জুলাই ১১, ২০২৩ ১৮:৩২ Asia/Dhaka

সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতা: রেডিও তেহরানের প্রাত্যহিক আয়োজন কথাবার্তার আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। ১১ জুলাই মঙ্গলবারের কথাবার্তার আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি।

বাংলাদেশের শিরোনাম:

  • মতামত বোঝা গেল ডিজিটাল নিরাপত্তাব্যবস্থা কতটা খারাপ-প্রথম আলো
  • রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী নিরাপত্তার জন্য হুমকি, মানবিক সংকট তৈরি করছে তারা: প্রধানমন্ত্রী-ইত্তেফাক
  • ১৪ হাজার ছাড়াল ডেঙ্গু রোগী: রেকর্ড ভর্তি-যুগান্তর
  • পার্সপোর্ট পেতে যাচ্ছে ৬৯ হাজার 'রোহিঙ্গা'-যুগান্তর
  • ইইউ প্রতিনিধিদলের সামনে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের বিক্ষোভ-কালের কণ্ঠবাংলাদেশ বিষয়ে ভারত থেকে আলাদা যুক্তরাষ্ট্র,
  • নিতে চায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত-মানবজমিন
  • ‘আমরা কেউই সুরক্ষিত নই যতক্ষণ পর্যন্ত না সকলের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারছি’–দ্যা ডেইলি স্টার বাংলা

কোলকাতার শিরোনাম:

  • গ্রাম পঞ্চায়েত আসনে অনেক এগিয়ে তৃণমূল -আনন্দবাজার পত্রিকা
  • ‘স্পর্শকাতর বুথে বাহিনী মোতায়েনে নির্দিষ্ট পরিকল্পনাই ছিল না’, কেন্দ্রকে তোপ রাজীব সিনহার -সংবাদ প্রতিদিন
  • জনমতের প্রতিফলন নেই নির্বাচনের ফলাফলে, কুর্নিশ মানুষের লড়াইকে: সেলিম-গণশক্তি

এবারে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিস্তারিত

মতামত বোঝা গেল ডিজিটাল নিরাপত্তাব্যবস্থা কতটা খারাপ-প্রথম আলোতে পরিবেশিত এ কলামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়  তথ্যপ্রযুক্তি ইনস্টিটিউটটের অধ্যাপক ● ড. বি এম মইনুল হোসেন লিখেছেন, সম্প্রতি তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক অনলাইন সংবাদমাধ্যম টেকক্রাঞ্চ বাংলাদেশের কয়েক লাখ মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁসের ঘটনার কথা জানিয়েছে। ভিক্টর মারকোপোলোস নামক একজন নিরাপত্তা-গবেষক বাংলাদেশের সরকারি এক ওয়েবসাইট থেকে এই তথ্য ফাঁসের ব্যাপারটি উদ্‌ঘাটন করেন। তিনি খুব সহজ একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ডেটাগুলো পেয়েছেন এবং ঘটনার পর সংশ্লিষ্ট একটি সরকারি সংস্থাকে জানিয়েছেন।

আন্তর্জাতিক মাধ্যমে এই সংবাদ প্রকাশের পর কম করে হলেও দুটি বিষয় ঘটেছে। একটি ভালো, আরেকটি মন্দ। ভালোটা আগে বলি। বিদেশি সংস্থা এবং গবেষকের কাছ থেকে আসায় বরাবরের মতোই দেশের সব মহলে সংবাদটি ব্যাপক গুরুত্ব পেয়েছে। 

অনেকে বিড়বিড় করে হলেও বলতে শুরু করেছেন, আমাদের ডিজিটাল নিরাপত্তাব্যবস্থার অবস্থা তাহলে আসলেই খারাপ। নিজের ভালো-মন্দ অনুধাবন করতে গিয়েও এই বিদেশনির্ভরতা তথা বিদেশ থেকে এল বলে গুরুত্ব পাওয়ার ব্যাপারটাকে কিছুটা বিজ্ঞাপনের সেই ‘দাগ থেকে যদি ভালো কিছু হয়, তাহলে দাগই ভালো’র মতো করে ভাবা যেতে পারে। 

