সুইস ব্যাংকসহ বিদেশে অর্থপাচারকারীদের নাম-ঠিকানা চেয়েছে আদালত
সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতা: রেডিও তেহরানের প্রাত্যহিক আয়োজন কথাবার্তার আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ । আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আজ ২৮ ফেব্রুয়ারি রোববারের কথাবার্তার আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি।
বাংলাদেশের শিরোনাম:
- দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে শিক্ষা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ- দৈনিক ইত্তেফাক
- ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, কারও আপনিতই আমলে নেওয়া হয়নি- প্রথম আলো
- উত্তাল মিয়ানমার সামরিক অভ্যুত্থানবিরোধী মিছিলে গুলিতে নিহত ৪- বাংলাদেশ প্রতিদিন/মানবজমিন
- রাজধানীতে পুলিশ ছাত্রদল ব্যপক সংঘর্ষ, টিয়ারশেল-গুলি-আহত হাবিব-উন নবী সোহেলসহ ৩৫ জন-কালের কণ্ঠ
- জিয়াকে ইতিহাস ধারন করছে, খেতাব বাতিলে আসে যায় না-ফখরুল- যুগান্তর
- ইয়াবার টাকা না পেয়ে মায়ের পেটে কাঁচি ঢুকিয়ে দিল মেয়ে- সমকাল
- তদন্তের মাধ্যমে লেখক মুশতাকের মৃত্যু রহস্য উন্মোচিত হবে-কাদের-মানবজমিন
ভারতের শিরোনাম:
- বাম-কংগ্রেসের বিগ্রেড সমাবেশ, ঐতিহাসিক ভিড়-আনন্দবাজার পত্রিকা
- একদিকে বিজেপি-তৃণমূল, অন্যদিকে আমরা-বললেন বিমান বসু-আজকাল
- দেশকে নিয়ে গর্ব করাই আত্মনির্ভরতার প্রথম ধাপ, মন কি বাত এ বার্তা প্রধানমন্ত্রীর-দৈনিক সংবাদ প্রতিদিন
পাঠক/শ্রোতা ! এবারে চলুন, বাছাইকৃত কয়েকটি খবরের বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।
প্রথমে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:
দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে হলে শিক্ষা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ-ইত্তেফাক

শিক্ষার্থীদের সহায়তায় বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমরা শিক্ষিত ও দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর। এ ক্ষেত্রে বিত্তশালীরাও এগিয়ে আসবেন। আমাদের শিক্ষাসহায়তা ট্রাস্ট ফান্ডে সহায়তা করবেন বা নিজ নিজ এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সহায়তা করবেন। নিজে যে প্রতিষ্ঠান থেকে পড়াশোনা করেছেন, সেটার উন্নয়নে ও সেখানকার শিক্ষার্থীদের সহায়তায় এগিয়ে আসলেই তো হয়।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে হলে শিক্ষা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আর তাই শিক্ষার প্রসারে খরচকে আমরা বিনিয়োগ মনে করি।বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এই স্বীকৃতি ধরে রাখতে শিক্ষার প্রসার প্রয়োজন।’
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-কারও আপত্তিই আমলে নেওয়া হয়নি-প্রথম আলো
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি তৈরির আগে এবং পরে কারও আপত্তিই আমলে নেয়নি সরকার। ২০১৮ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদে এ আইনের বিল পাস হয়। পরের মাসে (৮ অক্টোবর ২০১৮) রাষ্ট্রপতি বিলটিতে সই করেন। এর মাধ্যমে বহুল আলোচিত আইনটি কার্যকর হয়।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খসড়া তৈরি, মন্ত্রিসভায় অনুমোদন, সংসদে বিল উত্থাপন ও রাষ্ট্রপতির সইয়ের আগে ও পরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সম্পাদক পরিষদ এবং দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংগঠন ও সংস্থা আপত্তি তুলেছিল। সরকারের পক্ষ থেকে কয়েকজন মন্ত্রী ও সংসদীয় কমিটির সদস্যরা বৈঠক করে আপত্তিগুলো শুনেছিলেন। কিন্তু শেষে দেখা যায়, দাবিগুলো উপেক্ষা করা হয়েছে।

শুধু পুলিশের একটি আপত্তি আমলে নেওয়া হয়। সেটি হলো, আইনের ৪৩ ধারায় তল্লাশি, জব্দ ও গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে সংসদীয় কমিটি ডিজিটাল নিরাপত্তা এজেন্সির মহাপরিচালকের অনুমোদন নেওয়ার বিধান যুক্ত করার সুপারিশ করেছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে তড়িঘড়ি করে অনুমোদনের বিষয়টি বাদ দেওয়া হয়। ফলে পরোয়ানা ছাড়াই পুলিশ তল্লাশি, জব্দ ও গ্রেপ্তারের ক্ষমতা পায়।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাসের পর দুই বছর চার মাসের মতো পেরিয়েছে। প্রথম আলো গত বছর হওয়া ১৯৭টি মামলা বিশ্লেষণ করে দেখেছে, বেশির ভাগ মামলাই হয়েছে ‘কটূক্তি’, ‘মানহানিকর বক্তব্য’, ‘বিকৃত ছবি শেয়ার’, ‘গুজব ছড়ানো’ এবং ‘সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র’জাতীয় অভিযোগে। ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে মামলার বাদী পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের নেতা–কর্মীরা।
বেসরকারি সংস্থা সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) গতকাল শনিবার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে একটি সমীক্ষার ফল প্রকাশ করে। এতে দেখা যায়, ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এ আইনে ৭৮৩টি মামলা হয়েছে। এসব মামলার ৪০২টির তথ্য সংগ্রহ করে সিজিএস বলছে, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
মানবজমিনের মত-মতান্তরে লেখা হয়েছে, মুশতাক কাশিমপুর থেকে আজিমপুরে। দৈনিকটির অন্য একটি খবর-ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় কারাবন্দী লেখক মুশতাক আহমেদের কারাগারে মৃত্যুর তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সাবেক মহাসচিব এবং জাতিসংঘের মত প্রকাশের স্বাধীনতা-বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি আইরিন খান। সেই সাথে তিনি ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন বাতিল করার এবং অবিলম্বে কার্টুনিস্ট আহমেদ কবিরকে মুক্তির দাবি জানান।দৈনিকটির অপর এক খবরে লেখা হয়েছে, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, তদন্তের মাধ্যমে লেখক মুশতাকের মুত্যু রহস্য উন্মোচিত হবে।
রাজধানীতে পুলিশ-ছাত্রদল ব্যাপক সংঘর্ষ, টিয়ারশেল-গুলি, আহত ৩৫-কালের কণ্ঠ
রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ছাত্রদলের বিক্ষোভ কর্মসূচিকে ঘিরে পুলিশের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এতে অন্তত ৩৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে পুলিশ ও সাংবাদিকও রয়েছেন।
আজ রবিবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে ছাত্রদলের কর্মসূচিতে পুলিশ বাধা দিলে এই সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষে পুলিশ ব্যাপক লাঠিচার্জ করে। একপর্যায়ে টিয়ারশেলও নিক্ষেপ করে পুলিশ।
এদিকে যুগান্তরের একটি খবরে লেখা হয়েছে, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেছেন, জিয়াকে ইতিহাস ধারন করছে, খেতাব বাতিলে আসে যায় না।
পঞ্চম ধাপে দেশের ২৯ টি পৌরসভার ভোট গ্রহণ করা হয়েছে। খবরটি কালের কণ্ঠসহ প্রায় সব দৈনিকের খবরে লেখা হয়েছে, সৈয়দপুর পৌরসভা নির্বাচনে সহিংসতায় ঘটনায় একজন নিহত ও অপর ২ জন আহত হয়েছেন। ওই ব্যক্তির নাম ছোটন অধিকারী (৫৪)। তিনি শহরের ৫নং ওয়ার্ডে মহিলা কলেজ কেন্দ্রে কাউন্সিলর প্রার্থী নজরুল ইসলাম রয়েলের (ব্রিজ প্রতীক) কর্মী ছিলেন। এদিকে সেখানে ভোট বর্জন করেছে জাপার প্রার্থী।
সুইস ব্যাংকেসহ বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে হাইকোর্টের রুল-মানবজমিন

সুইস ব্যাংকসহ বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, তা জানতে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে সুইস ব্যাংকসহ বিদেশে অর্থপাচারকারীদের নাম-ঠিকানা এবং তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে রুলে তাও জানতে চেয়েছেন আদালত। রোববার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।গত ১লা ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় বাংলাদেশি বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে সুইস ব্যাংকসহ গোপনে বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ অবিলম্বে ফেরত আনতে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে রিট করেন ব্যারিস্টার আব্দুল কাইয়ুম খান ও অ্যাডভোকেট সুবীর নন্দী দাস।
এবার ভারতের কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:
ব্রিগেড সম্পর্কিত খবর পরিবেশিত হয়েছে- আজকের প্রায় সব দৈনিকে
মমতাকে ‘জিরো’ করে দেখিয়ে দেব, ব্রিগেড থেকে তোপ দাগলেন আব্বাস-আনন্দবাজার পত্রিকা/আজকাল সংবাদ প্রতিদিন। বিস্তারিত খবরে লেখা হয়েছে, সত্যিই নজিরবিহীন বিগ্রেড সমাবেশ। রাজ্যের বিধানসভা ভোটকে নিশানা করে রবিবার এই প্রথম কংগ্রেসের হাত ধরে ব্রিগেডের ময়দানে বামেরা। আব্বাস সিদ্দিকির ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ)-এর সঙ্গে জোটের জট এখনও কাটেনি। কিন্তু তা আপাতত সরিয়ে রেখেই বাম এবং কংগ্রেসের সঙ্গে ব্রিগেডের মঞ্চ ভাগ করে নিয়েছে আইএসএফ-ও। আইএসএফ প্রধান আব্বাস সিদ্দিকী সরাসরি মমতাকে আক্রমণ করে বলেন, তাঁকে জিরো করে দেব। তিনি আরও বলেন, আগামী দিন বিজেপি সরকার এবং তার বি-টিম মমতা সরকারকে বাংলা থেকে উৎখাত করব, মুখ্যমন্ত্রীর ঘুম এখনই হারাম হয়ে গেছে।
আর সীতারাম ইয়েচুরির অভিযোগ-দিল্লিতে কৃষক আন্দোলন চলছে, অনেকে শহিদ হয়েছেন, কিন্তু মোদীর ভ্রূক্ষেপ নেই। মোদী সরকার না সরলে এই আন্দোলন চলবে।
এদিকে কংগ্রেস সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেন, এত বড় সভায় বক্তৃতার সুযোগ আমার জীবনে এই প্রথম। তার দাবি যারা আগামী নির্বাচনকে বোঝাতে চাইছে তৃণমূল এবং বিজেপির লড়াই, তাদের মিথ্যা প্রমাণ করে দিয়েছে এই সমাবেশ। তিনি বলেন, আগামী দিনে তৃণমূল, বিজেপি থাকবে না, সংযুক্ত মোর্চা থাকবে। ইয়ে স্রেফ ঝাঁকি হ্যায়, সরকার বদলনা বাকি হ্যায়। তিনি বলেন, দিদি আর মোদির রাজনৈতিক ডিএনএ এক। বিমান বসু বললেন, এই সমাবেশের পর এক দিকে থাকবে বিজেপি-তৃণমূল। অন্য দিকে থাকব আমরা সবাই।
‘দেশকে নিয়ে গর্ব করাই আত্মনির্ভরতার প্রথম ধাপ’, ‘মন কি বাত’-এ বার্তা প্রধানমন্ত্রীর-আনন্দবাজার পত্রিকা
আত্মনির্ভর হওয়ার প্রথম ধাপ হল নিজের দেশকে নিয়ে গর্ব করা। ফেব্রুয়ারির শেষ রবিবার মাসিক ‘মন কি বাত’ রেডিও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে ফের আত্মনির্ভরতার পক্ষেই সওয়াল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির । তাঁর কথায়, ”আত্মনির্ভর ভারত অভিযান কেবল কোনও সরকারি নীতি মাত্র নয়। এটা এক ধরনের জাতীয় চেতনা।”এদিন তাঁর বক্তব্যে উঠে আসে জল সংরক্ষণের কথাও। মাঘ মাসে হরিদ্বারে কুম্ভ উৎসব পালিত হচ্ছে। সে প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মনে করিয়ে দেন, এদেশে নিয়মিতই কোনও না কোনও জল উৎসব পালিত হয়। জল সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তার কথা বলতে গিয়ে তিনি মনে করিয়ে দেন বর্ষার জল ধরে রাখার গুরুত্বের কথা। দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর মোদি সরকার গঠন করেছে জলশক্তি মন্ত্রক। সেই মন্ত্রকের তরফে এই বিষয়টিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন তিনি। তাঁর মতে জল পরশপাথরের থেকেও দামি। তিনি বলেন, ”বলা হয় পরথপাথরের স্পর্শে লোহাও সোনা হয়ে যায়। একই ভাবে জলের স্পর্শ জীবনের জন্য, অগ্রগতির জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।”#
পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/২৮
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।