সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৩ ১২:৩১ Asia/Dhaka

সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতা: রেডিও তেহরানের প্রাত্যহিক আয়োজন কথাবার্তার আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আজ ২৭ সেপ্টেম্বর বুধবারের কথাবার্তার আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি।

বাংলাদেশের শিরোনাম:

  • ঋণ মানে বাংলাদেশের সক্ষমতার বার্তা পাচ্ছে না বিশ্ব -প্রথম আলো
  • কোনও পরাশক্তির কাছে মাথা নত করব না: বাহাউদ্দিন নাছিম -ইত্তেফাক
  • বিএনপির আন্দোলনও হবে ডু অর ডাই-গয়েশ্বর, ড. মুরাদ বললেন সময়মতো খেলা হবে-যুগান্তর
  • মুক্তিযোদ্ধার সনদ বানানোর কথা বলে যুব মহিলা লীগ নেত্রীর বাণিজ্য, ফোনালাপ ফাঁস -মানবজমিন
  • সমালোচনার মুখে ডলার বুকিংয়ে সংশোধন আনল বাংলাদেশ ব্যাংক-কালের কণ্ঠ
  • বিশ্ব পর্যটন দিবস আজ, ট্যুরিজম খাতের ভাগ্য বদলায়নি ৫০ বছরেও -নয়া দিগন্ত

কোলকাতার শিরোনাম:

  • পৃথিবীর চেয়েও বুড়ো! ৯০০ কোটি বছর আগের রহস্যময় রেডিয়ো সঙ্কেত পেলেন বিজ্ঞানীরা-আনন্দবাজার পত্রিকা
  • থানায় অভিযোগ জানাতে গিয়ে ধর্ষিতা দলিত তরুণী-আজকাল
  • বিদেশি হস্তক্ষেপে আমাদের গণতন্ত্র বিপন্ন’, নাম না করে ভারতকে তোপ কানাডার-সংবাদ প্রতিদিন
  • ইতিমধ্যেই মৃত ৫২, নবান্ন বলছে, ডেঙ্গু কমছে-গণশক্তি

এবারে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিস্তারিত

বেগমপাড়া যখন বাংলাদেশি ধনাঢ্য ব্যক্তিদের ‘অবৈধ স্বর্গ’-প্রথম আলোর মতামত কলামে লেখা হয়েছে, কানাডার প্রধান নগরী টরন্টো এখন স্বাভাবিকভাবেই কানাডায় বাংলাদেশি অভিবাসীদের সবচেয়ে প্রিয় আবাসস্থলে পরিণত হয়েছে। ধারণা করা হয় যে টরন্টোয় বসবাসকারী বাংলাদেশিদের সংখ্যা ইতিমধ্যে পাঁচ লাখ অতিক্রম করেছে। টরন্টোর ‘বেগমপাড়া’ সাধারণ বাংলাদেশি জনগণের কাছে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছে বাংলাদেশ থেকে বিদেশে অবৈধভাবে পাচার করা অর্থে গড়ে তোলা প্রাসাদসম বাড়ির একটি পাড়া হিসেবে। অনেকেই শুনে অবাক হবেন, বেগমপাড়া বলে কোনো একটি নির্দিষ্ট স্থান টরন্টো বা তার আশপাশের শহরগুলোর কোথাও নেই। এই ‘বেগমপাড়া’ শব্দটি নেওয়া হয়েছে একজন ভারতীয় প্রামাণ্যচিত্র নির্মাতার একটি চলচ্চিত্র বেগমপুরা থেকে। তো যেভাবেই নামটি আসুক না কেন, বাংলাদেশিদের গড়ে তোলা বেগমপাড়ার বৈশিষ্ট্য বিষয় আলাদা। 

