জুন ২৪, ২০২২ ১৬:৫৪ Asia/Dhaka

সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতা: রেডিও তেহরানের প্রাত্যহিক আয়োজন কথাবার্তার আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আজ ২৪ জুন শুক্রবারের কথাবার্তার আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি।

বাংলাদেশের শিরোনাম:

  • পদ্মা সেতু উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সফল করতে সবধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে: আইজিপি–ইত্তেফাক
  • বন্যা, নেই বিদ্যুৎ, এরই মাঝে ডাকাত আতঙ্কে নির্ঘুম রাত-মানবজমিন
  • রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়-গভীর রাতে গালিগালাজ ও মারধর করে আবাসিক ছাত্রকে বের করে দিল ছাত্রলীগ- প্রথম আলো
  • ‘পদ্মা সেতু হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ স্থাপনা’-যুগান্তর
  • পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানালেন শাহবাজ শরীফ-বাংলাদেশ প্রতিদিন
  • বন্যাকবলিত এলাকায় সরকারের ত্রাণ পৌঁছাচ্ছে না: ফখরুল-কালের কণ্ঠ

ভারতের শিরোনাম:

  • মন্ত্রীকন্যা অঙ্কিতার বেতনের টাকা দিতে হবে ববিতাকে, নিয়োগ চাই ১০ দিনের মধ্যে: হাই কোর্ট-আনন্দবাজার
  • পদ্মার দুই তীরে উৎসবমুখর পরিবেশ, বাড়বে দুই বাংলার যোগাযোগ-আজকাল

এবারে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিস্তারিত

পদ্মা সেতু উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সফল করতে সবধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে: আইজিপি-ইত্তেফাক

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভা সফল করতে সবধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, জনসভাস্থল শেষে সবাই নিরাপদে বাড়ি যেতে পারে সেই ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। এখানে এসএসএফ, ডিজিএফআই, এনএসআই, জেলা পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ, নৌপুলিশসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত রয়েছে।

নতুন শিক্ষাক্রমে ধর্ম শিক্ষার বিষয়ে এনসিটিবি’র ব্যাখ্যা-মানবজমিন

নতুন শিক্ষাক্রমে ধর্ম শিক্ষাকে বাদ দেয়া হয়েছে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত তথ্য সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট বলে জানিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। নতুন শিক্ষাক্রমে চারটি ধর্মের আলাদা চারটি পাঠ্যপুস্তক রাখা হয়েছে।গতকাল বৃহস্পতিবার এনসিটিবি চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. ফরহাদুল ইসলাম সাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এনসিটিবি বা সরকারের ধর্ম শিক্ষা বাদ দেয়ার কোনো সুযোগ বা পরিকল্পনা নেই। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের শিক্ষা নিয়ে বিভ্রান্তি জাতির জন্য কল্যাণকর নয়। আমরা শিক্ষাক্রম নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানাচ্ছি।

‘পদ্মা সেতু হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ স্থাপনা’-যুগান্তর

পদ্মা সেতু হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ স্থাপনা মন্তব্য করে নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহস ও সংকল্পের বাস্তবায়ন। দেশি-বিদেশি সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে তিনি পদ্মা সেতু করেছেন। আমাদের মর্যাদার জায়গায় তুলে এনেছেন। হিমালয়ের চূড়ায় বসিয়েছেন। শুক্রবার সকালে মাদারীপুরের শিবচরের বাংলাবাজার ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী ঘাটে প্রধানমন্ত্রীর জনসভাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।এদিকে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষ্যে বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

সেই অভিনন্দন বার্তায় পদ্মা সেতু নির্মাণকে দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক সংযুক্তি বিকাশে বাংলাদেশের নেতৃত্বের আরেকটি উদাহরণ হিসেবে অভিহিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

