ঢাকা ও কোলকাতার পত্রপত্রিকার সব গুরুত্বপূর্ণ খবর
বাংলাদেশে মার্কিন ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতা! সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আমি বাবুল আখতার করছি ১০ মে মঙ্গলবারে কথাবার্তার আসর। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি। এরপর গুরুত্বপূর্ণ দুটি খবরের বিশ্লেষণে যাবো। বিশ্লেষণ করবেন সহকর্মী সিরাজুল ইসলাম।
বাংলাদেশের শিরোনাম:
- মাথাপিছু আয় বেড়ে ২৮২৫ ডলার, জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭.২৫% -প্রথম আলো
-
অর্থবছরের বাকি ৩ মাস-আদায় করতে হবে দৈনিক ১৪শ কোটি টাকা-যুগান্তর
- অবশেষে ট্রেনে কাজ শুরু করেছেন টিটিই শফিকুল-ইত্তেফাক
- বিদেশি দায়-দেনায় তিন বছর পর অস্বস্তিকর অবস্থানে যেতে পারে দেশ-মানবজমিন
- শ্রীলঙ্কায় অভিযানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী উদ্ধার, ব্যাপক সেনা মোতায়েন-কালের কণ্ঠ
- বাংলাদেশে মার্কিন ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর--এনটিভিবিডি অনলাইন
ভারতের শিরোনাম:
- ‘গরিবের দল’ হওয়ার চেষ্টায় কংগ্রেস! বিমান নয়, চিন্তন শিবিরে রাহুল-সহ নেতারা যাবেন ট্রেনে-সংবাদ প্রতিদিন
-
পাঞ্জাব পুলিশের গোয়েন্দা দপ্তরে গ্রেনেড হামলা, দোষীদের কড়া শাস্তির হুমকি মুখ্যমন্ত্রী মানের -আজকাল
- শ্রীলঙ্কায় সেনাশাসন জারি! প্রাণ বাঁচাতে সপরিবার নৌঁঘাটিতে পালালেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী-আনন্দবাজার পত্রিকা
শ্রোতাবন্ধুরা! শিরোনামের পর এবার দু'টি খবরের বিশ্লেষণে যাচ্ছি-
কথাবার্তার বিশ্লেষণের বিষয়:
কথাবার্তার প্রশ্ন (১০ মে)
১. কোন পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ, পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে ইসি। দৈনিক প্রথম আলোর শিরোনাম এটি। বাংলাদেশের প্রধান নির্বাচন কমিশনারের এই বক্তব্যকে কীভাবে দেখছেন?
২. ক্ষোভে ফুঁসছে শ্রীলঙ্কানরা, এমপিসহ নিহত ৭। দেশটির প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে পদত্যাগ করেছেন। পুরো ঘটনা কীভাবে বিশ্লেষণ করবেন?
মাথাপিছু আয় বেড়ে ২৮২৫ ডলার, জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭.২৫% -প্রথম আলো
দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় এখন ২ হাজার ৮২৫ মার্কিন ডলার। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের সাময়িক হিসাবে মাথাপিছু আয় এক বছরের ব্যবধানে ২৩৪ ডলার বেড়েছে।
গত অর্থবছর শেষে এ দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ছিল ২ হাজার ৫৯১ ডলার। সেটি বেড়ে এখন ২ হাজার ৮২৫ ডলার হয়েছে। আজ মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা শেষে এ তথ্য জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।পরিকল্পনামন্ত্রী এ-ও জানিয়েছেন, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির পাশাপাশি চলতি অর্থবছর শেষে মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি প্রবৃদ্ধি বেড়ে দাঁড়াবে ৭ দশমিক ২৫ শতাংশে। ২০২০-২১ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ।
শ্রীলঙ্কায় অভিযানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী উদ্ধার, ব্যাপক সেনা মোতায়েন-কালের কণ্ঠ