ক্রেডিট কার্ড ডেটা চুরি হয়ে গেলে আগের ক্রেডিট কার্ড ফেলে দিতে পারবেন, নতুন ক্রেডিট কার্ড নিতে পারবেন। কিন্তু জাতীয় পরিচয়পত্রের মতো ব্যক্তিগত তথ্য চুরি হলে না পারবেন নিজের জন্মদিন পরিবর্তন করতে, না পারবেন ‘বাপের নাম’ ফেলে দিয়ে নতুন ‘বাপের নাম’ যুক্ত করতে। ডিজিটাল দেশ তৈরি করা কঠিন, ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আরও কঠিন। 

ওদিকে, মন্দ দিকটা হলো বাংলাদেশের আরও আক্রমণের লক্ষ্যে পরিণত হওয়ার ঝুঁকি। এমনিতেই সাইবার নিরাপত্তাসংক্রান্ত আলোচনায় এখন দৃষ্টান্ত হিসেবে সর্বত্র বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে টাকা চুরি যাওয়ার প্রসঙ্গ চলে আসে। এখন বাংলাদেশের ডিজিটাল নিরাপত্তাব্যবস্থার ত্রুটির বিষয়টি প্রকাশ হয়ে পড়ায় এবং সরকারি ওয়েবসাইটে নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্রের মতো ব্যক্তিগত, সংবেদনশীল তথ্যের সহজলভ্যতার বিষয়টি জেনে যাওয়ায় আমাদের গুরুত্বপূর্ণ ডিজিটাল সিস্টেমগুলোর প্রতি আন্তর্জাতিক হ্যাকার গোষ্ঠীর স্বাভাবিকভাবেই নজর পড়তে পারে। ফলে বাংলাদেশ সামনে আরও সাইবার আক্রমণের ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে। 

এই ঘটনার পর বিভিন্ন মাধ্যমে অনেকেই অবশ্য প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন, আমাদের তথ্য কতই আর গুরুত্বপূর্ণ? সেটি চুরি হলেই-বা কী হবে? তথ্য কত গুরুত্বপূর্ণ, তা বোঝার জন্য কয়েকটি উদাহরণ দেওয়া যাক। ধরা যাক, কারও জাতীয় পরিচয়পত্রের সব তথ্য দুষ্কৃতকারীদের হাতে চলে গেল। সেই ডেটা ব্যবহার করে জাতীয় পরিচয়পত্রের আদলে যে কেউ একজন নকল পরিচয়পত্র বানিয়ে নিল। এখন চাইলেই কারও ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা জমার দেওয়ার সময় নিজের পরিচয়পত্রের কপি না দিয়ে নকল বানানো পরিচয়পত্র ব্যবহার করতে পারবে। পরে লেনদেন-সংক্রান্ত যেকোনো ধরনের ঝামেলা হলে দায়ভার গিয়ে পড়তে পারে যার পরিচয়পত্রের ডেটা ব্যবহার করে নকল পরিচয়পত্র বানানো হয়েছে, সেই নিরপরাধ মানুষটির ওপর। 

তার ওপর, বর্তমানে জাতীয় পরিচয়পত্র মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে স্ক্যান করেই অনেক সেবা-পরিষেবা পাওয়া সম্ভব হচ্ছে। এতে করে নকল পরিচয়পত্র দিয়েই যে কেউ এ ধরনের অ্যাপে সংযুক্ত হয়ে যেতে পারে এবং পরে সে অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে কোনো অপরাধ সংঘটিত হলে, সেটির দায়ভারও গিয়ে পড়তে পারে ডেটা চুরি যাওয়া সেই মানুষটির ওপর। 

এ ছাড়া মোবাইল সিম রেজিস্ট্রেশন থেকে শুরু করে অন্যান্য বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সেবা-পরিষেবায়ও ব্যবহৃত হয় জাতীয় পরিচয়পত্র। এসব ক্ষেত্রেও, বিশেষ করে বায়োমেট্রিক পদ্ধতির ব্যবহার না থাকলে, চুরি যাওয়া ডেটা দিয়ে বানানো নকল পরিচয়পত্র অপব্যবহারের সুযোগ থেকেই যায়। ব্যাংকের গ্রাহকসেবা প্রতিনিধির কাছ থেকে আমরা মুখস্থ বাক্যের মতো শুনি, ‘নিরাপত্তার জন্য দয়া করে আপনার মায়ের নাম ও জন্মতারিখটি বলুন’। পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার স্বার্থে এটি করা হয়। অথচ এই দুটি তথ্যই জাতীয় পরিচয়পত্র ডেটায় আছে। অতএব, ‘আমার ডেটা চুরি করে কী এমন আর হবে’ ধরনের প্রশ্নগুলো যতটা সাদামাটা, উত্তরগুলো কিন্তু ততটা সাদামাটা নয়। 