বন্যাকবলিত এলাকায় সরকারের ত্রাণ পৌঁছাচ্ছে না: ফখরুল-যুগান্তর

বন্যাকবলিত এলাকায় সরকারের ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ শুক্রবার সকালে খিলগাঁওয়ে ঢাকা সিটি করপোরেশনের ‘গুম’ হওয়া কাউন্সিলর চৌধুরী আলমের বাসায় তার পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের পর  সাংবাদিকদের কাছে বিএনপি মহাসচিব এই অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন যে, দেশে একটা ভয়াবহ বন্যা চলছে সিলেট, সুনামগঞ্জসহ উত্তরাঞ্চলে। আমি নিজে গতকাল সিলেটে গিয়েছিলাম।নিজের চোখে না দেখলে এর ভয়াবহতা সস্পর্কে কোনো ধারণা করা যায় না। মানুষ যে কষ্টে আছে এবং তাদের কাছে যে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া, তাদের বাঁচার ব্যবস্থা করে দেওয়া, তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে দেওয়া- তার কোনো ব্যবস্থা সরকার করে নাই। অথচ এই তথাকথিত অনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী হেলিকপ্টারে গিয়ে ওপর দিয়ে ঘুরলেন, ঘুরে তিনি সার্কিট হাউজের হেলিপ্যাডে নেমেছেন। সেখানে ১০ জন লোককে টোকেন ত্রাণ দিয়েছেন এবং তারপরে তিনি বলেছেন, সব হয়ে যাবে। গতকাল রাত পর্যন্ত আমি যা খবর পেয়েছি এগুলো কিছুই হয়নি।

মির্জা ফখরুল বলেন, সেনাবাহিনী নামার পরে তারা সিস্টেমেটিক্যালি কিছু ত্রাণ রিমোট অঞ্চলগুলো পৌঁছানোর চেষ্টা করছে। এছাড়া কিছু কাজ করছে বেসরকারি এনজিওগুলো।

ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ৪ মাস-ইত্তেফাক

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেন আক্রমণ করেছিল রাশিয়া। তীব্র লড়াই হচ্ছে ডনবাসে। এদিকে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্যপদ পাওয়ার বিষয়ে আরো এক ধাপ এগিয়েছে ইউক্রেন।বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) প্রায় সর্বসম্মতিক্রমে ইইউ সদস্যপদ পাওয়ার ক্ষেত্রে আরও এক ধাপ এগিয়েছে ইউক্রেন। এদিন, ইইউ সদস্য দেশগুলো ইউক্রেনকে সদস্যপদ দেওয়ার বিষয়টি সরকারিভাবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এরপর আরও কিছু ধাপ পার করলেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের স্থায়ী সদস্য হবে ইউক্রেন।ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ইইউ-র এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, এ এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। ইউক্রেন ইইউ-র কাছে কৃতজ্ঞ।২০১৩ সালের পর আবারও কোনো দেশকে সদস্য করার সিদ্ধান্ত নিল ২৭ দেশের ব্লক ইইউ। শেষ সদস্যপদ দেওয়া হয়েছিল ক্রোয়েশিয়াকে।শুক্রবার (২৪ জুন) ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন চতুর্থ মাসে পড়ল। পশ্চিম ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেও পূর্ব ইউক্রেনে ব্যাপক লড়াই চলছে। একদিকে, খারকিভে নতুন করে আক্রমণ শুরু করেছে রাশিয়া।

অন্যদিকে, লুহানস্কের দুই গুরুত্বপূর্ণ শহর সিভিয়েরোদনেৎস্ক, লিসিচ্যানস্কে লাগাতার আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া। সিভিয়েরোদনেৎস্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ রাশিয়ার দখলে চলে গেছে।ডনবাস অঞ্চলে তীব্র লড়াই চলছে। কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে পুরো এলাকা বলে জানিয়েছে- প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা।

এবার ভারতের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:

মন্ত্রীকন্যা অঙ্কিতার বেতনের টাকা দিতে হবে ববিতাকে, নিয়োগ চাই ১০ দিনের মধ্যে: হাই কোর্ট-আনন্দবাজার পত্রিকা

রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর কন্যা অঙ্কিতা বেআইনি ভাবে স্কুলে চাকরি পেয়েছেন, এই অভিযোগ করে যিনি সোচ্চার হয়েছিলেন, শিলিগুড়ির সেই এসএসসি পরীক্ষার্থী ববিতা সরকারকে ১০ দিনের মধ্যে চাকরি দেওয়ার নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। শুধু তা-ই নয়, মন্ত্রীকন্যার চাকরিতে যোগ দেওয়ার দিনকেই ববিতার চাকরি পাওয়ার দিন হিসাবে ধরে নিতে হবে। ফলে ওই দিন থেকে তাঁর প্রাপ্য সুযোগসুবিধা দিতে হবে। শুক্রবার এমনই নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।

উপস্থিত মোদি-শাহ, মনোনয়ন পত্র জমা দিলেন রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মু-আজকাল

