সিরিয়া ইস্যুতে মস্কো ও দামেস্ক-বিরোধী ইঙ্গ-মার্কিন প্রচারণা জোরদার
(last modified Fri, 28 Apr 2017 13:06:31 GMT )
এপ্রিল ২৮, ২০১৭ ১৯:০৬ Asia/Dhaka
  • জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে মার্কিন প্রতিনিধি নিক হিলি
    জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে মার্কিন প্রতিনিধি নিক হিলি

সিরিয়া নিয়ে রুশ-মার্কিন দ্বন্দ্ব ক্রমেই জোরদার হচ্ছে। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে রুশ বিরোধী প্রচারণা জোরদারে ভূমিকা রেখেছেন মার্কিন ও ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন সম্প্রতি বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অনুরোধ করলে সিরিয়ায় আসাদ-বিরোধী মার্কিন হামলায় অংশ নেবে ব্রিটেন।

গতকাল (বৃহস্পতিবার) জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে মার্কিন প্রতিনিধি নিক হিলি রাশিয়ার ওপর নানা চাপ জোরদারের দাবি জানিয়ে বলেছেন, রাশিয়াই হচ্ছে একমাত্র পক্ষ যে চাইলে সিরিয়ার সংঘাত থামাতে পারে। এই চাপ জোরদারের জন্য রুশ ভেটো ক্ষমতার দিকেও তাকানোর দরকার নেই বলে তিনি নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।

সিরিয়ার মানবিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত ওই একই বৈঠকে রুশ প্রতিনিধি পিটার ইলিচেভ বলেছেন, পাশ্চাত্য যুদ্ধ-কবলিত সিরিয়ার পরিস্থিতি উন্নয়নে কোনো পদক্ষেপই নেয়নি।

সম্প্রতি মার্কিন সরকার সিরিয়ার আসাদ সরকার ও তার মিত্রদের বিরুদ্ধে প্রচার-প্রোপাগান্ডা জোরদার করেছে। বিশেষ করে সিরিয়ায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর পর থেকে মস্কোর বিরুদ্ধে প্রচার-হামলার তীব্র করে ওয়াশিংটন বলেছে যে, সিরিয়ার সংকট সমাধানে বাধা দিচ্ছে রুশ সরকার।

কিন্তু বিশ্লেষকরা বলছেন, মার্কিন নেতৃত্বাধীন পাশ্চাত্য ও তাদের তল্পিবাহক কয়েকটি আরব এবং তুর্কি সরকারই সিরিয়ায় সংকট জিইয়ে রাখার ও এমনকি তা জোরদারেরও চেষ্টা করছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রথমদিকে বলতেন যে সিরিয়া ইস্যুতে ওয়াশিংটনের একমাত্র লক্ষ্য হল তাকফিরি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আইএসআইএল বা দায়েশের সঙ্গে লড়াই জোরদার করা। কিন্তু বাস্তবে ট্রাম্প সিরিয়ার আসাদ সরকারকে উৎখাতের প্রচেষ্টাই জোরদার করেছেন যা বজায় রেখেছিল ওবামার সরকার। 

আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করার পশ্চিমা স্বপ্ন বাস্তবায়নে রাশিয়া অন্যতম প্রধান বাধা হওয়ায় মস্কোর বিরুদ্ধে কূটনৈতিক, রাজনৈতিক ও প্রচারণার চাপ জোরদার করেছে মার্কিন নেতৃত্বাধীন আসাদ-বিরোধী জোট।

এদিকে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর জোট সিআইএস-এর উপ-মহাসচিব ভ্যালেরি সিমারিকভ বলেছেন, পাশ্চাত্য সন্ত্রাসবাদ বিরোধী লড়াইয়ে দামেস্ক ও মস্কোর অবদানকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা চালাচ্ছে। তিনি আরও বলেছেন, ইরাক ও সিরিয়ায় রাসায়নিক হামলাগুলো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর কাজ হওয়া সত্ত্বেও পাশ্চাত্য এ বিষয়টিকে দামেস্ক সরকারের বিরুদ্ধে অপবাদ আরোপের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করছে। এসব রাসায়নিক হামলা সম্পর্কে অপপ্রচার চালিয়ে পাশ্চাত্য সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে রাশিয়া ও তার মিত্রদের সংগ্রামকেও ম্লান করার এবং রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছে।

সিআইএস-এর উপ-মহাসচিব মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান সংঘাতকে গণ-বিধ্বংসী অস্ত্র প্রয়োগের মাধ্যমে পাশ্চাত্যের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক যুদ্ধ হিসেবে গোটা অঞ্চলে ছড়িয়ে দেয়া হতে পারে বলে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

এটা স্পষ্ট পাশ্চাত্য তাদের লেলিয়ে দেয়া সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর কাছে রসায়নিক অস্ত্র দেয়াসহ সব ধরনের অবৈধ উপায়-উপকরণ ব্যবহার করে সিরিয়ার বৈধ সরকার এবং তার মিত্রদের অস্থিতিশীল করতে চায়। অথচ উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়ার স্টাইলে এই জাতীয় তৎপরতার দায়কে সিরিয়ার বৈধ সরকার ও তার মিত্রদের ওপর নির্লজ্জভাবে চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে মার্কিন নেতৃত্বাধীন পাশ্চাত্য।  #

পার্সটুডে/মু.আ.হুসাইন/২৮     

 

 

 

ট্যাগ