জানুয়ারি ৩১, ২০২৪ ১৬:৫৯ Asia/Dhaka

শ্রোতাবন্ধুরা, আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক প্রীতি আর শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি চিঠিপত্রের জবাবের আসর প্রিয়জন। আজকের আসর উপস্থাপনায় রয়েছি আমরা তিনজন। আমি গাজী আবদুর রশীদ, আমি আকতার জাহান এবং আমি আশরাফুর রহমান।

আশরাফুর রহমান: আসরের শুরুতেই আমি একটি হাদিস শোনাতে চাই। বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন: ‘শিক্ষক ও ছাত্র উভয়েই পুরস্কারের অংশীদার হয় কিন্তু অন্য লোকদের জন্য ওই কল্যাণ নেই।'

আকতার জাহান: খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি হাদিস শোনালেন আশরাফ ভাই। এই হাদিসটি থেকে আমরা জ্ঞানচর্চার গুরুত্ব সম্পর্কে জানতে পারলাম। আমরা সবাই জ্ঞান চর্চা অব্যাহত রাখব এই কামনা করে নজর দিচ্ছি ইমেইলের দিকে।

আসরের প্রথম মেইলটি এসেছে বাংলাদেশের রংপুর শহরের পূর্ব গোয়ালু থেকে। আর পাঠিয়েছেন আইআরআইবি ফ্যান ক্লাব বাংলাদেশ, রংপুর বিভাগ-এর সভাপতি ডক্টর মো: মোস্তাফিজুর রহমান।

তিনি লিখেছেন, "আমি রেডিও তেহরানের একজন নিয়মিত শ্রোতা ও পত্রলেখক। আমার প্রাত্যহিক কাজের রুটিনের শীর্ষে এখন অবস্থান করছে রেডিও তেহরানের অনুষ্ঠান শোনা। শুধু নেশার খাতিরে রেডিও তেহরান শোনা নয়, বরং এ বেতারের অনুষ্ঠানের মানই আমাকে অনুষ্ঠান শুনতে বাধ্য করে। আমার প্রতিদিনের সন্ধ্যা মানেই রেডিও তেহরান। আর ক্ষুদে শ্রোতা মারুফ সে তো সারাদিনই ঘুরে ফিরে জিজ্ঞাসা করেছে, রেডিও তেহরান কখন শুরু হবে? কারণ রেডিও তেহরানের অনুষ্ঠান তাকে শোনাতেই হবে। নেট সমস্যার কারণে কোনদিন রেডিও তেহরান শুনতে না পারলে সে খুব মন খারাপ করে। রেডিও তেহরানের অনুষ্ঠান সূচি তার মুখস্থ। সকলেই মারুফের জন্য দোয়া করবেন।" 

গাজী আবদুর রশীদ: রেডিও তেহরানকে পছন্দের গণমাধ্যম হিসেবে বেছে নেওয়ায় ভাই মোস্তাফিজুর রহমান, আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আর ছোট্টবন্ধু মারুফকে অনেক অনেক আদর আর ভালোবাসা রইল।

আশরাফুর রহমান: আরেকটি কথা। মারুফ কিন্তু আমাদের রংধনু আসরে অংশ নিতে পারে।

আকতার জাহান: হ্যাঁ, আপনি ঠিকই বলেছেন। শিশুদের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশের একটি অনন্য মাধ্যম রংধনু আসর। এতে অংশ নিয়ে শিশুরা গান, ছড়া, কবিতা, সুরা ও কৌতুক শোনাতে পারে। আগ্রহী শিশুদের নাম ও ফোন নাম্বার জানালে আমরাই ফোন করে সাংক্ষাৎকার নেওয়ার ব্যবস্থা করব।

গাজী আবদুর রশীদ: তো, সুন্দর মতামতসমৃদ্ধ চিঠিটির জন্য ডক্টর মোস্তাফিজুর রহমান ভাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে পরের মেইলটি চেক করছি। এটি এসেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুশমন্ডি থেকে। আর পাঠিয়েছেন দেবাশীষ গোপ।