শুক্রবার মনোনয়ন জমা দিলেন এনডিএ-র রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মু। দেশের রাজনীতিতে জোর জল্পনা ছিল, এই নির্বাচনে এনডিএ-র প্রার্থীপদ নিয়ে। জল্পনায় নাম উঠে এসেছিল অনেকের। তবে চমক দিয়ে প্রকাশ করা হয় ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন রাজ্যপালের নাম। মঙ্গলবার তাঁর নাম প্রকাশ করা হয়। এই লড়াই জিতে গেলে, দ্রৌপদী হবেন দেশের প্রথম জনজাতি সম্প্রদায়ভুক্ত মহিলা রাষ্ট্রপতি।রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের লড়াইয়ে দ্রৌপদী মুর্মুর বিপরীতে প্রার্থী হয়েছেন যশবন্ত সিনহা। বিরোধী শিবিরের তরফ থেকে সর্বসম্মত ভাবে তাঁর নামেই সিলমোহর দেওয়া হয়েছে।

পদ্মার দুই তীরে উৎসবমুখর পরিবেশ, বাড়বে দুই বাংলার যোগাযোগ-আজকাল

বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নে সবচেয়ে বড় মেগাপ্রকল্প পদ্মা সেতুর উদ্বোধন আগামিকাল।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার সকাল ১০টায় এই সেতুর উদ্বোধন করবেন, যার ফলে লাঘব হবে দক্ষিণাঞ্চলের ২১টি জেলার মানুষের আজন্ম কষ্ট। কমে যাবে ঢাকা-কলকাতা, আগরতলা-কলকাতার সড়কপথের দূরত্ব। বাড়বে দুই বাংলার মানুষের মেলবন্ধন। বাংলাদেশের অর্থনীতি গতি পাবে।