শ্রীলঙ্কায় নজিরবিহীন অর্থনৈতিক সংকট নিয়ে কয়েক সপ্তাহের বিক্ষোভের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সহিংসতায় পাঁচজন নিহত হয়েছে। কারফিউ বলবৎ রাখতে হাজার হাজার সেনা ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার সে দেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন মাহিন্দা রাজাপক্ষে। কিন্তু তাতেও জনগণের ক্ষোভ প্রশমিত হয়নি। সোমবার রাতে সরকারবিরোধী হাজার হাজার বিক্ষোভকারী কলম্বোতে মাহিন্দা রাজাপক্ষের সরকারি বাসভবনে হামলা চালিয়েছে। পুলিশ কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করেছে এবং বিক্ষুব্ধ জনতাকে পিছিয়ে রাখার জন্য সতর্কীকরণ গুলি চালিয়েছে। আজ মঙ্গলবার সেনাবাহিনী ভোরবেলা অভিযান চালিয়ে মাহিন্দাকে উদ্ধার করেছে।
বিক্ষোভকারীরা জোরপূর্বক রাজধানীর 'টেম্পল ট্রিস' বাসভবনে প্রবেশ করে। এরপর তারা প্রধান দ্বিতল ভবনে হামলার চেষ্টা করে। সেখানে মাহিন্দা রাজাপক্ষে তার পরিবারের লোকদের সঙ্গে আটকা পড়েছিলেন।
নিরাপত্তা বাহিনীর জ্যেষ্ঠ একজন কর্মকর্তা এএফপিকে বলেছেন, ভোরবেলা অভিযান চালিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং তার পরিবারকে নিরাপদে সরিয়ে নিয়েছে সেনাবাহিনী। তার ভবনে অন্তত ১০টি পেট্রলবোমা ফেলার ঘটনা ঘটেছে। মাহিন্দা রাজাপক্ষেকে বর্তমানে অজ্ঞাত স্থানে সরিয়ে রাখা হয়েছে।
অর্থবছরের বাকি ৩ মাস-আদায় করতে হবে দৈনিক ১৪শ কোটি টাকা-যুগান্তর
রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা থেকে এনবিআর (জাতীয় রাজস্ব বোর্ড) কিছুটা পিছিয়ে পড়েছে। চলতি অর্থবছরে ৯ মাসে যা আদায় করার কথা ছিল তা থেকে প্রায় ২৯ হাজার কোটি টাকা কম হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী অবশিষ্ট ৩ মাসে আদায় করতে হবে আরও ১ লাখ ২৫ হাজার ৯৯২ কোটি টাকা। এ হিসাবে দৈনিক কোষাগারে রাজস্ব জমা করতে হবে প্রায় ১৪শ কোটি টাকা। বিশেষজ্ঞদের মতে, বাস্তবতার নিরিখে এটি অর্জন করা খুবই কঠিন।
এদিকে সূত্র জানায়, লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে এমন সংশয় থাকলেও এবার সংশোধিত বাজেটে রাজস্ব আয়ে এর কোনো প্রভাব পড়েনি। অর্থাৎ মোট রাজস্ব আয় (এনবিআর, নন-এনবিআর ও করবহির্ভূত) থেকে কোনো অর্থ কাটছাঁট করা হয়নি। এক কথায় বলা যায়, সরকার ব্যয় কমালেও আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক রেখেছে। সরকার মনে করছে, বাকি ৩ মাসে আয়ের এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে। এজন্য এনবিআরের ওপর এক ধরনের মনস্তাত্ত্বিক চাপও আছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সর্বশেষ হিসাবে গত নয় মাসে (জুলাই-মার্চ) ২ লাখ ৪ হাজার ৮ কোটি টাকা আদায় হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাকি তিন মাসে রাজস্ব আহরণ করতে হবে ১ লাখ ২৫ হাজার ৯৯২ কোটি টাকা। ওই হিসাবে দৈনিক কোষাগারে রাজস্ব জমা করতে হবে প্রায় ১৪শ কোটি টাকা। সংশ্লিষ্টদের মতে, বিশাল অঙ্কের এ রাজস্ব আদায় কঠিন ও চ্যালেঞ্জ বটে। এরপরও সংশোধিত চলতি বাজেটে ১০ হাজার ১শ কোটি টাকা কাটছাঁট করলেও রাজস্ব খাতে হাত দেওয়া হয়নি। বিগত সময়ে আদায়ের গতি পর্যালোচনা করে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
