ইসলামের ইতিহাসের আরও এক নিষ্পাপ ফাতিমা : বেহেশত যার পায়ের নিচে!
https://parstoday.ir/bn/news/world-i42832-ইসলামের_ইতিহাসের_আরও_এক_নিষ্পাপ_ফাতিমা_বেহেশত_যার_পায়ের_নিচে!
ইরানসহ বিশ্বের নানা অঞ্চলে পালন করা হয়েছে পয়লা জিলকদ তথা হযরত ফাতিমা মাসুমা (সালামুল্লাহি আলাইহা)'র পবিত্র জন্ম-বার্ষিকী। এ দিবসকে কন্যা সন্তানের দিবস বা কন্যা দিবস হিসেবেও পালন করা হয়।
(last modified 2025-07-29T12:16:04+00:00 )
জুলাই ২৫, ২০১৭ ২০:০৪ Asia/Dhaka
  • ইসলামের ইতিহাসের আরও এক নিষ্পাপ ফাতিমা : বেহেশত যার পায়ের নিচে!

ইরানসহ বিশ্বের নানা অঞ্চলে পালন করা হয়েছে পয়লা জিলকদ তথা হযরত ফাতিমা মাসুমা (সালামুল্লাহি আলাইহা)'র পবিত্র জন্ম-বার্ষিকী। এ দিবসকে কন্যা সন্তানের দিবস বা কন্যা দিবস হিসেবেও পালন করা হয়।

আজ থেকে ১২৬৫ চন্দ্র-বছর আগে ১৭৩ হিজরির এই দিনে (১ জিলকদ) জন্মগ্রহণ করেন বিশ্বনবী (সা.)'র আহলে বাইতের সদস্য ইমাম মুসা কাজিম (আ.)'র কন্যা ও ইমাম রেজা (আ.)'র বোন হযরত ফাতিমা মাসুমা (সালামুল্লাহি আলাইহা)। 

তিনি ২০১ হিজরির ১০ ই রবিউস সানি শাহাদত বরণ করেন ইরানের পবিত্র কোম শহরে। এ সময় তাঁর বয়স ছিল ২৮ বছর।

শাহাদতের ১৭ দিন আগে সভেহ শহরের কাছে তার কাফেলার ওপর হামলা চালানো হলে তিনি আহত হন। বিশ্বনবী (সা.)'র আহলে বাইত ও নবী-বংশের শত্রু আব্বাসিয় শাসকদের লেলিয়ে-দেয়া অনুচররা ওই হামলা চালায়।

হযরত ফাতিমা মাসুমা (সা. আ.) ভাই ইমাম রেজা (আ.)'র সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য জন্মভূমি মদীনা থেকে খোরাসান প্রদেশের মার্ভ শহরের উদ্দেশ্যে সফররত ছিলেন। ধূর্ত মামুন ইমাম রেজা (আ.)-কে মদীনা থেকে মার্ভ শহরে আসতে বাধ্য করেছিলেন।

মহীয়সী নারী হযরত মাসুমা (সা. আ.) ছিলেন জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও খোদাভীতিসহ নানা মহত গুণের প্রতিচ্ছবি। ধর্মীয় বিষয়ে অনেক জটিল প্রশ্নের উত্তর তিনি বলে দিতেন যা অনেক অভিজ্ঞ ও বয়স্ক আলেমও বলতে পারতেন না। বিশ্বনবীর (সা) পবিত্র আহলে বাইতের নেতৃত্বের পক্ষে জোরালো ও কার্যকর ভূমিকা রাখার জন্য তাঁকে বলা হত 'কারিমে আহলে বাইত' তথা 'আহলে বাইতের মহান ও দয়ালু ব্যক্তিত্ব '। মাসুমা বা নিষ্পাপ ছিল তাঁর উপাধি।

প্রায় হাজার বছর আগে লিখিত 'শাওয়াহেদুন্নবুওয়াত' নামক বইয়ে বর্ণিত একটি হাদিসে এসেছে, যারা ইরানের খোরাসানে অবস্থিত (যার প্রধান শহরের বর্তমান নাম মাশহাদ) ইমাম রেজা (আ.)'র মাজার জিয়ারত করবে (এই মহান ইমামের উচ্চ সম্মান সম্পর্কে পরিচিতি ও সমীহ নিয়ে) তারা বেহেশতবাসী হবে।(পৃ.১৪৩-১৪৪)

বিশিষ্ট কবি ও আধ্যাত্মিক সাধক মাওলানা আবদুর রহমান জামির লিখিত এই বইটি বহু বছর আগে বাংলা ভাষায়ও অনূদিত হয়েছে ( মরহুম মাওলানা মহিউদ্দিনের মাধ্যমে)।

ওই বইয়ের ২৭২ পৃষ্ঠায় ইরানের পবিত্র কোম শহরে অবস্থিত হযরত ফাতিমা মাসুমা (সা.)’র পবিত্র মাজার জিয়ারত সম্পর্কেও একই কথা বলা হয়েছে।

হযরত ইমাম রেজা (আ) বলেছেন, যে কোমে আমার বোন ফাতিমার (সা.আ) (মাজার) জিয়ারত করবে সে যেন আমার  জিয়ারত করল

প্রতি বছর ইরানসহ বিশ্বের নানা অঞ্চল থেকে নবী (সা.)বংশ ও আহলে বাইতের প্রেমিক লাখ লাখ মুসলমান জিয়ারত করেন এই মহীয়সী নারীর পবিত্র মাজার।

এ ছাড়াও এই মহীয়সী নারীর পবিত্র মাজারের বরকতেই কোম শহরটি লাভ করেছে ধর্মীয় শহরের মর্যাদা এবং শহরটি ইসলামী ধর্ম তত্ত্ব শিক্ষার ক্ষেত্রে বিশ্বের অন্যতম প্রধান কেন্দ্র হিসেবে ১২০০ বছর পরও ঐতিহাসিক খ্যাতি ধরে রেখেছে। পবিত্র কোম শহরটি প্রথম থেকেই বিশ্বনবীর (সা) আহলে বাইতের অনুরাগীদের হাতে গড়ে উঠেছিল। 

উল্লেখ্য, ইরান সফরে এসে সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের শ্যালিকা লরেন বুথ হযরত মাসুমা (সা.আ.)'র পবিত্র মাজার সফরকালে অভিভূত হন এবং এখানেই তিনি পবিত্র ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন।

সে সময়কার অনুভূতি সম্পর্কে লরেন বুথ নিজেই বলেন, ‘এটা ছিল মঙ্গলবার সন্ধ্যা। মাজারে বসে বসে চিন্তা করছিলাম এবং প্রচণ্ডভাবে আধ্যাত্মিক আলোয় আলোড়িত হচ্ছিলাম। বাস্তবেই সেই মুহূর্তটি ছিল আমার জীবনের আনন্দ আর রোমাঞ্চ মিশ্রিত অসাধারণ একটি সময়। এর আগে কখনো আমার জীবনে এমন মুহূর্ত আসেনি।’ #

পার্সটুডে/মু.আ.হুসাইন/২৫