মে ০৮, ২০২১ ১৬:২৯ Asia/Dhaka

সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতা! ৮ মে শনিবারের কথাবার্তার আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি। এরপর গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিশ্লেষণে যাবো। বিশ্লেষণ করবেন সহকর্মী সিরাজুল ইসলাম।

বাংলাদেশের শিরোনাম:

  • মতামত/মিয়ানমার কি আরেকটা সিরিায় হতে যাচ্ছে-প্রথম আলো
  • ছুটি বৃদ্ধি ও বেতন বোনাসের দাবি নিয়ে রাস্তায় পোশাক শ্রমিকরা-কালের কণ্ঠ
  • খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসাপ্রাপ্তি, স্বাস্থ্যের ক্ষতি না হওয়ার আশা জাতিসংঘের-মানবজমিন
  • দেশে মিললো করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট-আইইডিসিআর- ইত্তেফাক
  • সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে দর্শনীয় করে তোলার জন্যই প্রকল্প-কাদের – যুগান্তর
  • স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সংস্কার চান বিশেষজ্ঞরা-সমকাল
  • করোনার ভারতীয় ধরন বি.১.৬১৭ আসলে কী?-বিডি প্রতিদিন

ভারতের শিরোনাম:

  • জরুরি না হলে নয় গ্রেফতার’, করোনায় জেলে ভিড় এড়াতে নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের-আনন্দবাজার পত্রিকা
  • দেশের মধ্যে ইতিহাস গড়েছে বাংলার নির্বাচনের ফলাফল, পরিসংখ্যান তুলে দাবি মুখ্যমন্ত্রীর-সংবাদ প্রতিদিন
  • বাংলার রাজনৈতিক হিংসায় উদ্বিগ্ন রাজ্যপাল! তলব মুখ্যসচিবকে–আজকাল

শ্রোতাবন্ধুরা! শিরোনামের পর এবার দু'টি খবরের বিশ্লেষণে যাচ্ছি।

কথাবার্তার বিশ্লেষণের বিষয়:

১. দূর পাল্লার বাস বন্ধ থাকার পরও ফেরিঘাঁটে হাজার হাজার যাত্রীর ভিড়, অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়েছেন অনেক রোগী। কেন এমন অবস্থা হলো?

২. মার্কিন সিনেটর ক্রিস মারফি বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা থেকে আমেরিকা কিছুই পায় নি। কী বলবেন আপনি?

বিশ্লেষণের বাইরে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবর:

দেশে করোনার ভারতীয় ধরন মিলল-ইত্তেফাক/যুগান্তর/প্রথম আলো

বাংলাদেশ করোনাভাইরাসের ভারতীয় একটি ধরন পাওয়া গেছে। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) এটি পেয়েছে। আর এ–সংক্রান্ত তথ্য জার্মানির গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফ্লুয়েঞ্জা ডেটাতে (জিআইএসএআইডি) প্রকাশিত হয়েছে। 

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের আক্রান্ত ব্যক্তি প্রথম শনাক্ত হয় গত বছরের ৮ মার্চ। করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে গত ১৮ মার্চ।

করোনার ভারতীয় ধরন বি.১.৬১৭ আসলে কী?-বাংলাদেশে প্রতিদিন

বাংলাদেশে শনাক্ত হয়েছে করোনার ভারতীয় ধরন। যে কোনো ভাইরাসই ক্রমাগত নিজের ভেতরে নিজেই মিউটেশন ঘটাতে করতে থাকে অর্থাৎ নিজেকে বদলাতে থাকে, এবং তার ফলে একই ভাইরাসের নানা ধরন তৈরি হয়। করোনাভাইরাসের ভারত ভ্যারিয়েন্ট - যেটার বৈজ্ঞানিক নাম দেওয়া হয়েছে বি.১.৬১৭ - প্রথম ভারতে শনাক্ত হয় অক্টোবর মাসে।

কত দ্রুত এবং কতদূর নতুন ধরনের এই ভাইরাসটি ভারতে ছড়িয়েছে তার সুনির্দিষ্ট ধারণা পেতে যে মাত্রায় নমুনা পরীক্ষা করতে হয় তা এখনও ভারতে সম্ভব নয়।

পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য মহারাষ্ট্রে জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত ৩৬১টি নমুনা পরীক্ষায় ২২০টির মধ্যে নতুন ধরনের এই ভাইরাসটি শনাক্ত হয়।