বাংলাদেশের আমদানি বাণিজ্যের প্রচলিত পুঁজি পাচারের হাতিয়ার ওভারইনভয়েসিং, রপ্তানি বাণিজ্যের মাধ্যমে পুঁজি পাচারের প্রধান হাতিয়ার আন্ডারইনভয়েসিং। এই পাচারকৃত অর্থের মাধ্যমে বেগমপাড়ায় বাড়ি কেনা হয়। তা ছাড়া রপ্তানি আয় দেশে ফেরত না এনে বিদেশে বাড়িঘর কেনার পাশাপাশি সাম্প্রতিক কালে হুন্ডি-পদ্ধতিতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের রেমিট্যান্সের অর্থ হুন্ডিওয়ালাদের কাছ থেকে কিনে যাঁরা বিদেশে পুঁজি পাচারের সক্ষমতা রাখেন, তাঁরাও কানাডার বেগমপাড়ায় বাড়ি বা অ্যাপার্টমেন্ট কিনে থাকেন। সে জন্য বেগমপাড়া হয়ে উঠেছে বাংলাদেশি ধনাঢ্য ব্যক্তিদের বিদেশে ‘অবৈধ স্বর্গ’ বানানোর প্রতীক। বেগমপাড়ার বেগম সাহেবাদের জন্য কারও কোনো সমবেদনা জাগে না। কারণ, তাঁরা স্বেচ্ছায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অর্থ পাচারের সক্রিয় সহযোগী হিসেবে। সাধারণ এই বাংলাদেশি অভিবাসীরা বরং বেগমপাড়াকে ঘৃণা করে থাকেন। কারণ, পুঁজি পাচারকারী ধনাঢ্য বাংলাদেশিরা টরন্টোর রিয়েল এস্টেটের বাজারে অসহনীয় মূল্যস্ফীতির জন্য দায়ী। এসব ধনাঢ্য মালিক সরাসরি নগদ অর্থে বাড়ি বা অ্যাপার্টমেন্ট কিনে থাকেন, তাঁরা মর্টগেজ সিস্টেমের সহায়তা নেন না।

রাজশাহীর কুইক রেন্টাল-১০ বছর বসিয়ে রেখেও ৬৬৭ কোটি টাকা পরিশোধ-যুগান্তর পত্রিকার এ শিরোনামের খবরে লেখা হয়েছে, রাজশাহীর কুইক রেন্টাল ‘নর্দার্ন পাওয়ার সলিউশন’ বিদ্যুৎকেন্দ্রকে (পাওয়ার প্ল্যান্ট) অলস বসিয়ে রেখেও ক্যাপাসিটি চার্জ হিসাবে ৬৬৭ কোটি ৫৯ লাখ টাকা পরিশোধ করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ। ১০ বছরে কেন্দ্রটির ৪৩৮ কোটি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদন করার কথা থাকলেও উৎপাদন করেছে ১৩৩ কোটি ৮৯ লাখ ইউনিট। ১০ বছরের মধ্যে ৭ বছরই (২ হাজার ৬৪৯ দিন) উৎপাদন বন্ধ ছিল। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেসরকারি পাওয়ার প্ল্যান্ট অলস বসিয়ে রাখলে চুক্তি অনুযায়ী ক্যাপাসিটি চার্জ দিয়ে থাকে সরকার। এ হিসাবে ২০২১-২২ অর্থবছরে অলস বসে থাকা ২৪৭ দিনের ক্যাপাসিটি চার্জ হিসাবে সরকার নর্দার্ন পাওয়ারকে ৮২ কোটি ৫৮ লাখ টাকা পরিশোধ করেছে।

রাজনীতির কিছু খবর। যুগান্তর শিরোনাম করেছে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, বিএনপির আন্দোলনও হবে ডু অর ডাই। আমরা বাংলাদেশের মানুষকে মুক্ত করতে চাই। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে চাই। জনগণ যদি মুক্ত হয়; খালেদা জিয়াও মুক্ত হবে। গণতন্ত্র মুক্ত না হলে খালেদা জিয়া মুক্ত হবে না। দৈনিকটির অপর এক খবরে লেখা হয়েছে, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান বলেছেন, ‘জামায়াত-বিএনপিকে প্রতিহত করার জন্য আওয়ামী লীগ প্রস্তুত আছে। সময়মতোই খেলা হবে।’

