কথাবার্তা
একনজরে ঢাকা ও কোলকাতার পত্রপত্রিকার সব গুরুত্বপূর্ণ খবর
সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতা! ১৪ এপ্রিল বৃহস্পতিবারের কথাবার্তার আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি বাবুল আখতার। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি। এরপর গুরুত্বপূর্ণ দুটি খবরের বিশ্লেষণে যাবো। বিশ্লেষণ করবেন সহকর্মী সিরাজুল ইসলাম।
বাংলাদেশের শিরোনাম:
-
ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্ক -আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ হতে পারে গণতন্ত্র ও সুশাসন-প্রথম আলো
- রুশ বাহিনীর কাছে ইউক্রেনের সেনাদের আত্মসমর্পণের ফুটেজ প্রকাশ-যুগান্তর
- লবিস্ট নিয়োগ করেও দুঃশাসনের কথা আড়াল করতে পারেনি সরকার: রিজভী-মানবজমিন
- মধ্যরাতের আদালত নিয়ে প্রশ্ন তুললেন ইমরান -ইত্তেফাক
- মার্কিন মানবাধিকার প্রতিবেদন নিয়ে ঢাকার নানা প্রশ্ন -কালের কণ্ঠ
-
নবতর পথযাত্রার সূচনা করতে চায় আওয়ামী লীগ : ওবায়দুল কাদের- দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন
ভারতের শিরোনাম:
- জি-৭ বৈঠকে ভারতকে আমন্ত্রণ করবে না জার্মানি! গুঞ্জন ওড়াল বার্লিন-সংবাদ প্রতিদিন
- ইউক্রেনের পাল্টা মারে নষ্ট হল রুশ যুদ্ধজাহাজ, কিয়েভের কমান্ড সেন্টার হামলার হুঁশিয়ারি মস্কোর -আজকাল
- গণতন্ত্রের গ্যাস চেম্বার হয়ে উঠেছে বাংলা! স্পিকারের পাশে বসে আবার তোপ ধনখড়ের -আনন্দবাজার পত্রিকা
শ্রোতাবন্ধুরা! শিরোনামের পর এবার দু'টি খবরের বিশ্লেষণে যাচ্ছি-
কথাবার্তার প্রশ্ন
১. ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে চাঁদা তোলা নিয়ে সংঘর্ষ, নিহত ২ জন। পবিত্র রোজার মাসে এমন খবরকে কীভাবে দেখছেন আপনি?
২. আমেরিকা ও ন্যাটোর অস্ত্র বোঝাই পরিবহনে হামলা চালাবে রাশিয়া- এমন হুশিয়ারি দিয়েছেন রুশ উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ। পরিস্থিতি কী আরো অবনতির দিকে যাচ্ছে বলে মনে হয়?
বিশ্লেষণের বাইরে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবর:
ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্ক -আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ হতে পারে গণতন্ত্র ও সুশাসন-প্রথম আলো
কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি নিয়ে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র সন্তোষ প্রকাশ করেছে। এর ধারাবাহিকতায় পরের ৫০ বছরে এ অংশীদারত্বকে আরও জোরদারের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে দুই দেশ। কিন্তু দুই দেশের সম্পর্ককে পরের ধাপে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে র্যাবের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক নিষেধাজ্ঞা একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ূন কবীরের মতে, ভবিষ্যতে গণতন্ত্র ও সুশাসনের মতো বিষয়গুলো ওয়াশিংটনের সঙ্গে ঢাকার সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার পথে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
মূলত গত সপ্তাহে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের নানা পর্যায়ের আলোচনার পর দুই দেশের মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে জানতে চাইলে এ অভিমত দেন হুমায়ূন কবীর।
৪ এপ্রিল ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বৈঠক করেন। ৬ এপ্রিল বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তাবিষয়ক মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি বনি জেনকিন্সের নেতৃত্বে দুই দেশের নিরাপত্তা সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।