স্ত্রীকে খুন করে ৭০ টুকরো! হত্যার নেপথ্যে কি বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক-আনন্দবাজার পত্রিকা
দু’জনেই দিল্লির বাসিন্দা। সাত বছরের ভালবাসার সম্পর্ক। অবশেষে ১৯৯৯ সালে বিয়ে করে আমেরিকায় পাড়ি দেন রাজেশ ও তাঁর স্ত্রী অনুপমা গুলাটী।সাত বছর পর ফুটফুটে দুই যমজ সন্তানের জন্ম দেন অনুপমা। কিন্তু দেশে ফিরতেই গুলাটী দম্পতির জীবনে কী এমন ঘটল, যার জন্য এখনও দেহরাদূন শহর ভয়ে কাঁপে?পেশায় সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন রাজেশ। দু’সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে আমেরিকায় বহু বছর থাকার পর দেশে ফিরে আসেন তিনি।দেহরাদূন ক্যান্টনমেন্টের প্রকাশনগরে একটি ভাড়াবাড়িতে ওঠেন রাজেশ। কিন্তু দেশে ফিরে এসেই গুলাটী দম্পতির মধ্যে দূরত্ব বাড়তে থাকে।পারস্পরিক কলহ, মারপিট ছিল তাঁদের নিত্য দিনের ঘটনা। ঝগড়ার মূল কারণ, বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক এবং পরকীয়া।অনুপমার অভিযোগ, তাঁর স্বামী নাকি দেশে ফেরার পর কলকাতায় অন্য সংসার বেঁধেছেন। অন্য দিকে, আমেরিকার এক বাসিন্দার সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িত রয়েছেন অনুপমা, এমন সন্দেহ ছিল তাঁর স্বামীর। এই নিয়ে প্রায় রোজই পারিবারিক অশান্তি লেগে থাকে।২০১০ সালের ১৭ অক্টোবরের রাতে ঘটে যায় এক ভয়ানক ঘটনা যা, আজও ভারতের ঘৃণ্যতম অপরাধের মধ্যে একটি। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করতে গিয়ে স্থানীয় পুলিশ আধিকারিকদেরও গা শিউরে ওঠে।সেই রাতে দু’জনের অশান্তি মাত্রা ছাড়ালে রাজেশ রাগের মাথায় তাঁর স্ত্রীর গায়ে হাত তোলেন। ধাক্কা সামলাতে না পেরে অনুপমা ঘরের ভিতর পড়ে যান এবং খাটের কোনায় তাঁর মাথায় আঘাত লাগে। মুহূর্তের মধ্যে জ্ঞান হারান তিনি।রাজেশ ভাবেন, তাঁর স্ত্রী বোধ হয় মারা গিয়েছেন। কিন্তু পরীক্ষা করে দেখেন, অনুপমা অজ্ঞান হয়েছেন মাত্র। অনুপমাকে এই অবস্থায় দেখে এক ভয়ানক চিন্তা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে রাজেশের।রোজকার এই অশান্তি থেকে মুক্তি পেতে রাজেশ সিদ্ধান্ত নেন, তাঁর স্ত্রীকে প্রাণেই মেরে ফেলবেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে ঘরের ভিতর থেকে তুলো জোগাড় করে আনেন তিনি।অনুপমার মুখ ও নাকের ভিতর তুলো গুঁজে দেন যাতে শ্বাস নিতে অসুবিধা হয় তাঁর। এই অবস্থায় বেশ কিছু ক্ষণ থাকার পর দম আটকে মারা যান অনুপমা। কিন্তু এ রকম শুনশান জায়গায় তাঁর স্ত্রীর মৃতদেহ লুকোবেনই বা কোথায়?পাহাড়ের ধারে কোনও খাদে ফেলে দিলেও পুলিশের হাতে তিনি ধরা পড়বেনই। তাই দু’দিন ধরে নিজের ঘরের বাথরুমেই ফেলে রাখলেন অনুপমার মৃতদেহ।এর পর আরও ৫৭ দিন কেটে যায়। অনুপমার বাচ্চারা মায়ের খোঁজ করলে রাজেশ জানান, অনুপমা দিল্লিতে দাদু-দিদার বাড়ি বেড়াতে গিয়েছেন। এমনকি, অনুপমার বাড়ি থেকে যত বার মেয়ের খোঁজ নিতেন, প্রতি বার রাজেশ কোনও না কোনও অজুহাত দেখিয়ে এড়িয়ে যেতেন।পরে অবশ্য জানান, দু’জনের মধ্যে সামান্য কারণে কথা কাটাকাটি হওয়ায় অনুপমা বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছেন। ‘‘চিন্তার কোনও কারণ নেই। আপনাদের মেয়ে খুব তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে আসবে’’, এমনও বলেছিলেন রাজেশ।এই বিষয়ে সন্দেহ জাগায় অনুপমার ভাই সুজনকুমার প্রধান দিল্লি থেকে দেহরাদূনে আসেন। দিদির খোঁজ করতে ঘরের ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করলে ঘরে ঢুকতে বাধা দেন রাজেশ।সুজন তখনই স্থানীয় থানায় রাজেশের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। তদন্ত করতে এসে পুলিশ ঘরের ভিতরে দেখে, একটি মস্ত বড় ডিপ ফ্রিজার রাখা। সাধারণত, এই ফ্রিজারগুলি দোকানে দেখা যায়। বাড়িতে এটি রাখার কারণ কী?সন্দেহ হওয়ায় ফ্রিজারটি খুলে দেখে পুলিশ। খোলার পরেই তার ভিতর থেকে বেরোতে থাকে একের পর এক কালো রঙের পলিব্যাগে মোড়ানো মাংসের টুকরো। তবে এ কোনও পশুর মাংস নয়, ব্যাগের ভিতর থেকে বেরিয়ে আসছে মানুষের কাটা হাত-পা এবং দেহের অংশবিশেষ।পুলিশের বুঝতে অসুবিধা হয় না, এই মৃতদেহটি কার! রাজেশকে জিজ্ঞাসাবাদ করায় তিনি নিজেই দোষ স্বীকার করেন। রাজেশ জানান, তিনি স্থানীয় দোকান থেকে কিনে এনেছিলেন পাথর কাটার গ্রাইন্ডার মেশিন, ডিপ ফ্রিজার এবং এক গাদা কালো পলিব্যাগ।নিজের হাতেই স্ত্রীর মৃতদেহ টুকরো টুকরো করে কেটে ফেলেন। মোট ৭০টি টুকরো করার পর পলিব্যাগের ভিতর মুড়িয়ে ফেলেন তিনি। দু’মাস ধরে এক একটি পলিব্যাগ শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ফেলে চলেছেন রাজেশ।মৃতদেহের টুকরোগুলি এ ভাবে সারা শহর জুড়ে ছড়ানোর ফলে তাঁর ধরা পড়ার সম্ভাবনা খুবই কম, তাই নিজেকে বাঁচাতে এই পরিকল্পনা করেন রাজেশ।তিনি আরও জানান, তাঁকে ঠকিয়ে আরও একটি বিয়ে করেছিলেন বলে রাজেশের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন অনুপমা। মাস প্রতি ২০ হাজার টাকা দিতে হবে বলে দাবিও করেছিলেন তিনি।২০ হাজার টাকায় আর দিন চলছে না বলে রাজেশের কাছে আরও টাকা চাইতে শুরু করেন তিনি। দিনের পর দিন এই অশান্তি মেনে নিতে পারছিলেন না বলে অনুপমাকে খুন করার সিদ্ধান্ত নেন রাজেশ।পরে অবশ্য ভারতীয় আইনবিধির ৩০২ নং ধারা এবং ২০১ নং ধারার আওতায় রাজেশকে দেহরাদূন কোর্ট থেকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়। এমনকি, ১৫ লক্ষ টাকা জরিমানাও করা হয়।#

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/২৪

ট্যাগ