সরকারি হাসপাতালে যন্ত্রপাতি বিকল, নিঃস্ব হচ্ছে রোগীরা লাভবান হচ্ছেন একশ্রেণির ডাক্তার ও কর্তৃপক্ষ-ইত্তেফাকে স্বাস্থ্য বিষয়ক এ খবরে লেখা হয়েছে, রাজধানীসহ সারাদেশের সরকারি হাসপাতালগুলোর ৮৫ ভাগেরই পরীক্ষা-নিরীক্ষার যন্ত্রপাতি বিকল। সিটিস্ক্যান, এক্স-রে, ইসিজি, এমআরআই এর মতো গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা করতে পারছেন না রোগীরা। সরকারি হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফি যেখানে দুই হাজার টাকা, সেটা বাইরের বেসরকারি হাসপাতালে করতে লাগছে ১০ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা। যে পরীক্ষা সরকারি হাসপাতালে ফি, সেই পরীক্ষাও বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকে দুই হাজার টাকার বেশি লাগে। সরকারি হাসপাতালে আগত রোগীদের মধ্যে ৮০ ভাগই দরিদ্র। সারাদেশে ডেঙ্গুর ভয়াবহ থাবা। অনেক ডেঙ্গু রোগীদের কয়েক দফা পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন পড়ছে।

এবারে কোলকাতার কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:

বিদেশি হস্তক্ষেপে আমাদের গণতন্ত্র বিপন্ন’, নাম না করে ভারতকে তোপ কানাডার-সংবাদ প্রতিদিনের এ খবরে লেখা হয়েছে, রাষ্ট্রসংঘের (United Nations) মঞ্চে নাম না করে ভারতের বিরুদ্ধে তোপ দাগল কানাডা (Canada)। অধিবেশন চলাকালীন সেদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, কানাডার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অন্য রাষ্ট্রগুলো হস্তক্ষেপ করছে। তার ফলে কানাডার গণতন্ত্র বিপন্ন হয়ে পড়েছে। রাষ্ট্রসংঘের অধিবেশন শুরুর পর থেকেই নাম না করে একে অপরকে তোপ দেগেছে ভারত (India) ও কানাডা। খলিস্তানি জঙ্গি (Khalistani Terrorist) হরদীপ সিং নিজ্জর খুনের পর থেকেই টানাপোড়েন শুরু হয়েছে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে। যা থামার নাম নেই এখনও।

হিন্দু জঙ্গি’দের ভয়ে ভারতছাড়া, বেআইনিভাবে পাকিস্তানে পাড়ি পিতা-পুত্রের-সংবাদ প্রতিদিন

বিস্তারিত খবরে লেখা হয়েছে, বিজেপি (BJP) জমানায় দেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার, দমন-পীড়ন বাড়ছে বলে বহুদিন ধরেই অভিযোগ করছে বিরোধীরা। এমনকি, ভারতে অসহিষ্ণুতা বাড়ছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মহলও। এই প্রেক্ষিতেই দিল্লির বাসিন্দা সংখ্যালঘু পিতা-পুত্রের বেআইনিভাবে পাকিস্তানে (Pakistan) চলে যাওয়া নিয়ে চাপ বাড়ল কেন্দ্রের উপর। ওই পিতা-পুত্রের দাবি, তাঁদের জেলে ভরে দেওয়া হোক। কিন্তু কোনওভাবেই যেন ভারতে (India) ফেরত পাঠানো না হয়। ‘হিন্দু জঙ্গি’দের ভয়েই তাঁরা দেশ ছেড়েছেন বলে দাবি করেছেন।#

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/ ২৭

ট্যাগ