তিনি লিখেছেন, "এটা ঠিক যে, আমাদের কারোরই যুদ্ধ কাম্য নয়। তবু পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদী, যুদ্ধবাজ আমেরিকা ও  তার  মিত্র  দেশগুলো  যুগ যুগ ধরে যুদ্ধের মাধ্যমে কী চরম অবস্থা তৈরি করে আসছে তা সকলেই জানি। এর অবসানে সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় এসেছে। আমাদের এখন এদের বিরুদ্ধে গিয়ে এদের মুখোশ  খুলে দেওয়ার সময়  হয়েছে।"

এরপর তিনি গত ৭ জানুয়ারি প্রচারিত শেষ ত্রাণকর্তা ও সোনালী সময় অনুষ্ঠানের প্রশংসা করেছেন।

আশরাফুর রহমান: ভাই দেবাশীষ গোপসমসাময়িক বিষয়ের পাশাপাশি আমাদের অনুষ্ঠান সম্পর্কে মতামত জানানোর জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ। আশা করি আবারো লিখবেন।

বাংলাদেশের রাজবাড়ী জেলার চন্দনী গ্রাম থেকে এসেছে আসরের পরের মেইলটি। আর পাঠিয়েছেন রাজবাড়ী জেলা বেতার শ্রোতা কমিটি সভাপতি শ্রী গোপীনাথ পাল। 

তিনি লিখেছেন, “২২ জানুয়ারি প্রচারিত প্রিয়জন আসরে আমার ছোট্ট লেখাটি ঠাঁই পেয়েছে। এজন্য আমি প্রিয়জনের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমি আপনাদের একজন নতুন শ্রোতা। রেডিও তেহরানের অনুষ্ঠানগুলো আমার মন কেড়েছে। আমি আশা রাখছি আপনাদের সকল আয়োজনের সাথে থাকব।”

আকতার জাহান: ভাই গোপীনাথ পাল, রেডিও তেহরানের অনুষ্ঠানমালা আপনার মন কেড়েছে জেনে ভালো লাগল। আশা করি আবারো চিঠি লিখবেন।

গাজী আবদুর রশীদ: আসরের পরের মেইলটি এসেছে বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী থানার মানিকখালী থেকে। আর পাঠিয়েছেন আব্দুল কাদির।

সালাম, প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানাবার পর তিনি লিখেছেন, “আমি রেডিও তেহরানের নিয়মিত শ্রোতা। আমাকে ধরতে পারেন রেডিও প্রেমিক। রেডিও তেহরান শুনতে আমার ভালো লাগে। আমি ২০২০ সাল থেকে রেডিও তেহরান শুনে আসছি। তার আগে অন্যান্য রেডিও এবং এফএম শুনতাম।যখন থেকে রেডিও তেহরান আমি শুনতে পেয়েছি তখন থেকে আমার আর অন্য কোনো রেডিও শুনতে ইচ্ছা করে না। এর প্রধান কারণ রেডিও তেহরান অন্যদের থেকে আলাদা এবং তাদের পরিবেশনা অনেক সুন্দর ও অতুলনীয়।”

আশরাফুর রহমান: এরপর আব্দুল কাদির ভাই রেডিও তেহরান শোনার পেছনে এক এক করে সাতটি কারণ উল্লেখ করেছেন। সেই কারণগুলোসহ তার পুরো লেখাটি পার্সটুডেতে প্রকাশিত হয়েছে। আগ্রহীরা পড়ে নিতে পারেন।

রেডিও তেহরানের অনুষ্ঠানের রিসিপশন মান নিয়ে দুটি মেইল পাঠিয়েছেন আশরাফ হোসেন। তার ঠিকানা গ্রাম: হাতিশালা, জেলা: নদীয়া, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত।