ওদিকে, সংক্রামক রোগের তথ্য সংগ্রহ এবং আদান-প্রদানে নিয়োজিত আন্তর্জাতিক সংস্থা জিআইসএইড-এর ডাটাবেজ অনুসারে, এরই মধ্যে কমপক্ষে ২১টি দেশে করোনাভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট সনাক্ত হয়েছে।

যাতায়াতের কারণে ব্রিটেনেও করোনাভাইরাসের ভারতীয় ধরনটি পাওয়া গেছে। ২২শে ফেব্রুয়ারি থেকে ১০৩ জন কোভিড রোগীর দেহে এই ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। বিজ্ঞানীরা এখনও জানতে পারেননি যে ভারতে প্রথম শনাক্ত এই করোনাভাইরাসটি অন্যগুলোর তুলনায় দ্রুত সংক্রমণ ঘটায় কিনা, বা এটির বিরুদ্ধে টিকা কার্যকর কিনা।

মতামত-মিয়ানমার কি আরেকটা সিরিয়া হতে যাচ্ছে?-প্রথম আলো

লেখক ও সাংবাদিক।ফারুক ওয়াসিফ লিখেছেন, মিয়ানমারে তিন মাস ধরে চলা গণবিক্ষোভ ছিল রাজনৈতিক। দিনে দিনে তা সামরিক গৃহযুদ্ধের চেহারা নিচ্ছে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী তাৎমাদৌ নিজ দেশের বিক্ষোভকারীদের প্রতি তা-ই করেছে, যা করা হয় রণাঙ্গনে শত্রু সৈন্যদের প্রতি। এই সময়ে নিহত হয়েছেন সাড়ে সাত শর মতো বিক্ষোভকারী। হত্যার জন্য গুলি; সরাসরি মাথায় গুলির নির্দেশ দেওয়া হয় তাঁদের প্রতি, যাঁরা নাকি একই দেশের নাগরিক। গণতন্ত্রকামী বন্দীরা যুদ্ধবন্দীদের মতো আচরণ পেয়েছেন। নিহত ব্যক্তিদের লাশ নিতেও টাকা দিতে হয়েছে পরিবারকে।

কিন্তু গত এক মাসে বিক্ষোভ সশস্ত্র চেহারা নিচ্ছে। মিছিল কমে আসছে, বাড়ছে বোমা বিস্ফোরণ। সাবেক রাজধানী ইয়াঙ্গুনে ঘন ঘনই ঘটছে এ ধরনের বোমার বিস্ফোরণ। ওদিকে মিয়ানমারের ১০টি বিদ্রোহী গোষ্ঠী সু চির সময়ে করা শান্তিচুক্তির বাইরে এসে স্বৈরশাসকদের উচ্ছেদের ডাক দিয়েছে। 

কারেন জাতিগোষ্ঠীর বিদ্রোহী বাহিনী মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ওপর হামলাও বাড়াচ্ছে। কারেনের পর কিছুদিন আগেও শান্তিপূর্ণ চিন প্রদেশেও চিন জাতিগোষ্ঠীর সশস্ত্র বিদ্রোহীরা সেনাবাহিনীর একটি ঘাঁটি দখল করেছে। প্রতিটি ঘটনায় নিহত সেনার সংখ্যাও কম ছিল না। সেনাবাহিনীও স্থল ও বিমান হামলা বাড়াচ্ছে। 

গত সপ্তাহে জাতিসংঘের মিয়ানমার-বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি নিরাপত্তা পরিষদকে আশু গৃহযুদ্ধ ও ‘রক্তস্নানের’ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। যুদ্ধের গন্ধ পেয়ে ভারতের আদানি গ্রুপ মিয়ানমারে একটি কনটেইনার পোর্ট ও বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার প্রকল্প থেকে সরে আসার ইঙ্গিত দিয়েছে; যদি তা যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়ে। 

লন্ডনে অনুষ্ঠিত জি-৭ বৈঠকে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীও অস্ত্র ক্রয়ে নিষেধাজ্ঞা ও মানবিক হস্তক্ষেপের কথা জোরেশোরে বলেছেন। জি-৭-এর বিবৃতিতে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সামগ্রিক অবরোধ আরোপের আহ্বানও জানানো হয়।