এ ছাড়া আব্দুল মোমেন ওয়াশিংটন সফরকালে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদ ও সিনেটের বেশ কয়েক সদস্যের সঙ্গে আলোচনা করেন। অন্যদিকে মাসুদ বিন মোমেন মার্কিন উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়েন্ডি শারমেন ও হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের জ্যেষ্ঠ পরিচালক সুমনা গুহ রায়ের সঙ্গে বৈঠক করেন।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ দেশটির নানা পর্যায়ের কর্মকর্তারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে অংশীদারত্ব এগিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশে মানবাধিকার, আইনের শাসন ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর জোর দিয়েছেন।
পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন দেশে ফিরে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন যাতে ভালো হয়, এ বিষয় তাঁর সঙ্গে বৈঠকে তুলেছেন ওয়েন্ডি শারমেন।
সম্পর্কের পরের ৫০ বছর
দুই দেশের সম্পর্কের পরের ৫০ বছর সম্পর্কে জানতে চাইলে ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ূন কবীর বলেন, বাংলাদেশকে নিজের স্বার্থেই অংশগ্রহণমূলক সমাজ গঠনে মনোযোগী হতে হবে।
হুমায়ূন কবীর বলেন, ‘মনে রাখতে হবে, যুক্তরাষ্ট্রের মতো বন্ধুদেশগুলো প্রাথমিকভাবে আমাদের একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চায়। এ জন্য তারা বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর গণতান্ত্রিক বিকাশে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে।’
হুমায়ূন কবীরের মতে, অর্থনৈতিক উত্তরণের পর বাংলাদেশ যখন প্রতিযোগিতামূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক বাজারে প্রবেশের জন্য যাবে, তখন এ দেশের ভাবমূর্তির প্রসঙ্গটি সামনে আসবে। তখন যদি গণতান্ত্রিক চর্চার দিকটি যথাযথ না হয়, তাহলে বিনিয়োগসহ নানা ক্ষেত্রে বাংলাদেশ প্রতিকূলতার মুখোমুখি হতে পারে।
চ্যালেঞ্জ গণতন্ত্রে
গবেষণা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের (বিইআই) প্রেসিডেন্ট হুমায়ূন কবীরের মতে, র্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞাকে সম্পর্কের জন্য যতটা চ্যালেঞ্জ মনে করা হচ্ছে, বাস্তবে তা হবে না। চ্যালেঞ্জ হবে গণতন্ত্রের বিষয়টি।
কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে হুমায়ূন কবীর বলেন, আগে মার্কিন প্রশাসনের বৈশ্বিকনীতিতে অগ্রাধিকারে ছিল সন্ত্রাসবাদ দমন। জো বাইডেন মার্কিন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার পর এ নীতিতে পরিবর্তন এসেছে। নতুন মার্কিন প্রশাসনের বৈশ্বিকনীতির প্রধান অগ্রাধিকার গণতন্ত্র।
হুমায়ূন কবীর বলেন, র্যাবের প্রতিষ্ঠার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র প্রশিক্ষণের পাশাপাশি কারিগরি ও আর্থিক সহায়তা দিয়ে নানাভাবে সমর্থন যুগিয়ে গেছে। কিন্তু গত ডিসেম্বরে দেওয়া নিষেধাজ্ঞার কারণে এসব সহযোগিতা বন্ধ হয়ে যাবে।
হুমায়ূন কবীর বলেন, বাইডেন ক্ষমতায় আসার পর মার্কিন নীতিতে গণতন্ত্রের ওপর বিশেষভাবে গুরুত্ব দিচ্ছেন। চীনকে সামনে রেখে তিনি গণতন্ত্র ও স্বৈরতন্ত্রের লড়াইয়ের কথা বলছেন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে গণতন্ত্র ও স্বৈরতন্ত্রের লড়াই আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। ইউক্রেনকে সমর্থন দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বুঝিয়ে দিচ্ছে, ওয়াশিংটনের অগ্রাধিকারে থাকবে গণতন্ত্র। এমন এক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকেও মনে রাখতে হবে, আগামী দিনে গণতন্ত্রে যুক্তরাষ্ট্র অনেক বেশি জোর দেবে।
বোঝাপড়ায় ঘাটতি
গত এক দশকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক বহুমাত্রিক হলেও প্রকাশ্যে দেশটিকে নিয়ে সমালোচনায় মুখর থেকেছেন বাংলাদেশের রাজনীতিবিদেরা। ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্কের এই পরস্পরবিরোধিতার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে হুমায়ূন কবীর বলেন, ‘বাইরের পৃথিবী সম্পর্কে আমাদের ধারণাটা দুর্বল। বিশ্বের সব দেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে দৃষ্টিভঙ্গি ও বোঝাপড়ার ক্ষেত্রে যে গভীরতা প্রয়োজন, তাতে আমাদের ঘাটতি আছে। এই ঘাটতি রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক স্তরের পাশাপাশি সামাজিক স্তরেও বিদ্যমান।’