বাংলাদেশে মার্কিন ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর--এনটিভিবিডি অনলাইন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশের একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হওয়ার আকাঙ্ক্ষা পূরণে বন্ধুপ্রতীম দেশ, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বর্ধিত বিনিয়োগ প্রয়োজন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশকে ২০২৬ সালের এলডিসিতে উত্তরণের সুপারিশ করা হয়েছে। আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী। সে উদ্দেশ্য পূরণে বন্ধুত্বপূর্ণ দেশগুলো থেকে, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বর্ধিত বিনিয়োগ প্রয়োজন।’ গণভবনে আজ মঙ্গলবার প্রথমবারের মতো ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের এক্সিকিউটিভ বিজনেস প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
এ সময় শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ এখন একটি আকর্ষণীয় গন্তব্য। ভৌত অবকাঠামোর পাশাপাশি সরকার বিনিয়োগ ও ব্যবসা সংক্রান্ত নিয়ম-নীতিগুলোকে আপগ্রেড ও শিথিল করেছে।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে সবচেয়ে উদার বিনিয়োগ নীতি রয়েছে এবং বিদেশি বিনিয়োগ সংসদের আইন ও দ্বিপক্ষীয় চুক্তি দ্বারা সুরক্ষিত হচ্ছে।’
প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, ‘সম্প্রতি বাংলাদেশের শতভাগ এলাকা বিদ্যুতের আওতায় আনা হয়েছে। এ ছাড়া আমরা কিছু মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমাদের সড়ক, রেলপথ ও নৌ-যোগাযোগের উন্নয়ন করছি।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘সরকার দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য সারা দেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করছে। আপনারা যদি চান তবে আমরা একচেটিয়াভাবে মার্কিন বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি অঞ্চল নির্ধারণ করতে পারি।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ নিশ্চিত করে যে, এখানে বিনিয়োগকারীরা প্রতিযোগিতামূলক মজুরিতে দক্ষ মানবসম্পদ পাবেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মার্কিন বাজারে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার এবং অন্যান্য বাণিজ্য সুবিধার মাধ্যমে আমাদের বাণিজ্য-সম্পর্ক আরও জোরদার করা যেতে পারে।’ এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘উপযুক্ত সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি-এফটিএ আলোচনা শুরু করতে বাংলাদেশ প্রস্তুত।’
শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন, ‘গত পাঁচ বছরে রপ্তানির পরিমাণ তিন বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি বেড়েছে। রপ্তানির পরিমাণ ২০১৬-১৭ সালে ৫ দশমিক ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ২০২১-২২ সালে ৭ দশমিক ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে।’
অবশেষে ট্রেনে কাজ শুরু করেছেন টিটিই শফিকুল-ইত্তেফাক
রেলমন্ত্রীর তিন আত্মীয়কে বিনা টিকিটে ট্রেন ভ্রমণের দায়ে জরিমানাসহ ভাড়া আদায়ের জন্য বরখাস্ত হওয়া ঈশ্বরদী স্টেশনের ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরীক্ষক (টিটিই) শফিকুল ইসলাম ট্রেনে ডিউটি পেয়েছেন। মঙ্গলবার (১০ মে) বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে খুলনা থেকে চিলাহাটিগামী আন্তঃনগর ট্রেন রূপসা এক্সপ্রেসের টিটিই হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেছেন।