বিশ্বের কোনো ডিজিটাল সিস্টেম দাবি করতে পারে না যে তারা শতভাগ নিরাপদ। তথ্য চুরি যাবে না, এই মর্মে কেউই নিশ্চয়তা দিতে পারবে না। সব সতর্কতা অবলম্বনের পরেও ডেটা চুরি যাওয়া সম্ভব। কিন্তু তাই বলে ন্যূনতম যে সতর্কতা অবলম্বন প্রয়োজন, সেটি এড়িয়ে গেলে তো হবে না। রাতের বেলা দরজা খুলে ঘুমিয়ে থেকে, সকালবেলা উঠে ‘চোর সব নিয়ে গেল’ বলে হা-হুতাশ করার তো মানে নেই। 

সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত স্ট্যান্ডার্ড আছে। সেগুলো মেনে চলার পরও যদি এমন ঘটনা ঘটে, সেটি একটি অনিচ্ছাকৃত দুর্ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। কিন্তু সেসব না মেনে, যেখানে-সেখানে নাগরিকদের ব্যক্তিগত ডেটা ব্যবহার করার সংস্কৃতি শুধু অনিরাপদই নয়, অনুচিতও বটে। 

তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী ইতিমধ্যে জানিয়েছেন, তথ্য ফাঁস হয়েছে ওয়েবসাইটের দুর্বলতায় এবং সে দায় এড়ানোর সুযোগ নেই। যেকোনো সমস্যা সমাধানের প্রথম ধাপ হলো সমস্যাটিকে স্বীকার করে নেওয়া। সমস্যা যেহেতু চিহ্নিত করা গেছে, এখন সমাধানের উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়াটাই হবে পরবর্তী করণীয়। তবে এ ক্ষেত্রে যদি বলা হয় সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে উপযুক্ত নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, কিন্তু তারা সেগুলো মেনে চলেনি, তাহলে সমস্যার সমাধান হবে না। 

নাগরিকদের ব্যক্তিগত ডেটা নিয়ে কাজ করা যেকোনো সংস্থা কর্তৃক পরিচালিত ওয়েবসাইট, সফটওয়্যার বা সার্ভিস চালু হওয়ার আগেই সব ধরনের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি না, বাধ্যতামূলকভাবে সেটি যাচাই করে, তারপর চালু করার অনুমতি দিতে হবে। 

ক্রেডিট কার্ড ডেটা চুরি হয়ে গেলে আগের ক্রেডিট কার্ড ফেলে দিতে পারবেন, নতুন ক্রেডিট কার্ড নিতে পারবেন। কিন্তু জাতীয় পরিচয়পত্রের মতো ব্যক্তিগত তথ্য চুরি হলে না পারবেন নিজের জন্মদিন পরিবর্তন করতে, না পারবেন ‘বাপের নাম’ ফেলে দিয়ে নতুন ‘বাপের নাম’ যুক্ত করতে। ডিজিটাল দেশ তৈরি করা কঠিন, ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আরও কঠিন। 

রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী নিরাপত্তার জন্য হুমকি, মানবিক সংকট তৈরি করছে তারা: প্রধানমন্ত্রী-ইত্তেফাক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, করোনা মহামারির সময়ও আমরা এ দেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে ভুলে যাইনি। তাদের নিয়মিত টিকা, পরীক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হয়েছে। এ কথা ভুলে গেলে চলবে না, এ দেশে আশ্রিত বিশাল জনগোষ্ঠীটি আমাদের অঞ্চলের জন্য মানবিক সংকট তৈরি করছে এবং নিরাপত্তার জন্যও হুমকি। কেবল সসম্মানে মিয়ানমারে প্রত্যাবর্তনই এই সংকটের টেকসই সমাধান। আমি আশা করি মিয়ানমার তাদের নাগরিকদের দ্রুত ফিরিয়ে নিয়ে যাবে।