হুমায়ূন কবীর বলেন, ‘বাংলাদেশের কৃষি খাতে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা উল্লেখ করার মতো। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশকে সহায়তার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। করোনা মহামারি মোকাবিলায় বাংলাদেশ সর্বোচ্চসংখ্যক টিকা যুক্তরাষ্ট্র থেকে উপহার হিসেবে পেয়েছে। অথচ বাংলাদেশে সামাজিকভাবে এই বিষয়গুলোর যতটা মূল্যায়ন হওয়া উচিত ছিল, আমরা সেভাবে তা দেখি না। আমাদের চিন্তার জগতে একধরনের সীমাবদ্ধতা আছে। এ কারণে আমরা এগুলোর সঠিক মূল্যায়ন করতে পারিনি।’
আইপিএসে অর্থনীতিতে অগ্রাধিকার বিবেচ্য
ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরকে ঘিরে ভূরাজনৈতিক প্রতিযোগিতা ক্রমশ বেড়ে চলছে। ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি (আইপিএস) বা ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় কৌশলে বাংলাদেশকে দেখার আগ্রহ শুরু থেকেই জানিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র।
এখন আইপিএসে যুক্ততা নিয়ে বাংলাদেশের কৌশলের বিষয়টি কেমন হবে, জানতে চাইলে সাবেক কূটনীতিক হুমায়ূন কবীর বলেন, ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ফ্রান্স, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) আলাদা আলাদা আইপিএস ঘোষণা করেছে। এ অঞ্চলকে ঘিরে সবার মধ্যে ক্রমবর্ধমান আগ্রহ চোখে পড়ছে। এখন এতে ঢাকা যুক্ত হবে কি হবে না, তা একান্তভাবেই বাংলাদেশের সিদ্ধান্ত। এখন বাংলাদেশের আইপিএসের অর্থনৈতিক দিকটিতে বেশি মনোযোগ দেওয়া উচিত। সামরিক বিভাজন বা সামরিক কোনো প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের মনোযোগ দেওয়া উচিত নয়।
হুমায়ূন কবীরের মতে, আইপিএসে যুক্ততার মাধ্যমে সামুদ্রিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলাসহ নানা বিষয়ে সহযোগিতা পাওয়া গেলে তাতে যুক্ততায় কোনো ক্ষতি নেই।
সমরাস্ত্র সংগ্রহে বিবেচ্য বিষয়
বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়নে ফোর্সেস গোল ২০৩০-এর লক্ষ্য পূরণে সমরাস্ত্র সংগ্রহে বৈচিত্র্য আনার বিষয়ে জোর দেওয়া হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিইআইয়ের প্রেসিডেন্ট হুমায়ূন কবীর বলেন, বাংলাদেশের চাহিদার বিষয়টি মাথায় রেখে যুক্তরাষ্ট্র এগিয়ে আসবে, এটাই স্বাভাবিক। এখন বাংলাদেশ যদি সমরাস্ত্রের উৎস হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রকে বিবেচনায় নিয়ে থাকে, তাহলে কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখা জরুরি। যেমন বাংলাদেশ যে ধরনের আধুনিক সমরাস্ত্র চায়, যুক্তরাষ্ট্র কি তা সরবরাহ করতে পারবে কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে যে সমরাস্ত্র কেনা হবে, তা কতটা প্রতিযোগিতামূলক দামে পাওয়া যাবে।
সার্বিকভাবে হুমায়ূন কবীর বলেন, সামগ্রিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আস্থার সম্পর্ক রাখতে পারলে শুধু দ্বিপক্ষীয়ভাবেই নয়, নানা মাত্রায় বাংলাদেশের লাভবান হওয়ার সুযোগ থাকবে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গভীর আস্থার সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারলে তার একটি কৌশলগত মূল্যও রয়েছে।
মার্কিন মানবাধিকার প্রতিবেদন নিয়ে ঢাকার নানা প্রশ্ন -কালের কণ্ঠ
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মানবাধিকার প্রতিবেদনের সত্যতা ও যথার্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সরকার। গত মঙ্গলবার রাতে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিভিন্ন অভিযোগ স্থান পেয়েছে।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহিরয়ার আলম বলেছেন, ‘প্রতিবেদনটিতে সরকারবিরোধী প্রপাগান্ডা থেকে তথ্য নেওয়া হয়েছে। আগামী রবিবার এবং তারপর মার্কিন সরকারের সঙ্গে আমাদের যে ধারাবাহিক বৈঠক আছে, সেখানে এই প্রতিবেদন নিয়ে কথা বলা হবে।
প্রতিটি বিষয়ে তাদের কাছ থেকে জানতে চাইব। আমাদের অবস্থান কী তা-ও তাদের জানাব। ’
