস্কি (বামে) ও ট্রাম্প (ডানে)
পার্সটুডে- ২৮ দফা শান্তি প্রস্তাব মেনে নিতে আমেরিকার চাপ অব্যাহত রয়েছে। তবে ইউক্রেন ও তার ইউরোপীয় মিত্ররা এই প্রস্তাবকে ভারসাম্যহীন, ইউক্রেনের সার্বভৌমত্বের জন্য ক্ষতিকর এবং ক্রেমলিনের চাহিদার সঙ্গে অতিমাত্রায় সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে মনে করছে। এই শান্তি প্রস্তাব ইউক্রেন যুদ্ধের ভবিষ্যৎ, কিয়েভের অভ্যন্তরীণ সংহতি এবং ইউরোপের নিরাপত্তাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করতে পারে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুদ্ধ শেষ করতে ২৮ দফার প্রস্তাব শুধু কিয়েভ ও পশ্চিমা রাজনৈতিক পরিবেশে নতুন উত্তেজনা তৈরি করেনি বরং ইউরোপীয় মিত্রদের ভেতরের মতপার্থক্য এবং ইউক্রেনের অভ্যন্তরীণ উদ্বেগও বাড়িয়ে দিয়েছে। ওয়াশিংটন সময়সীমা বেঁধে দিয়ে এবং সাহায্য বন্ধ করার হুমকি দিয়ে ইউক্রেনকে এই প্রস্তাব মেনে নিতে চাপ দিচ্ছে; এ অবস্থায় বিশ্লেষকরা রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিতিশীলতার বিষয়ে সতর্ক করছেন। এই প্রতিবেদনে ইউক্রেন সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলী তুলে ধরা হলো।
ওয়াশিংটনের চাপ, কঠিন পরিস্থিতিতে ইউক্রেন
ট্রাম্পের শান্তি প্রস্তাব ঘোষণার পর ইউক্রেন ও ইউরোপে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। প্রস্তাব অনুযায়ী ইউক্রেনের কিছু অঞ্চল রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে যাবে, কিয়েভের সেনাবাহিনীর ওপর কঠিন সীমাবদ্ধতা আরোপ হবে এবং ক্রেমলিনের বহু দাবি পূরণ হবে।
ট্রাম্প বলেছেন, “জেলেনস্কির উচিৎ এই পরিকল্পনা মেনে নেওয়া"। তার মতে, ইউক্রেনের হাতে কোনো তরুপের তাস নেই। মার্কিন কর্মকর্তারা সতর্ক করেছেন—ইউক্রেন এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে গোয়েন্দা তথ্য শেয়ারিং ও সামরিক সহায়তা বন্ধ হবে। সিএনএন ও এনবিসি'র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হোয়াইট হাউস ইউক্রেনের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময়সীমাও নির্ধারণ করেছে।
ট্রাম্পের পরিকল্পনার মূল দিক: ভূখণ্ড ছাড় থেকে সেনাবাহিনী সীমিতকরণ
অ্যাক্সিওসসহ মার্কিন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, মার্কিন পরিকল্পনায় রয়েছে—
- দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে
- খেরসন ও জাপোরিঝিয়া অঞ্চলে বর্তমান সংঘর্ষরেখা বজায় থাকবে
- কিছু এলাকা “বেসামরিক অঞ্চল” হিসেবে ঘোষণা
- ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর সদস্যসংখ্যা ৬ লাখে সীমিত রাখা।
এ ছাড়া ইউক্রেনকে সংবিধান থেকে ন্যাটোতে যোগদানের লক্ষ্য বাদ দিতে হবে; এর বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্র কিছু নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেবে।
কিয়েভের তীব্র প্রতিক্রিয়া ও অস্থিতিশীলতার আশঙ্কা
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, দেশটি “ইতিহাসের অন্যতম কঠিন মুহূর্তে” রয়েছে- ইউক্রেন এখন “সম্মান হারানো অথবা একটি প্রধান মিত্র হারানোর” দ্বিধায় পড়েছে।
চ্যাথাম হাউসের বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, এই পরিকল্পনা গ্রহণ করলে ইউক্রেনে “ব্যাপক রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতা” দেখা দিতে পারে। ইউক্রেনীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, জেলেনস্কির বহু উপদেষ্টা প্রস্তাবটিকে “অগ্রহণযোগ্য” বলেছেন এবং আলোচনা স্থগিত রেখেছেন।#
পার্সটুডে/এসএ/২২
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন