কথাবার্তা: সাম্প্রদায়িক বিষবৃক্ষ উপড়ে ফেলতে হবে-কাদের, স্বাধীনতা মিলেছে মুক্তি মিলেনি-ফখরুল
সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতা! ১৬ ডিসেম্বর বুধবারের কথাবার্তার আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি। এরপর গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিশ্লেষণে যাবো। বিশ্লেষণ করবেন সহকর্মী সিরাজুল ইসলাম।
বাংলাদেশের শিরোনাম:
- বিজয়ের দিনে শহীদদের সশ্রদ্ধ স্মরণ-দৈনিক প্রথম আলো
- শাহজালালে সাড়ে ১০ কোটি টাকার স্বর্ণ উদ্ধার-দৈনিক ইত্তেফাক
- ইশরাকের বাসায় হামলা,মতিঝিল থানায় জিডি-দৈনিক নয়া দিগন্ত
- সাম্প্রদায়িক বিষবৃক্ষ উপড়ে ফেলতে হবে-কাদের-দৈনিক যুগান্তর
- এবারের বিজয় দিবসের উপহার ৪২ বিলিয়ন ডলারের রিজার্ভ-অর্থমন্ত্রী-কালের কণ্ঠ
- স্বাধীনতা মিলেছে মুক্তি মেলেনি-ফখরুল-মানবজমিন
- বিজয়ের পথ অবিরাম-সমকাল
- তুচ্ছ ঘটনায় রাস্তায় ফিল্মি স্টাইলে তাণ্ডব কিশোর গ্যাংয়ের-বিডি প্রতিদিন
ভারতের শিরোনাম:
- ভোটের জন্য আমরা ভাগাভাগি না-বিজেপেকে তোপ মমতার-আনন্দবাজার পত্রিকা
- শিখ তোষণের লক্ষ্যে কৃষক আন্দোলনকে সমর্থন! কানাডার সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক বাতিল-নয়া দিল্লির-সংবাদ প্রতিদিন
- সরকারের প্রস্তাব খারিজ করছি, আন্দোলনকে খাটো করবেন না, সুর-আজকাল
শিরোনামের পর এবার দুটি খবরের বিশ্লেষণে যাচ্ছি-
১. বাংলাদেশের মহান বিজয় দিবসের শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তাদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। দৈনিক মানবজমিনসহ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা খবর দিয়েছে। বিজয় দিবসের মতো একটি দিনে এই ধরনের ঘটনাকে আপনি কিভাবে দেখছেন?
২. বিজ্ঞান গবেষণায় ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে। উন্নয়ন এবং অগ্রগতিতে দ্বিতীয় স্থানে। ইরানের এই উন্নতি আসলে কিভাবে সম্ভব হল হলো?
বিশ্লেষণের বাইরে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবর:
আজ বাংলাদেশের ৪৯ তম মহান বিজয় দিবস। জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। গোটা জাতি পালন করছে মহান বিজয় দিবস।এদিকে বাংলাদেশের বিজয় দিবস উপলক্ষে নরেন্দ্র মোদি শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের খবরটি ছাপা হয়েছে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে।
দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার গুরুত্বপূর্ণ শিরোনাম হচ্ছে- বাংলাদেশের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সাম্প্রদায়কি বিষবৃক্ষ উপড়ে ফেলতে হবে। বিস্তারিত খবরে লেখা হয়েছে, দেশে সাম্প্রদায়িক বিষবৃক্ষ সমূলে উৎপাটনের অঙ্গীকার করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেছেন, সাম্প্রদায়িক বিষবৃক্ষ উপড়ে ফেলতে হবে। মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার প্রশ্নে কারও সঙ্গে আপস করা হবে না। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বুধবার সকালে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে বীর শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানানোর পর তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের আমাদের আজকের শপথ হবে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা মুক্তিযুদ্ধের সব শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে, আজ সাম্প্রদায়িকতার যে বিষবৃক্ষ ডালপালা বিস্তার করেছে; সাম্প্রদায়িক সে বিষবৃক্ষকে আমরা সমূলে উৎপাটিত করব।
তিনি বলেন, আমাদের যে আদর্শ, মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ, স্বাধীনতার আদর্শ- এই প্রশ্নে কোনো আপস আমরা করব না।
এর আগে জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। এর পরপরই জনসাধারণের জন্য স্মৃতিসৌধ উন্মুক্ত করে দেয়া হয়।
দৈনিকটির অন্য একটি খবরের শিরোনাম এরকম- দেশে ‘শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা’ বিরাজ করছে: মির্জা ফখরুল। বিস্তারিত খবরে লেখা হয়েছে,
দেশে এখন ‘শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা’ বিরাজ করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পর শের-ই বাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে পুস্পমাল্য অর্পনের পর তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, গণতন্ত্রের নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বেআইনিভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে আটক করে রাখা হয়েছে। ৩৫ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হয়েছে, ৫শ’র বেশি মানুষ গুম হয়ে গেছে, হাজার হাজার গণতন্ত্রকামী মানুষ মারা গেছেন। আজকে দেশে একটা শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে।
এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার জন্যে জনগণ আজকের দিনে আবার নতুন করে শপথ গ্রহণ করছে যে, আরেকটি মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে তারা অবশ্যই দেশকে মুক্ত করবে, মানুষের গণতন্ত্রকে মুক্ত করবে, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবে এবং গণতান্ত্রিক একটি রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করবে। তাই একটি নিরপেক্ষ সরকারের নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে এদেশে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা শপথ নিচ্ছি’-যোগ করেন বিএনপি মহাসচিব।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ভুলুণ্ঠিত হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, স্বাধীনতা ঘোষণার মধ্য দিয়ে জাতি যে মুক্তিযুদ্ধ শুরু করেছিল, দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধের মাধ্যমে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে বাংলাদেশের বীর মুক্তিযোদ্ধারা দেশ স্বাধীন করেছিল। সেই দিন যে চেতনা নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ শুরু করেছিল বাংলাদেশের মানুষ, সেই চেতনা ছিলো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা, গণতান্ত্রিক একটি সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। দুর্ভাগ্য আমাদের যে, ১৯৭৪-’৭৫ সালে দেশে আওয়ামী লীগ একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দেয়।
আজকে ১০ বছর ধরে তারা জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে এবং গণতন্ত্রকে ধবংস করে মানুষের যে মৌলিক অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার, তার যে স্বাধীনভাবে কথা বলার অধিকার, সংবাদপত্রের যে স্বাধীনতা তাকে ধবংস করে দিয়ে আজকে একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য সরকার কাজ করছে। স্বাধীনতার চেতনাকে তারা ধবংস করে দিয়েছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ সব সময় একটি প্রতারণার রাজনীতি করে আসছে। তারা মুখে গণতন্ত্রের কথা বলেছে কিন্তু কাজে তারা স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছে।
এবার ভারতের কয়েকটি খবর তুলে ধরছি:
কৃষক আন্দোলন :
কৃষক বিক্ষোভের জেরে দিনে সাড়ে ৩ হাজার কোটির ক্ষতি! সমস্যা দ্রুত মেটাতে চিঠি বণিকসভার-দৈনিক সংবাদ প্রতিদিন
লাগাতার ২০ দিন ধরে কৃষক বিক্ষোভ (Farmer’s Protest) চলছে দিল্লি সীমানায়। সেই বিক্ষোভের জেরে বিপুল ক্ষতির মুখে পড়ছে অর্থনীতি। প্রতিদিন গড়ে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে। তাই এই দ্রুত সমস্যা মেটানোর আরজি জানিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার ও বিক্ষোভকারী কৃষক সংগঠনগুলিকে চিঠি দিল বণিক সংগঠন অ্যাসোচেম (ASSOCHAM)।
সেই চিঠিতে বণিকসভা দাবি করেছে, দিল্লি সীমানায় চলতে থাকা অবস্থান বিক্ষোভের জেরে কৃষি, পশুপালন-সহ একাধিক ক্ষেত্রে বিপুল ক্ষতি হচ্ছে। বিভিন্ন সীমানা বন্ধ থাকায় বেড়ে যানজট। ফলে পণ্য পরিবহণের খরচ অনেকটাই বাড়িয়ে দিচ্ছে। নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম বাড়ছে। করোনা পরবর্তী সময় এই বিপুল দৈনিক ক্ষতি দেশের অর্থনীতির পক্ষে বিপজ্জনক বলেও মনে করছেন ওই সংগঠনের সদস্যরা। এমনকী, ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ছে উত্তর রেলও। এদিন উত্তর রেলের জেনারেল ম্যানেজার আশুতোষ গঞ্জাল জানান, কৃষক বিক্ষোভের জন্য ইতিমধ্যে যাত্রীবাহী ও মালবাহী ট্রেনের চলাচলের দরুন আড়াই হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে।অ্যাসোচেমের তরফে চিঠিতে জানানো হয়েছে, পাঞ্জাব-হরিয়ানা-হিমাচলপ্রদেশ ও দিল্লিতে একাধিক ইন্ডাস্ট্রি গড়ে উঠেছে। রয়েছে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, সুতির পোশাক, গাড়ির যন্ত্রাংশ, কৃষি যন্ত্রাংশ, আইটি-সহ একাধিক ক্ষেত্র। এমনকী, কৃষিকর্ম ও পশুপালনের একটা বড় অংশ রয়েছে এই এলাকাগুলিতে। এছাড়া, পর্যটন-হসপিটালিটি-পরিবহণের মতো ব্যবসায়ও এই এলাকাগুলিকে ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। কিন্তু ক্রমাগত বিক্ষোভের জেরে সমস্ত ইন্ডাস্ট্রির কাজই থমকে থাকছে। কিংবা খুব ধীরগতি এগোচ্ছে কাজ। ফলে লজিস্টিক খরচ অনেকটাই বেড়ে যাচ্ছে। যা সংস্থাগুলিকে লোকসানের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তাই দ্রুত সমস্যা মিটিয়ে ফেলার আরজি জানিয়ে দু’পক্ষকেই চিঠি দিয়েছে অ্যাসোচেম।
উল্লেখ্য, বাদল অধিবেশনে নয়া তিন কৃষি আইন পাশ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। নয়া আইন কার্যকর হলে নূন্যতম সহায়ক মূল্যে সরকার আর ফসল কিনবে না, জমি কেড়ে নিতে পারে বেসরকারি সংস্থা-সহ একাধিক আতঙ্কে ভুগছেন কৃষকরা। তাই এই আইন প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। সেই দাবিতে দিল্লির পাঁচ সীমানা ঘিরে আন্দোলন করছেন একাধিক কৃষক সংগঠনের প্রতিনিধিরা। যার জেরে শিল্পক্ষেত্রে একাধিক সমস্যা তৈরি হচ্ছে বলে অভিযোগ।
সরকারকে আইন প্রত্যাহারে ‘বাধ্য’ করব, আরও সুর চড়াল কৃষক সংগঠনগুলো-দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা
সরকার যদি বলতে পারে তারা কৃষি আইন প্রত্যাহার করবে না, তা হলে আমরাও বলছি, সরকারকে এই আইন প্রত্যাহার করিয়েই ছাড়ব। আরও জোরদার আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়ে এমনই বার্তা দিলেন কৃষক নেতারা।
কৃষক নেতা জগজিৎ দাল্লেওয়ালের কথায়, “আমাদের লড়াই এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে সেখান থেকে আমাদের জিতে ফিরতেই হবে।” কৃষকরা আলোচনা চাইছেন। কিন্তু সরকার তাঁদের দাবি কানেই তুলছে না। এমনকি কোনও পোক্ত প্রস্তাবও কৃষকদের সামনে রাখা হচ্ছে না বলে অভিযোগ জগজিতের। তবে আন্দোলনের ঝাঁঝ যে আরও বাড়াতে চলেছে কৃষক সংগঠনগুলি সে ইঙ্গিতও দিয়েছেন তিনি।
জগজিতের কথায়, “বিপুল সংখ্যক মহিলা বিক্ষোভকারী এই আন্দোলনে যোগ দেবেন। তার জন্য সব রকম আয়োজন করা হচ্ছে।” ইতিমধ্যেই আরও কৃষক দিল্লির সীমানায় হাজির হয়েছে। আজ। বুধবার নয়ডা এবং দিল্লির মাঝে চিল্লা সীমানা সম্পূর্ণ অবরুদ্ধ করার হুমকি দিয়েছে কৃষক সংগঠনগুলো। তাঁদের অভিযোগ, দিল্লিতে পৌঁছনোর আগেই কৃষকদের বিভিন্ন সীমানায় আটকে দেওয়া হচ্ছে। আন্দোলনকে স্তব্ধ করে দেওয়ার একটা প্রচেষ্টা চলছে। তবে হাজার চেষ্টা করেও তাঁদের আন্দোলনকে থামানো যাবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে কৃষক সংগঠনগুলো।
২০ দিন অতিক্রান্ত হয়ে গেল কৃষক আন্দোলনের। এখনও কোনও সামাধানসূত্র মেলেনি। সরকার যেমন নিজেদের অবস্থানে অনড়, তেমনই কৃষক নেতারা জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁদের দাবি থেকে পিছু হটে আসার কোনও প্রশ্নই নেই। ফলে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে উঠছে। এ দিকে, এই আন্দোলনের জেরে পঞ্জাব, হরিয়ানা, দিল্লি, হিমাচল প্রদেশের মতো বেশ কয়েকটি রাজ্য আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছে। মঙ্গলবার এমনই একটি তথ্য তুলে ধরেছে ভারতের চেম্বার্স অব কর্মাস। ফলে বাণিজ্য এবং শিল্প মহল থেকেও একটা চাপ সৃষ্টি হচ্ছে সরকারের উপর।
তবে সরকার যে কোনও চাপের কাছে মাথা নত করবে না সে ইঙ্গিতও দিয়েছে। মঙ্গলবারই গুজরাতের কচ্ছে গিয়ে এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এই আইন কৃষকদের স্বার্থেই। আজ যাঁরা এই আইনের বিরোধিতা করছেন, এক সময় তাঁরা এই আইনের পক্ষেই সওয়াল করেছিলেন।” সরকার যে এই আইন নিয়ে পিছু হটবে না গত কাল সে কথা স্পষ্ট করে দেন মোদী। পাশাপাশি এটাও জানান, এই আইনের ফলে কতটা সুবিধা হবে সে বিষয়টি কৃষকদের বুঝিয়েই ছাড়বেন।
মোদী বলেন, “কৃষকদের উস্কানো হচ্ছে। তাঁদের কাঁধে বন্দুক রেখে রাজনীতি করা হচ্ছে। তাঁদের মনে ভয় ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে এই বলে যে, নতুন আইন বলবৎ হলে তাঁরা জমি হারাবেন। কিন্তু আমার দৃঢ় বিশ্বাস রাজনীতির এই চক্র থেকে বেরিয়ে এসে আসল সত্যটা বুঝতে পারবেন কৃষকরা।”
অন্য দিকে, উত্তরপ্রদেশের খাপ পঞ্চায়েতের নেতারাও কৃষকদের এই আন্দোলনে সামিল হওয়ার কথা জানিয়েছেন। অল খাপ কাউন্সিল-এর সেক্রেটারি সুভাষ বালিয়ান জানান, সমস্ত খাপ পঞ্চায়েতের নেতারা একত্রিত ভাবে কৃষক আন্দোলনকে সমর্থনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আগামী ১৭ ডিসেম্বর তাঁরা দিল্লিতে আন্দোলনে সামিল হতে চলেছেন বলেও জানান বালিয়াল।
এই আন্দোলনে সামিল হয়ে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। আগামী ২০ ডিসেম্বর তাঁদের জন্য শ্রদ্ধাঞ্জলি দিবস পালন করা হবে বলে জানিয়েছে কৃষক সংগঠনগুলো।
সংবাদ প্রতিদিনের অন্য একটি খবরে লেখা হয়েছে, সাময়িকভাবে হলেও কৃষি আইন প্রত্যাহার করা উচিত সরকারের, মত অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের। বিস্তারিত খবরে লেখা হয়েছে, কৃষি আইন (Farm Laws) নিয়ে এবার পরোক্ষে কেন্দ্রকে কাঠগড়ায় তুললেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর মতে, মহামারীর পরে অর্থনীতি নিয়ে চারিদিকে যখন এত সংশয়, তখন কৃষি আইন কার্যকর করাটা একেবারেই বুদ্ধিমানের পরিচয় নয়। অভিজিৎ (Abhijit Banerjee) মনে করছেন, এই মুহূর্তে বহু মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। তাই সরকারের উচিত আপাতত যতদিন না সংসদে এই আইন নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, ততদিনের জন্য তা প্রত্যাহার করে নেওয়া।
‘১০ বছর দলের খেয়ে ভোটের সময় অন্যদের সঙ্গে বোঝাপড়া করলে মানব না’, তোপ মুখ্যমন্ত্রীর-সংবাদ প্রতিদিন
একুশের নির্বাচনের আগে বঙ্গজুড়ে দলবদলের হাওয়ায় ক্রমেই উত্তপ্ত হচ্ছে রাজ্য-রাজনীতি। তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়ে গেরুয়া শিবিরেই নাম লেখানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। এমন পরিস্থিতিতে নাম না করে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। জানিয়ে দিলেন, এতদিন পার্টি করার পর ভোটের আগে অন্যদের সঙ্গে বোঝাপড়া করা কোনওভাবেই মেনে নেওয়া হবে না।
পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/১৬
- বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।