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে তথ্যবিভ্রাট রয়েছে বলে মনে করছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানও। তাঁর মতে, যে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে, তা এই সময়ের নয়। আর দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর কেউ অপরাধ করলে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘২০২১ সালে যে পরিমাণ গুম-খুনের কথা প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, আমাদের রেকর্ডে তা নেই। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীর দ্বারা যদি কেউ বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন, নিরাপত্তা বাহিনী আত্মরক্ষায় যদি গুলিও করে, তাহলে প্রত্যেক ঘটনায় একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তদন্ত করেন। সে অনুযায়ী আমরা বিষয়টি নিষ্পত্তি করি বা বিচার বিভাগে পাঠিয়ে দিই। ’
অপরাধের দায়ে কারাগারে থাকা পুলিশ ও র্যাবের কর্মকর্তাদের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘নিরাপত্তা বাহিনীর যথেষ্টসংখ্যক কর্তকর্তা কারাগারে আছেন। র্যাবেরও অনেক সদস্য কারাগারে আছেন। এর অর্থ কেউই বিচারের ঊর্ধ্বে নয়। তারা (যুক্তরাষ্ট্র) যেটা করেছে, তাদের তথ্যবিভ্রাট হয়েছে বলে আমি মনে করি। ’
নিরাপত্তা বাহিনী রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার হচ্ছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এটা হতো তখন যখন বিএনপি ক্ষমতায় ছিল। যখন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন, তখন থেকে কোনো ধরনের অন্যায়-অত্যাচার নিরাপত্তা বাহিনী করলে তাকে কিন্তু আইনের মুখোমুখি আনা হচ্ছে। আমি সেটাই বারবার স্পষ্ট করে বলছি। ’
প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হচ্ছে জানিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহিরয়ার আলম বলেন, এ পর্যন্ত যা দেখা হয়েছে তাতে মনে হয়েছে, রোহিঙ্গা ইস্যুটিও ভুলভাবে মার্কিন প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে। ‘এলজিবিটিদের (লেসবিয়ান, গে, বাইসেক্সুয়াল, ট্রান্সজেন্ডার)’ জন্য বাংলাদেশে আইন নেই এবং বাংলাদেশ তাদের প্রয়োজন মেটাতে পারছে না—প্রতিবেদনের এই অংশের বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটি আমাদের ইসলাম ধর্মের পরিপন্থী। পৃথিবীর এমন একটি মুসলিম দেশ দেখান, যারা এলজিবিটিকে অনুমোদন দেয়। এটা বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে বিরোধিতা করা হবে, ধর্মের সঙ্গে বিরোধিতা করা হবে। ’
মার্কিন প্রতিবেদনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সম্পর্কে দেওয়া তথ্য প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘খালেদা জিয়ার মামলার ইতিহাসও এখানে নিয়ে আসা হয়েছে। তাঁকে রাজনৈতিক বন্দি বলা হয়েছে। তিনি তো রাজনৈতিক বন্দি নন। আমরা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যতবার এ নিয়ে কথা বলেছি, সেখানে আমরা সব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছি। তাঁকে মানবিক কারণে জেল থেকে মুক্তি দিয়ে বাসায় থাকতে দেওয়া হয়েছে। ’
রোহিঙ্গাদের বিষয়েও ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছে দাবি করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘কয়েকজন রোহিঙ্গা ভাসানচর থেকে পালানোর সময় নৌকা ডুবে মারা গেছে। এটাও কি আমাদের দোষ? আমাদের ঘাড়ে এ দোষ চাপানো হয়েছে। ’ তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা প্রশ্নে পৃথিবীর কেউ যদি আমাদের মানবিকতা শেখাতে আসে, আমাদের মনে হয়, তাদের নৈতিক স্খলন হয়েছে। ’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়া
যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, বিভিন্ন উৎস থেকে তথ্য যাচাই-বাছাই করে মানবাধিকার প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। এটি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কোনো নীতিগত অবস্থানপত্র নয়। তবে এই প্রতিবেদন যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশের সরকার ব্যবহার করে।
যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস এক বার্তায় বলেছেন, ‘মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা বাড়াতে আমাদের অবশ্যই একসঙ্গে কাজ করতে হবে। আমরা যেসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হব, সে সম্পর্কে সততার সঙ্গে কথা বলতে হবে। মানবাধিকার পরিস্থিতির অগ্রগতি শুরু হয় তথ্য দিয়ে। ’
রুশ বাহিনীর কাছে ইউক্রেনের সেনাদের আত্মসমর্পণের ফুটেজ প্রকাশ-যুগান্তর
ইউক্রেনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় মারিওপল শহরটিতে এক হাজারের বেশি ইউক্রেনের মেরিন সেনা আত্মসমর্পণ করেছে বলে রাশিয়া জানিয়েছে।
বুধবার রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে মেজর জেনারেল ইগোর কোনাশেঙ্কভ এ তথ্য জানান। খবর দ্যা টেলিগ্রাফের।
রাশিয়ার কয়েকটি টিভিতে ইউক্রেনের মেরিন সেনাদের আত্মসমর্পণের ভিডিও ফুটেজ প্রচার করা হয়েছে। রুশ প্রতিরক্ষা জানায়, মারিওপলের ৩৬তম মেরিন ব্রিগেডের মোট ১ হাজার ২৬ জন সেনা আত্মসমর্পণ করেছেন যার মধ্যে ১৬২ জন অফিসার রয়েছেন।
এতে বলা হয়েছে, আত্মসমর্পণ করা সেনাদের মধ্যে ৪৭ জন নারী সেনাও রয়েছেন। এছাড়া, আহত ১৫১ সেনাকে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়।
রাশিয়ার সামরিক রিপোর্ট অনুসারে, মারিওপল শহরের বৃহৎ ইস্পাত কারখানা স্টিল অ্যান্ড আয়রনে এসব সেনা অস্ত্র সমর্পণ করে। এই কারখানাকে ইউক্রেনের সেনারা এতদিন শক্ত ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করে আসছিল।এদিকে, আত্মসমর্পণের এই খবর অস্বীকার করেছে ইউক্রেন সরকার। প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির উপদেষ্টা অ্যালেক্সি অ্যারিস্টোভিচ দাবি করেন, ইউক্রেনের ছত্রিশতম মেরিন ব্রিগেড কঠিন এবং ঝুঁকিপূর্ণ লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।
মধ্যরাতের আদালত নিয়ে প্রশ্ন তুললেন ইমরান -ইত্তেফাক
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীত্ব হারানোর পর দেশজুড়ে ধারাবাহিক জনসভার কর্মসূচি শুরু করেছেন ইমরান খান। এর অংশ হিসেবে পেশোয়ার শহরে আয়োজিত বিশাল একটি জনসমাবেশে তিনি বলেন, আপনারা রাতের অন্ধকারে আদালত বসালেন। অথচ আমি কখনো কোনো প্রতিষ্ঠান বা আদালতের বিরুদ্ধে মানুষকে উস্কে দেইনি। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায় জি নিউজ।
সদ্য সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কী অপরাধ করেছি আমি যে আপনারা রাত ১২টায় আদালত বসালেন, আপনারা রাতের অন্ধকারে আদালত বসালেন। অথচ আমি কখনো কোনো প্রতিষ্ঠান বা আদালতের বিরুদ্ধে মানুষকে উস্কে দেইনি।’
পাকিস্তানের পার্লামেন্টে ইমরান খানের বিরুদ্ধে বিরোধীদের আনা অনাস্থা ভোট ডেপুটি স্পিকার নাকচ করে দেওয়ার পর দেশটির আদালত থেকে পার্লামেন্ট পুর্নবহাল করে অনাস্থা ভোট গ্রহণের নির্দেশ এসেছিল। গত শনিবার অনেক নাটকীয়তার পর অনাস্থা ভোটে হেরে প্রধানমন্ত্রীর পদ হারিয়েছিলেন বিশ্বকাপজয়ী সাবেক এই ক্রিকেটার।
জি নিউজ জানায়, শনিবার মধ্যরাতেই ইসলামাবাদ হাইকোর্ট খোলা হয়। সেখানকার প্রধান বিচারপতি আতহার মিনাল্লাহর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ডেকে পাঠান। তখন জানানো হয়েছিল যে, হাইকোর্ট একটি জরুরি পিটিশনের শুনানি করবে। এতে অভিযোগ করা হয়েছে যে, ইমরান খান রাজনৈতিক এবং ব্যক্তিগত উদ্দেশে ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন। সেইসঙ্গে সেনাপ্রধানকে পদচ্যুত করারও সুপারিশ করেছেন।
তবে শেষপর্যন্ত ইমরান খানের ওই আদেশ কার্যকর হয়নি। ফলে ওই পিটিশনেরও আর শুনানি হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে যে, এসব কারণেই মধ্যরাতে আদালত বসানোর বিষয়টি ইমরান খানের ভাষণে উঠে এসেছে।
লবিস্ট নিয়োগ করেও দুঃশাসনের কথা আড়াল করতে পারেনি সরকার: রিজভী-মানবজমিন
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সম্প্রতি বাংলাদেশের ২০২১ সালের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে একটি বিস্তারিত রিপোর্ট প্রকাশ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এ রিপোর্টে দেখা যায়, কোনো অপকর্মই সরকার আড়াল করতে পারেনি। হাজার হাজার ডলার খরচ করে লবিস্ট নিয়োগ করেও আওয়ামী সরকারের মরণঘাতি দুঃশাসনের বিভীষিকা আড়াল করা যায়নি।বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।রিজভী আহমেদ বলেন, প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয়েছে, 'বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সাজা দেয়া হয়েছে। আইন-আদালত সরকারের কব্জায়।
দেশের নিরাপত্তা বাহিনী গুম, খুন ও বিচার বহির্ভূত হত্যায় জড়িত। বিরোধী দল নিধনে নিরাপত্তা বাহিনীকে সরকার ব্যবহার করছে। বাক-স্বাধীনতা সংকুচিত করে ফেলা হয়েছে। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে-২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি, বাক্সভর্তি জালভোট, বিরোধী পোলিং এজেন্টদের ভয় দেখানোসহ নানা অনিয়ম ছিল ঐ নির্বাচনে।পর্যবেক্ষকরা ঐ নির্বাচনটিকে অবাধ ও সুষ্ঠু বলে স্বীকৃতি দেয়নি।তিনি বলেন, এই রিপোর্টের প্রতিয়মান হয় যে, বেগম জিয়া ক্ষমতাসীন সরকারের প্রতিহিংসার শিকার। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং তাকে উন্নত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করে রাখা হয়েছে। এর অর্থ, খালেদা জিয়া সম্পর্কে অবৈধ আওয়ামী সরকারের অপপ্রচার সম্পর্কে গণতান্ত্রিক বিশ্ব বিভ্রান্ত নয়। এই মুহূর্তে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, গতকাল প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশ্যে বলেছেন-মেগা প্রকল্প নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। বাস্তবতা হলো-বিভ্রান্তি নয়, অভিনব নজিরবিহীন দুর্নীতিতে সম্পৃক্ত মেগা প্রকল্প নিয়ে সত্য কথাই আজ দেশ-বিদেশে বলাবলি হচ্ছে। এই মেগা প্রকল্পের নামে লাখ লাখ কোটি টাকা যে লুটপাট হচ্ছে তা দক্ষিণ এশিয়ার দেশ শ্রীলংকার মতোই ধাপে ধাপে দেউলিয়ার পথে এগিয়ে যাচ্ছে।নরসিংদীতে ইফতার মাহফিলে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খানকে বাধা দেয়ার সমালোচনা করেন রিজভী।সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, সহ-দপ্তর সম্পাদক মুহাম্মদ মুনির হোসেন প্রমুখ।
নবতর পথযাত্রার সূচনা করতে চায় আওয়ামী লীগ : ওবায়দুল কাদের- দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন
দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ গণমানুষের দল হিসেবে নতুন বছরে নতুন আশা ও প্রত্যাশার নয়া উৎসর্গীকৃত চেতনায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নবতর পথযাত্রার সূচনা করতে চায়।’ আজ বৃহস্পতিবার সকালে নিজ বাসভবনে ব্রিফিংকালে এ কথা বলেন তিনি।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী। ধর্মের নামে কোনো ধরনের বাড়াবাড়ি কোনো ধর্মই অনুমোদন করে না। আসুন নিজ নিজ ধর্ম পালনের মাধ্যমে মহান মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে সমুন্নত রাখি।’
পয়লা বৈশাখে আওয়ামী লীগকে সুশৃঙ্খল, সুসংগঠিত, আরও আধুনিক ও স্মার্ট রাজনৈতিক দল হিসেবে এ দেশের গণমানুষের স্বপ্ন পূরণে ইতিবাচক অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার করেন ওবায়দুল কাদের।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে। অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে দলকে উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথরেখা, ইতিবাচক ধারাকে আরও বলিষ্ঠ ও বেগবান করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রেখে দেশের রাজনীতিতে অসাম্প্রদায়িক চেতনার সুবাতাস ছড়িয়ে দিতে আওয়ামী লীগ বদ্ধপরিকর।’
গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে দেশের সব গণতান্ত্রিক, দেশপ্রেমিক ও প্রগতিশীল শক্তিকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নানা বাধা অতিক্রম করে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে চলছে। তাই আসুন ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের অব্যাহত অগ্রযাত্রাকে আরও বেগবান করি।’
গণতন্ত্রের গ্যাস চেম্বার হয়ে উঠেছে বাংলা! স্পিকারের পাশে বসে আবার তোপ ধনখড়ের -আনন্দবাজার পত্রিকা
বৃহস্পতিবার অম্বেডকর জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে বিধানসভায় যান রাজ্যপাল। অম্বেডকরের মূর্তিতে মাল্যদান করেন তিনি। সেখানেই বুধবারের হাই কোর্টে অশান্তির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, ‘‘বুধবারের ঘটনা অনভিপ্রেত। বিচারের মন্দিরে মানুষের মাথা হেঁট করা উচিত।’’
বিআর অম্বেডকরের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাশে নিয়ে হাই কোর্টের অশান্তি-সহ রাজ্যের একাধিক ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে আবার সরব হলেন তিনি।বৃহস্পতিবার অম্বেডকর জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে বিধানসভায় যান রাজ্যপাল। অম্বেডকরের মূর্তিতে মাল্যদান করেন তিনি। সেখানেই বুধবারের হাই কোর্টে অশান্তির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, ‘‘বুধবারের ঘটনা অনভিপ্রেত। বিচারের মন্দিরে মানুষের মাথা হেঁট করা উচিত।’’
রাজ্যপাল যখন রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে একের পর এক তোপ দাগছেন, সেই সময় পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন বিধানসভার অধ্যক্ষ। হাওড়া বিল নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে ধনখড় প্রশ্নটি বিধানসভার স্পিকারকে উত্তর দিতে বলেন। স্পিকার বলেন,‘‘এটা সাংবাদিক বৈঠক নয়। আমি রাজ্যপালকে অনুরোধ করব, ভিন্ন একটি অনুষ্ঠানকে আপনি সাংবাদিক বৈঠক বানিয়ে ফেলবেন না।’’ কিন্তু রাজ্যপাল তাঁর কথায় পাত্তা না দিয়েই সংবাদিকদের প্রশ্ন করতে বলেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরও দিতে থাকেন। তিনি সাম্প্রতিক ঘটনা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘‘রাজ্যে মহিলাদের উপর অত্যাচারের ঘটনা বেড়েই চলেছে। মানুষ ভয় নিয়ে বেঁচে থাকে। গণতন্ত্রের গ্যাস চেম্বার হয়ে উঠেছে বাংলা।’’ তাঁর মতে,‘‘বিচারের সময় রং দেখা উচিত নয়। দোষীদের শাস্তি হওয়া উচিত।’’
রামপুরহাট-কাণ্ডের পর পীড়িত ব্যক্তির পরিবারকে চাকরির আশ্বাস দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই প্রসঙ্গ তুলে রাজ্যপাল বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘রামপুরহাটের ক্ষেত্রে মৃতদের পরিবারকে যদি চাকরি দেওয়া হয়, তবে ভোট পরবর্তী হিংসায় যাঁদের মৃত্যু হল, তাঁদের চাকরি দেওয়া হল না কেন?’’
রাজ্যপাল বেরিয়ে যাওয়ার পর স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “প্রত্যেকের নিজস্ব গণ্ডি রয়েছে। সেই গণ্ডি অনুযায়ীই কাজ করা উচিত। রাজ্যপাল অনেক কথা বললেন, যা পুরোপুরি সত্য নয়। আমরা সংবিধান মেনেই কাজ করি।”
প্রসঙ্গত, এই বিষয়গুলি নিয়ে আগেও উদ্বেগ প্রকাশ করেন রাজ্যপাল। কলকাতা হাই কোর্টে আইনজীবীদের মধ্যে গোলমাল এবং রাজ্যে নারী সুরক্ষা-সহ একাধিক বিষয়ে আলোচনা করতে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন ধনখড়।
তবে, রাজ্যপালের আইনশৃঙ্খলা-সহ নানা বিষয়ে টুইট নিয়ে বেশ ক্ষুব্ধ বিজেপি-ও। রাজ্য বিজেপি-র মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আর টুইট দেখতে চাইছেন না বাংলার মানুষ, চাইছেন কিছু করুন। বাংলার মানুষ রাজ্যপালের দিকে তাকিয়ে, তিনি সংবিধানের রক্ষাকর্তা। মানুষ আর মতামত শুনতে চাইছেন না, চাইছেন তিনি করুন।’’ এই বক্তব্য যে রাজ্য বিজেপি-র তা বোঝা গিয়েছে যখন দিলীপ ঘোষও রাজ্যপালের টুইট নিয়ে একই মন্তব্য করেন।
তবে এই ঘটনা নতুন নয় এর আগেও অন্য অনুষ্ঠানে এসে সংবাদমাধ্যমের সামনে একাধিক বার রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার বিরুদ্ধে মুখ খুলছেন তিনি।
ইউক্রেনের পাল্টা মারে নষ্ট হল রুশ যুদ্ধজাহাজ, কিয়েভের কমান্ড সেন্টার হামলার হুঁশিয়ারি মস্কোর -আজকাল
দেড় মাসেরও বেশি সময় কেটে গিয়েছে।