গত রবিবার (৮ মে) বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের পর সোমবার ঈশ্বরদী টিটিই অফিসে যোগদান করেন। এর পরের দিন অর্থাৎ মঙ্গলবার তিনি ট্রেনে ডিউটি পেলেন। টিটিই শফিকুল বলেন, রেলমন্ত্রী স্যারের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। তিনি আমার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে নিয়ে কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছেন। আমি আন্তরিকতা ও সততার সঙ্গে অতীতের মতো আগামী দিনেও দায়িত্ব পালন করবো।
উল্লেখ্য, ঈশ্বরদী রেল জংশন থেকে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে (৫ মে) টিকেট ছাড়া ট্রেনে ওঠেন ‘রেলপথমন্ত্রীর আত্মীয়’ পরিচয়দানকারী ৩ যাত্রী। টিকেট না কাটলেও তারা রেলের এসি কেবিনের সিটে বসেন। রেলের ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরীক্ষককে (টিটিই) তাদের জরিমানাসহ ভাড়া আদায় করেন। পরে ‘রেলপথমন্ত্রীর আত্মীয়’ পরিচয়দানকারী ওই ৩ যাত্রী তাদের সাথে অসদাচরণ করা হয় বলে রেলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেন। এতে ঈশ্বরদীতে ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরীক্ষক (টিটিই) শফিকুল ইসলামকে বৃহস্পতিবার রাতেই সাময়িক বরখাস্ত করে রেল কর্তৃপক্ষ। সাময়িক বরখাস্তাদেশ শুক্রবার (৬ মে) থেকে কার্যকর হয়েছিল। অনিয়মতান্ত্রিকভাবে কারণ দর্শানোর নোটিশ ছাড়াই বরখাস্তের ঘটনা নিয়ে মিডিয়ায় তোলপাড় শুরু হয়। রেলমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে গত ৮ মে তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়।
বিদেশি দায়-দেনায় তিন বছর পর অস্বস্তিকর অবস্থানে যেতে পারে দেশ-মানবজমিন
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, আগামী তিন বছর পর অর্থাৎ ২০২৪-২৫ অর্থবছরের পরে বৈদেশিক দায়-দেনায় অস্বস্তিকর অবস্থানে চলে যেতে পারে বাংলাদেশ। বর্তমানে বাংলাদেশ সবুজ (স্বস্তিকর) অবস্থানে আছে। এটি ধীরে ধীরে হলুদ অবস্থানে (অস্বস্তিকর) যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিশ্বব্যাংক, জাপানসহ প্রথাগতভাবে যারা কম সুদে ঋণ দিতো, তারাও এখন তুলনামূলক বেশি সুদ নিচ্ছে। সুতরাং স্বস্তির জায়গাটা কমে আসছে। তিনি বলেন, এখন আমরা বিদেশি দ্বিপক্ষীয় উৎস থেকে বেশি মূল্যে বেশি ঋণ করছি। যেমন; চীন, রাশিয়া ও ভারত। এসব দেশের ঋণের রেয়াতি সময় (গ্রেস পিরিয়ড) শেষ হয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া দেশি ও বিদেশি ঋণের পরিমাণ অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। দেবপ্রিয় মনে করেন, বহুপক্ষীয় উৎসের বদলে দ্বিপক্ষীয় উৎস থেকে বেশ ঋণ নিচ্ছি
অথচ পাইপলাইনে ৫০ বিলিয়ন ডলারের মতো সাশ্রয়ী ঋণ ব্যবহার করতে পারছি না।
গতকাল সোমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে এক ভার্চ্যুয়াল আলাপচারিতায় এসব কথা বলেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। বাংলাদেশের সরকারি দায়-দেনা শীর্ষক এই আলাপচারিতায় তিনি বাংলাদেশ সরকারের সামগ্রিক ঋণ নিয়ে তার মত প্রকাশ করেন।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য মনে করেন, বিদেশি দায়-দেনার দেশি উৎসের দায়-দেনাও কোনো অংশে কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। তার মতে, অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে তুলনামূলক বেশি সুদে ঋণ নেয়ার প্রবণতা বেড়েছে। গত তিন বছরে অভ্যন্তরীণ ও বিদেশি-দুই উৎস থেকেই ঋণ নেয়া বেড়েছে। আবার গত দুটি জাতীয় নির্বাচনের আগের বছর, নির্বাচনের বছর ও পরের বছর ঋণ নেয়ার প্রবণতা বেড়েছে। দেশের দায়-দেনা পরিস্থিতি ব্যাখ্যায় নির্বাচনী চক্র সূচক হিসেবে উঠে আসছে।
বাংলাদেশে কি শ্রীলঙ্কার মতো সংকট হতে পারে-এমন প্রশ্নের উত্তরে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, আমি তা দেখি না। কোনো দেশের সঙ্গে অন্য দেশের তুলনীয় নয়। মূল বিষয় হলো- শ্রীলঙ্কা থেকে কী শিখলাম। এক সময় আমাদের দেশেও বন্ড ছাড়ার ধুয়া উঠেছিল। সরকার এই বিষয়ে রক্ষণশীল ছিল। অন্যদিকে শ্রীলঙ্কায় হাম্বানটোটা বন্দর নিয়ে ওই দেশের বিশেষজ্ঞরা এর বিরুদ্ধে কথা বলেছিলেন। তবু দেশটির সরকার তা করেছে।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য একটি হিসাব করে দেখিয়েছেন, সরকার যে ঋণের হিসাব দেয় সেখানে সবকিছু অন্তর্ভুক্ত করা হয় না। তার হিসাবে- ২০২০-২১ অর্থবছরের সার্বিকভাবে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) অনুপাতে সরকারি দায়-দেনা ৪৪.১০ শতাংশ। এ মুহূর্তে মাথাপিছু ঋণ হিসাব করলে তা ৪৩২ ডলারে দাঁড়িয়েছে। তিনি মনে করেন, সরকারি ঋণ পরিশোধসহ সার্বিক দায়-দেনায় পূর্ণাঙ্গ হিসাব করতে হলে বিদেশি ঋণের পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ ঋণ, ব্যক্তি খাতের ঋণ, সরকারের সংযুক্ত দায়-দেনাও বিবেচনায় আনা উচিত। এসব হিসাবে আনা হলে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) মূল্যায়ন থেকে পরিস্থিতি ভিন্ন হতে পারে।
শ্রীলঙ্কায় সেনাশাসন জারি! প্রাণ বাঁচাতে সপরিবার নৌঁঘাটিতে পালালেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী-আনন্দবাজার পত্রিকা
যত সময় গড়াচ্ছে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হচ্ছে শ্রীলঙ্কায়। আরও জোরদার হচ্ছে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ। সরকারপক্ষ এবং বিক্ষোভকারীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে সোমবার পাঁচ জনের মৃত্যু হয়। আহত হন দুশো জনেরও বেশি। প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষের ইস্তফা দেওয়ার পরই বিক্ষোভের আগুনে আরও জ্বলে ওঠে শ্রীলঙ্কা। গত কয়েক মাস ধরে অর্থনৈতিক সঙ্কটে ভুগছে শ্রীলঙ্কা। শ্রীলঙ্কায় জারি হল সেনা শাসন। সামগ্রিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে সেনা এবং পুলিশের হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়া হল। শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন ক্রিকেটার অর্জুন রণতুঙ্গে বলেন, “শান্তিপূর্ণ ভাবে প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন মানুষ। কিন্তু তাঁদের উপর যে ভাবে আক্রমণ করা হল তা অপ্রত্যাশিত। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছে। বিভোক্ষকারীদের শান্ত করার চেষ্টা করেনি। যদি ঠিক মতো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হত, তা হলে এই ঘটনা ঘটত না।” মঙ্গলবার সকাল থেকেই বিক্ষোভ আরও ছড়িয়ে পড়ে শ্রীলঙ্কা জুড়ে। সূত্রের খবর, বিক্ষোভকারীদের হাত থেকে বাঁচতে মঙ্গলবার সকালেই গোপনে সপরিবারে বাসভবন ছেড়ে ত্রিঙ্কামালিতে নৌসেনাঘাঁটিতে আশ্রয় নিয়েছেন পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে।
পাঞ্জাব পুলিশের গোয়েন্দা দপ্তরে গ্রেনেড হামলা, দোষীদের কড়া শাস্তির হুমকি মুখ্যমন্ত্রী মানের -আজকাল
পাঞ্জাব পুলিশের গোয়েন্দা দপ্তরে বিস্ফোরণ।
জঙ্গি হামলা কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে নিজের বাসভবনে জরুরি বৈঠক ডেকেছেন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান। রীতিমতো হুমকির সুরে তিনি বলেছেন, ‘পাঞ্জাবের পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা যে করবে, তাকে কড়া শাস্তি দেওয়া হবে।’ সোমবার সন্ধে ৭.৪৫ মিনিট নাগাদ মোহালির সেক্টর ৭৭, সাস নগরে পাঞ্জাব পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের বিল্ডিংয়ে একটি রকেট প্রপেলেড গ্রেনেড বা আরপিজি আছড়ে পড়ে। বিস্ফোরণের জেরে বাড়িটির জানলার কাঁচ ভেঙে খানখান হয়ে যায়। ওই ঘটনায় কেউ হতাহত না হলেও জঙ্গি হামলার আশঙ্কায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। হামলাকারীর সন্ধানে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে পাঞ্জাব পুলিশ। ফরেনসিক দল ঘটনাস্থলে রয়েছে। ঘটনার পরই পুলিশ গোটা এলাকাকে সিল করে দেয়। জারি হয় সতর্কবার্তা। এই ঘটনার নেপথ্যে সন্ত্রাসবাদীদের হাত রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এটা ঘটনা, বিস্ফোরণের আগে পাঞ্জাব পুলিশের কাছে দু’টি হুমকি চিঠি এসেছিল। পাক মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠন জৈশ–ই–মহম্মদের এক কমান্ডারের নাম সই করা ওই চিঠিতে রেল স্টেশন, থানা–সহ বিভিন্ন এলাকায় হামলার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। যদিও এই গ্রেনেড হামলাকে ‘ছোট বিস্ফোরণ’ বলে দাবি করেছে পাঞ্জাব পুলিশ।এদিকে আপ সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়াল বিস্ফোরণের ঘটনায় বলেছেন, ‘মোহালি বিস্ফোরণ একটি কাপুরুষোচিত কাজ। পাঞ্জাবের শান্তি নষ্ট করার প্রক্রিয়া চলছে। আম আদমি পার্টি তা হতে দেবে না। পাঞ্জাববাসীর সহযোগিতায় শান্তি বজায় রাখা হবে। দোষীদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে।’ ইতিমধ্যেই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
‘গরিবের দল’ হওয়ার চেষ্টায় কংগ্রেস! বিমান নয়, চিন্তন শিবিরে রাহুল-সহ নেতারা যাবেন ট্রেনে-সংবাদ প্রতিদিন
বড়লোকের মতো ঠাঁটবাট অতীত। এবার আম আদমির দল হতে চায় কংগ্রেস। ‘গরিবের দলে’র মতো ভাবমূর্তি গড়ে তোলার লক্ষ্যে এবার দলের চিন্তন শিবিরে যাওয়ার জন্য রেলপথকে বেছে নিলেন রাহুল গান্ধী-সহ শীর্ষ কংগ্রেস (Congress) নেতারা। সোমবার শোনা যাচ্ছিল দিল্লি থেকে ট্রেনে করে উদয়পুরের চিন্তন শিবির যাবেন রাহুল গান্ধী। কংগ্রেস সূত্রের খবর শুধু তিনিই নন, কর্মসমিতির সবাই যেতে পারেন ট্রেনে। নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয় অবশ্য সেক্ষেত্রে বড় বাধা।
আগামী ১৩ থেকে ১৫ জুন রাজস্থানের উদয়পুরে কংগ্রেসের ‘চিন্তন শিবির’ আয়োজিত হতে চলেছে। গোটা দেশ থেকে মোট ৪২২ জন নেতা উদয়পুরের ওই শিবিরে অংশ নেবেন। কংগ্রেস সূত্রের খবর, দল আর এই নেতাদের রাজস্থানে যাওয়ার খরচ জোগাতে নারাজ। সোমবার কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির (CWC) বৈঠকে নাকি নেতাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, উদয়পুরের চিন্তন শিবিরে উপস্থিত হওয়ার জন্য সবাইকে নিজের ব্যবস্থা নিজেকেই করে নিতে হবে। সেখানেই নাকি রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi) জানিয়েছেন, দিল্লি থেকে তিনি বিমানের বদলে ট্রেনে উদয়পুর যাবেন।#
পার্সটুডে/বাবুল আখতার/১০
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।