এ শ্রোতাবন্ধু লিখেছেন, “২৬ জানুয়ারি শর্টওয়েভে রেডিও তেহরান-এর রিসেপশনমানে বেশ প্রবলেম ছিল, যদিও পরে সমাধান হয়ে যায়। ওইদিন ‘সুন্দর জীবন’ অনুষ্ঠানে খুব ভালো আলোচনা হচ্ছিল, কিন্তু তা ছিল খুবই সংক্ষিপ্ত। সময়টা বাড়ানো যায় কিনা সেটা দেখবেন। তার আগের দিন রংধনুতে সম্পদ ও জ্ঞানের গুরুত্ব সম্পর্কে অনুষ্ঠানটি খুব ভালো লেগেছে। বিশেষ করে ছোট্টবন্ধুর সাক্ষাৎকারটি।”

আকতার জাহান: ভাই আশরাফ হোসেন, শ্রবণমান রিপোর্ট ও অনুষ্ঠান সম্পর্কে মতামত জানানোর জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আর ‘সুন্দর জীবন’ অনুষ্ঠানের সময় বৃদ্ধির যে প্রস্তাব আপনি দিয়েছেন তা আমাদের বিবেচনায় থাকল। আশা করি আবারো লিখবেন।

শ্রোতাবন্ধুরা, আপনারা নিশ্চয়ই জানেন যে, ২০২৩ সালে রেডিও তেহরানের বার্ষিক শ্রেষ্ঠ শ্রোতা নির্বাচিত হয়েছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুরের শ্রোতা দেবাশীষ গোপ এবং বাংলাদেশের কুষ্টিয়ার সিনিয়র শ্রোতা মোখলেছুর রহমান। অনুষ্ঠানের এ পর্যায়ে আমরা শ্রেষ্ঠ শ্রোতা হওয়ার অনুভূতি জানব মোখলেছ ভাইয়ের পাঠানো অডিও বার্তায়।

গাজী আবদুর রশীদ: শ্রেষ্ঠ শ্রোতা হওয়ার অনুভূতি প্রকাশের পাশাপাশি অনুষ্ঠান সম্পর্কে মতামত জানানোর জন্য শ্রোতাবন্ধু মোখলেছুর রহমান আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আশা করি সবসময় রেডিও তেহরানের সাথেই থাকবেন।

আশরাফুর রহমান: ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ থেকে এস এম নাজিম উদ্দিন পাঠিয়েছেন এবারের মেইলটি।

তিনি লিখেছেন, “আমিরুল মু'মিনিন হযরত আলী (আ.)-এর পবিত্র জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে গত ২৪ জানুয়ারি প্রচারিত বিশেষ আলোচনাটি উপভোগ করলাম। আলোচনার মাধ্যমে এই মহামানবের নানা দিক তুলে ধরে, ইসলামের এক গৌরবময় ব্যক্তিত্বের প্রতি যথার্থ সম্মান ও শ্রদ্ধা জ্ঞাপন আমাদের মুগ্ধ করেছে। ধন্যবাদ জানাই ইসলামের ইতিহাসে এই মহান ব্যক্তিত্বের জন্মদিনটি স্মরণ করার জন্য।”

আকতার জাহান: একই অনুষ্ঠান সম্পর্কে বাংলাদেশের কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর থেকে এই মেইলটি পাঠিয়েছেন এস এম হৃদয় রহমান।

তিনি লিখেছেন, “প্রতিবারের মত এবারও রেডিও তেহরান-এর অনলাইন সংস্করণ পার্সটুডেতে হযরত আলী (আ.)-এর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সম্বলিত একটি লেখা প্রকাশিত হয়েছে যা আমাকে বেশ আলোড়িত করেছে। ‘পিতা দিবস : আমিরুল মু’মিনিন হযরত আলী (আ.)’র পবিত্র জন্মবার্ষিকী’ শিরোনামে পার্সটুডেতে প্রকাশিত লেখাটিতে আমিরুল মু’মিনিনকে এমনভাবে তুলে ধরা হয়েছে ঠিক যেমনটা তিনি ছিলেন। হযরত আলী (আ.) সম্পর্কে নির্ভুল তথ্য সম্বলিত গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান এবং লেখা অন্য কোনো গণমাধ্যমে তেমন একটা পাওয়া যায় না। যেমনটা রেডিও তেহরান এবং পার্সটুডেতে পাওয়া যায়।”