এলসি খোলার মাধ্যমে বাংলাদেশ-ভারত রুপিতে বাণিজ্য শুরু-ইত্তেফাক

ভারতের সঙ্গে রুপিতে বাণিজ্যের যুগে প্রবেশ করলো বাংলাদেশ।  রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলে এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ও ভারতের কর্মকর্তারা রুপিতে বাণিজ্য শুরুর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছেন। ডলারের ওপর নির্ভরতা কমাতে প্রতিবেশী দুই দেশ এই উদ্যোগ নিলো। মঙ্গলবার (১১ জুলাই) এই লেনদেনের অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের তামিম অ্যাগ্রো ও ব্যবসায়ী শাহজাহান মিয়াকে এলসি দেওয়া হয়। পরে সোনালী ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক এবং ভারতের স্টেট ব্যাংক ও আইসিআইসি ব্যাংক আমদানি ও রফতানিকারকদের হাতে এই এলসি তুলে দেন।

ইচ্ছা করে দেশকে সংঘাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে সরকার: ফখরুল-যুগান্তর

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার বলছে আমরা বিরোধী দলকে কোনো বাধা দেই না। এটা সম্পূর্ণ ভাওতাবাজি। তারা ইচ্ছাকৃতভাবে গোটা দেশকে সংঘাতের দিকে ঠেলে দিতে চাচ্ছে। সোমবার রাতে মগবাজারে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনার কথা উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এটা অত্যন্ত সুপরিকল্পিত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তমূলক। যারা গণতন্ত্রকে ধ্বংস ধ্বংস করেছে, বিরোধী দলকে যারা দোষারোপ করতে চায় তারা বিভিন্ন এজেন্সি দিয়ে এসব করাচ্ছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, গণতন্ত্রের জন্য পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লড়াই করা হয়েছে। সেই গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে আওয়ামী লীগ। তারা একের পর এক আইন করছে।

মসজিদে কাঁঠাল নিলাম নিয়ে সংঘর্ষ, নিহত বেড়ে ৪-যুগান্তরসহ বেশ কয়েকটি দৈনিকের এ খবরে লেখা হয়েছে, সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার জয়কলস ইউনিয়নের হাসনাবাদ গ্রামের মসজিদে কাঁঠাল নিলামকে কেন্দ্র দুপক্ষের সংঘর্ষে মুখলেছুর রহমান নামে আরও একজন মারা গেছেন। এ নিয়ে এ ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে হলো চারজন।

প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার জুমার নামাজের পর মসজিদের একটি কাঁঠাল নিলামে তোলা হয়। নিলামে অন্যদের সঙ্গে অংশগ্রহণ করেন এই গ্রামের মালদর পক্ষের শেখ মিয়া, খচরু মিয়া ও মইনুর ইসলাম। এদের মধ্য খচরু মিয়া কাঁঠালটি কিনে নেন। কাঁঠাল নিলামের পর দ্বীন ইসলাম পক্ষের আবদুল বাহার বলেন কাঁঠালটি আরও বেশি দামে বিক্রি হতে পারত। তাছাড়া সেই নিলামের ডাকের কথা শোনা যায়নি বলেও অভিযোগ করেন একপক্ষ।

এ নিয়ে ক্রেতা খচরু ও বাহারের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এর জেরে গত দুদিন ধরে গ্রামে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা মিলে তাদের ঝগড়া থেকে বিরত থাকতে একাধিকবার বুঝিয়েছেন।

ঘটনার আগের দিন রাতে ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল বাসিত সুজন হাসনাবাদ গ্রামে এসে দুইপক্ষকে বিচার সালিশ মানিয়ে যান। ঘটনার দিন সকালেও তিনি এসেছিলেন এবং উভয়পক্ষকে বুঝিয়েছেন। পুলিশও উভয়পক্ষের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের বারবার সাবধান করে দিয়েছিল। বিচার সালিশ মেনে নেওয়ার পরও সোমবার সকাল ১০টায় তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

শান্তিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খালেদ চৌধুরী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত চারজন মারা গেছেন। ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ প্রশাসনের শীর্ষ স্থানীয় কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ঘটনায় উভয়পক্ষের ছয়জনকে আটক করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে এই মুহূর্তে তাদের নাম প্রকাশ করছি না। থানায় এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ অভিযোগ দায়ের করেনি। তবে সংঘর্ষে জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

বাংলাদেশ বিষয়ে ভারত থেকে আলাদা যুক্তরাষ্ট্র, নিতে চায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত-মানবজমিন

ঢাকায় বন্ধুত্বপূর্ণ সরকার ভারতের ডিপ্লোম্যাটিক এবং সিকিউরিটি এস্টাবলিশমেন্টের জন্য শীর্ষ অগ্রাধিকার। সকল প্রতিবেশী গুরুত্বপূর্ণ হলেও বাংলাদেশে নয়াদিল্লির দাপট সবচেয়ে বেশি। কিন্তু নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন পরিস্থিতি বাংলাদেশে ভারতের জায়গা নষ্ট করছে এবং নয়াদিল্লিকে দু:শ্চিন্তাগ্রস্ত হতে বাধ্য করছে।

এক্ষেত্রে দুটি বিষয় রয়েছে। সুনির্দিষ্টভাবে বললে, ডিসেম্বর এবং জানুয়ারির মধ্যে আসন্ন সংসদ নির্বাচনে ভারতপন্থী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের পুনঃনির্বাচনের সম্ভাবনা নিয়ে একটি প্রশ্নচিহ্ন ঝুলছে। প্রথমত, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে ক্ষুণ্নকারী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়েছে। এই মার্কিন আল্টিমেটাম স্পষ্টতই স্বৈরাচারী ও দমনমূলক হাসিনা শাসনের লাগাম টেনে ধরতে এবং বিরোধী দল- বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের মনোবল বাড়াতে দেওয়া হয়েছে, যে দলটি ভারতের গুডবুকে নেই। দ্বিতীয়ত, পাকিস্তানপন্থী জামায়াত-ই-ইসলামী ১০বছর পর প্রথম সমাবেশ করেছে যা নির্বাচনী দৌড়ে নয়াদিল্লির জন্য অপ্রত্যাশিত নতুন জটিলতা তৈরি করেছে।

শেখ হাসিনা কেন ভারতের পছন্দ সেই কারণ স্পষ্ট: নিঃসন্দেহে ২০০৯ সাল থেকে নয়াদিল্লি যা কিছু চায় তা তিনি সরবরাহ করে চলেছেন। সেটা ট্রানজিট সুবিধাই হোক, উত্তর-পূর্ব বিদ্রোহীদের তাড়ানোই হোক কিংবা নূপুর শর্মা কর্তৃক নবী মুহাম্মদ এবং অমিত শাহ কর্তৃক মুসলিম বাংলাদেশিদের অপমানের প্রতিক্রিয়ায় 'স্ট্রেইট ডিপ্লোম্যাটিক ফেইস' বহাল রাখাই হোক। এমনকি নতুন ভারতের প্রতি আনুগত্যের লিটমাস টেস্ট হিসেবে গৌতম আদানির কাছ থেকে তিনি তাপবিদ্যুৎও কিনছেন! নয়াদিল্লি তাই হাসিনার চতুর্থবারের প্রধানমন্ত্রীত্বের মেয়াদ নিশ্চিত করে তাকে পুরস্কৃত করতে চায়, যা নিঃসন্দেহে ভারতের জাতীয় স্বার্থে কাজ করবে এবং অবশ্যই হাসিনার উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে পূরণ করবে। কিন্তু এর অর্থ হবে গণতান্ত্রিক পশ্চাদপসরণকে উপেক্ষা করা যা বাংলাদেশকে এক-দলের, এক-নেতার রাষ্ট্রে পরিণত করেছে।

অন্যদিকে, ওয়াশিংটন বাংলাদেশের বিক্ষুব্ধ বিরোধীদের আবেদনকে এখন আর উপেক্ষা করছে না।

যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি এবং জামায়াতের উদ্ধারকারী সংকেতের জবাব দিয়েছে এবং উদ্দেশ্যমূলকভাবে বাংলাদেশে নিজেকে জড়িয়েছে, যার অনেকটাই ভারতের স্বার্থের বিরুদ্ধে গেছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের কারচুপির নির্বাচনের পুনরাবৃত্তির তীব্র বিরোধিতা করে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করলে যেকোনো বাংলাদেশির বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিয়েছে। স্পষ্টতই, আমেরিকা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড চায়। দেশটি চায় ভারতের প্রিয় আওয়ামী লীগ তার বিরোধীদের, মুক্ত সংবাদপত্র এবং সুশীল সমাজের ব্যক্তিত্বদের উপর গুন্ডামি করা ও বুলডোজার চালানো থামাক।