যুদ্ধ থামছে না। প্রাণহানিও থামছে। উল্টে একে অপরের দিকে আঙুল তুলে চলেছে রাশিয়া আর ইউক্রেন। একটাই বিষয়, এখন আর আগের মতো শুধু মার খাচ্ছে না ইউক্রেন। পাল্টা মারও দিচ্ছে। আর তাদের মারেই এবার ক্ষতিগ্রস্ত হল রাশিয়ার যুদ্ধ জাহাজ। বৃহস্পতিবার একথা জানাল সংবাদ মাধ্যম। এই জাহাজের বলেই ইউক্রেনে কৃষ্ণ সাগরের জলপথে হামলা করছিল রাশিয়া।তবে মস্কো ভাঙবে তবু মচকাবে না। এখনও গর্জন করে চলেছে। জানিয়েছে, রাশিয়ার ভূখণ্ড বা রুশ সেনার ওপর ইউক্রেন আক্রমণ চালালে তাদের কমান্ড সেন্টারেও হামলা চালাবে রাশিয়া। এমনকী কিয়েভের যে সেন্টারে বসে যুদ্ধের নির্দেশ জারি করা হচ্ছে, তাও উড়িয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিল। বিবৃতি দিয়ে সেকথা জানাল রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। পাশাপাশি রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রক নিশ্চিত করল যে মারিউপোল তারা দখল করেছে।
এর মধ্যেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেনের জন্য ৮০ কোটি ডলারের সহায়তা ঘোষণা করলেন। এই টাকায় ইউক্রেনকে হেলিকপ্টার এবং সমরযান কিনে দেওয়া হবে। আন্তর্জাতিক বিচারকারীরা জানিয়েছেন, রাশিয়া এর জন্য ভবিষ্যতে শাস্তি পাবে। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছে, তাদের যুদ্ধ জাহাজ মস্কভা আগুন লাগে। তার জেরেই বিস্ফোরণ হয়। ওডেসার গভর্নর জানিয়েছেন, ইউক্রেনিয় সেনা ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। তার জেরেই ধ্বংস হয়েছে রুশ জাহাজ। প্রসঙ্গত এই ওডেসা শহর দখলের জন্যই জলপথে হামলা চালাচ্ছে রাশিয়া। এদিকে রাষ্ট্রসঙ্ঘ জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইউক্রেন ছেড়েছে ৪০ হাজার মানুষ। এখন পর্যন্ত রাশিয়া ছেড়েছে ৪৬ লক্ষ মানুষ।
জি-৭ বৈঠকে ভারতকে আমন্ত্রণ করবে না জার্মানি! গুঞ্জন ওড়াল বার্লিন-সংবাদ প্রতিদিন
একটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছিল, ইউক্রেন যুদ্ধে (Russia-Ukraine War) ‘রাশিয়ার পাশে’ থাকার কারণে আসন্ন জি-৭ (G-7 Summit) বৈঠকে ভারতকে আমন্ত্রণ জানাবে না জার্মানি (Germany)। সম্প্রতি দানা বেঁধেছে এমনই গুঞ্জন। অবশেষে সেই গুজব উড়িয়ে দিল জার্মান সরকার। উল্লেখ্য, এবার জি-৭ শীর্ষ বৈঠকের আয়োজক দেশ জার্মানি।
মঙ্গলবার ‘ব্লুমবার্গ’-এর একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছিল, ভারত রাষ্ট্রসংঘে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোটে অনুপস্থিত থাকার কারণে জার্মানি জি-৭ শীর্ষবৈঠকে ভারতকে আমন্ত্রণ জানাবে না। তবে বুধবার অন্য আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলি দাবি করেছে, বার্লিন ব্লুমবার্গের ওই প্রতিবেদনকে ‘মিথ্যা’ বলে জানিয়েছে। রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার পরিষদ থেকে রাশিয়াকে বের করে দিতে ভোটাভুটিতে যে দেশগুলি অনুপস্থিত ছিল, ভারত তাদের মধ্যে অন্যতম। গত বৃহস্পতিবার আমেরিকার নেতৃত্বে রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রস্তাব আনা হয় রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে। সেই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয় ৯৩টি দেশ। আমেরিকার আনা প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দেয় ২৪টি দেশ। ভারত-সহ মোট ৫৮টি দেশ ভোটদানে বিরত থাকে।
রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালানো সত্ত্বেও ভারত তাদের কাছ থেকে যে অস্ত্র ও তেল কিনছে, সে বিষয়টিকে বেশ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে পশ্চিমী দেশগুলি। তবে, জার্মান সূত্রগুলি ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন অস্বীকার করেছে এবং প্রধানমন্ত্রী মোদিকে সম্মেলনে আমন্ত্রণ না জানানোর দাবিও ‘ভিত্তিহীন’ বলে জানিয়েছে। উল্লেখ্য, আগামী জুনে জার্মানির মিউনিখের বাভারিয়ায় জি-৭ বৈঠক হওয়ার কথা। জার্মানি চাইছে সেনেগাল, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইন্দোনেশিয়াকে বৈঠকের জন্য আমন্ত্রণ জানাতে।#
পার্সটুডে/বাবুল আখতার/১৪
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।