গাজী আবদুর রশীদ: আমিরুল মু’মিনিন হযরত আলী (আ.)-এর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানটি সম্পর্কে মতামত জানানোয় ভাই নাজিমউদ্দিন ও হৃদয় রহমান আপনাদের দুজনকেই অসংখ্য ধন্যবাদ।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব বর্ধমান জেলার চুপী থেকে হাফিজুর রহমান পাঠিয়েছেন এবারের মেইলটি।

তিনি লিখেছেন, “শাবে ইয়ালদা ইরানের শীতকালীন একটি জনপ্রিয় উৎসব যা প্রাচীন কাল থেকেই ব্যাপক জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালিত হয়ে আসছে বলে শুনেছি। এ উৎসবকে কেন্দ্র করে ইরানে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে। শাবে ইয়ালদা সমন্ধে প্রিয়জনের আসরে বিস্তারিত জানতে আগ্রহী।”

আশরাফুর রহমান:  ভাই হাফিজুর রহমান, শাবে ইয়ালদা সম্পর্কে বিস্তারিত বলার জন্য একটি আলাদা অনুষ্ঠানের প্রয়োজন। তবে আপনার কৌতুহল মেটাতে সংক্ষিপ্তভাবে এই রাত সম্পর্কে কিছু কথা তুলে ধরিছ। শীতকালে নিরক্ষরেখা থেকে সূর্যের দূরতম অবস্থানকালে উত্তর গোলার্ধের দীর্ঘতম রাতে উদযাপিত হয় ‘শাবে ইয়ালদা’। ইরানি ক্যালেন্ডার অনুসারে প্রতি বছর ডিসেম্বরের ২০ বা ২১ তারিখ রাতে উদ্যাপিত হয় এই উৎসব। ইয়ালদার রাতে মূলত শীতের সূচনা উদযাপন করা হয়। ইরান ছাড়াও আফগানিস্তান, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান এবং কিছু ককেশীয় অঞ্চলের দেশ, যেমন- আজারবাইজান এবং আর্মেনিয়ায় বছরের একই সময় এই শাবে ইয়ালদা উদ্যাপিত হয়। এসব অঞ্চলের মানুষ যেসব কারণে শাবে ইয়ালদা উদযাপন করে থাকে তার মধ্যে শীতের আগমন এবং অন্ধকারের উপর আলোর বিজয় অন্যতম। তারা মনে করে ‘অন্ধকার’ মন্দের প্রতীক। আর শাবে ইয়ালদার পরে প্রথম সকাল অন্ধকার ও অশুভ শক্তির উপর সূর্য এবং আলোর বিজয়ের সূচনা। অর্থাৎ এ রাতেই আলোর কাছে আঁধার পরাজিত হয় এবং এ রাত থেকেই মানবজাতির জন্য সুদিনের পালা বইতে শুরু করে।

আকতার জাহান: হাফিজুর রহমান ভাইয়ের প্রশ্নের উত্তরের মাধ্যমেই আসর গোটানোর সময় হয়ে গেল। তবে বিদায় নেওয়ার আগে রয়েছে একটি আবৃত্তি। কবি কাজী নজরুল ইসলাম-এর বিখ্যাত ‘কান্ডারী হুঁশিয়ার’ কবিতাটি আবৃত্তি করেছেন বাংলাদেশের বিশিষ্ট বাচিক শিল্পী মুস্তাগিছুর রহমান মুস্তাক। 

গাজী আবদুর রশীদ: কবিতাটি শুনলেন। তো বন্ধুরা, আপনারা ভালো ও সুস্থ থাকুন আবারো এ কামনা করে বিদায় নিচ্ছি প্রিয়জনের আজকের আসর থেকে।

পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/৩১

 

ট্যাগ