হাসিনা সরকার এতোটাই খারাপভাবে ধাক্কা খেয়েছে যে তারা এই ভয় করছে- ওয়াশিংটন হাসিনার ছেলে, উত্তরাধিকারী এবং বাংলাদেশের দ্বিতীয় শক্তিশালী ব্যক্তি সজীব ওয়াজেদ জয়ের মার্কিন ভিসা প্রত্যাহার করে একটা উদাহরণ তৈরি করতে পারে। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন- র‍্যাব (আধাসামরিক বাহিনী, হাসিনা নিজ শাসনকে স্থায়ী করার জন্য যার উপর সবচেয়ে বেশি নির্ভরশীল) এর কমান্ডারদের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পর এটি সত্যিই খুব বড় একটি ধাক্কা হবে। উপরন্তু, ২০২১ এবং ২০২৩ সালে অনুষ্ঠিত বিশ্ব গণতন্ত্র সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানায়নি। র‌্যাব কর্তৃক মানবাধিকার লঙ্ঘন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং "গুম" কমে যাওয়া নিষেধাজ্ঞা থেকে শুরু করে মার্কিন তিরস্কারের প্রভাবের সাক্ষ্যই বহন করে।

এর বিপরীতে, ভারত তার সব ডিম হাসিনার ঝুড়িতে রেখে দিয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে পররাষ্ট্র সচিব বিনয় কোত্রা খোলাখুলিভাবে তাকে সমর্থন করে বলেছিলেন, ভারত "হাসিনা এবং তার নেতৃত্বকে সম্পূর্ণ সমর্থন করে"। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অতিথি হিসেবে সেপ্টেম্বরে জি-২০ রাষ্ট্রপ্রধানদের সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্য হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানানোর পর কোত্রা ঢাকায় উক্ত বিবৃতি দেন। এর আগে জানুয়ারিতে, ভারতের সাবেক জুনিয়র পররাষ্ট্রমন্ত্রী এম জে আকবরের কাছে বাংলাদেশ মার্কিন নিষেধাজ্ঞার শিকার কিনা জানতে চাইলে তিনি জবাব দিয়েছিলেন, “শেখ হাসিনা সম্পর্কে ভারতে আমাদের নিজস্ব বোঝাপড়া রয়েছে। আমরা মনে করি, তিনি বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছেন, তার পিতা যেমন স্বাধীনতার লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।"

 এবারে কোলকাতার কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:

পঞ্চায়েত নির্বাচনের ভোট গণনা চলছে-আনন্দবাজার পত্রিকার এ খবরে লেখা হয়েছে, গ্রাম পঞ্চায়েত আসনে অনেক এগিয়ে তৃণমূল, দ্বিতীয় স্থানে বিজেপি আর তিন নম্বরে বাম কংগ্রেস জোট। তবে বেশ কয়েকটি জেলায় বিক্ষিপ্তভাবে অশান্তি সৃষ্টি হয়েছে।

‘স্পর্শকাতর বুথে বাহিনী মোতায়েনে নির্দিষ্ট পরিকল্পনাই ছিল না’, কেন্দ্রকে তোপ রাজীব সিনহার-সংবাদ প্রতিদিন

কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তায় রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট (Panchayat Election) করানো নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়েছে। শেষ মুহূর্তেও কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা নিয়ে টানাপোড়েনের জেরে সবকটি বুথে সময়মতো জওয়ানরা পৌঁছতে পারেননি বলে অভিযোগও উঠেছে। শনিবার, ভোটের দিন বিভিন্ন জেলার বুথগুলি থেকে সংঘর্ষের খবরাখবর মিলেছিল। প্রাণহানিও হয়েছে অন্তত ১৯ জনের। সবচেয়ে বেশি হিংসার ঘটনা ঘটেছে কোচবিহার, মুর্শিদাবাদ, দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। এসবের দায় কার? তা নিয়েও তরজা অব্যাহত। মঙ্গলবার ভোটগণনার দিনও বিক্ষিপ্ত অশান্তি চলছে। এই পরিস্থিতিতে বাহিনী (Central Force) মোতায়েন কেন্দ্রের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনাকেই দায়ী করলেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা।#

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/ ১১

ট্যাগ