এই মানবিক হস্তক্ষেপের আন্তর্জাতিকভাবে ব্যবহৃত পরিভাষা হলো, আরপি২ বা রাইট টু প্রটেক্ট। অন্য কোনো দেশের জনসাধারণকে রক্ষায় যে সামরিক হস্তক্ষেপ করা হয়, তা আরপি-২-এর মাধ্যমে বৈধ করা হয়। ঠিক যেমনটা করা হয়েছিল প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের সময় বলকান যুদ্ধে। ইরাক ও আফগানিস্তান আক্রমণেও এই যুক্তি ব্যবহার করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল সিরিয়ার বেলাতেও। দুনিয়ার ২০০টি বেসরকারি সংস্থা ও ব্যক্তি মিয়ানমারে সরাসরি জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ দাবি করে বিবৃতি দিয়েছেন।

ঘটনাবলি সিরিয়ার মতো করেই এগোচ্ছে। ২০১১ সালে সিরিয়াতেও ‘আরব বসন্ত’ গণবিক্ষোভ দিয়ে শুরু হয়ে গৃহযুদ্ধের দিকে গড়ায়। সেই বিক্ষোভকে নৃশংসভাবে দমন করার পর শুরু হয় বিদ্রোহীদের সশস্ত্র অভিযান। পরিণতিতে দেশটা হয়ে পড়ে যুক্তরাষ্ট্র-ব্রিটেন-ফ্রান্স বনাম রাশিয়া-ইরান বনাম তুরস্কের ত্রিপক্ষীয় ভূরাজনীতির লীলাক্ষেত্র। 

মিয়ানমারে গত ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়া বিক্ষোভ মাত্র তিন মাসের মধ্যে সশস্ত্র রূপ নিতে থাকা সিরিয়ার পথপরিক্রমাকেই নির্দেশ করে। সিরিয়ায় আসাদ সরকারের পেছনে ছিল রাশিয়া ও ইরান, মিয়ানমারে সামরিক জান্তার পক্ষে চীন একাই যথেষ্ট।

জি-৭ বৈঠকে মিয়ানমারের জান্তাবিরোধী জাতীয় ঐক্যের সরকারকে একরকম স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। সেনাবিরোধী আন্দোলনকারীদের এই সরকার ঘোষণা দিয়েছে, তারা একটি ফেডারেল ইউনিয়ন আর্মি গঠন করবে। একদিকে বিদ্রোহীরা মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় সেনাবাহিনী ও অন্যান্য প্রতিরক্ষা বাহিনীতে কাজ করা স্ব স্ব জাতির সদস্যদের জান্তার দিকে বন্দুক ঘুরিয়ে দিতে আহ্বান জানাচ্ছে, অন্যদিকে শহুরে গণ-অভ্যুত্থানে মার খাওয়া বিক্ষোভকারী বর্মী তরুণেরা যোগ দিচ্ছেন বিদ্রোহী দলে। সব মিলিয়ে গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি ১৪ আনাই পাকা।

মিয়ানমারে সেনা নেতৃত্বে জাতিগঠন প্রকল্প ব্যর্থ হয়েছে। দেশকে এক করার বদলে তারা বরং আরও বিভক্ত করছে। উল্টোদিকে সংগ্রামের ভেতর দিয়ে বিদ্রোহীরা তৈরি করছে এক বর্ণিল ঐক্য। বর্মী ও বৌদ্ধরা সেখানে অপর জাতি ও ধর্মের মানুষকে প্রান্তিক করে রেখেছিল। 

এই প্রথম আরাকানের রোহিঙ্গা মুসলিম ও রাখাইন বৌদ্ধ, কারেন ও শিন প্রদেশের খ্রিষ্টানদের সঙ্গে বড় জাতির বর্মী বৌদ্ধদের সংহতি গড়ে উঠছে। গড়ে উঠেছে আরাকান আর্মি, কাচিন ইনডিপেনডেন্স আর্মি, তা’য়াঙ ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি এবং মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মির সামরিক জোট নর্দার্ন অ্যালায়েন্স।

তবে সিরিয়ার মতো এখনো প্রতিবেশী দেশগুলো সরাসরি মিয়ানমারের সংঘাতে জড়ায়নি। ভারত চীন ও রাশিয়াকে জান্তার বিরুদ্ধে কথা বলায় রাজি করাতে পারেনি। মিয়ানমারের সঙ্গে তাদের রয়েছে দীর্ঘ কাঁটাতারহীন সীমান্ত। দুই দেশের সীমান্তের দুই পারেই রয়েছে একই জাতির মানুষ। একই কথা থাইল্যান্ডের বেলাতেও প্রযোজ্য। এ দুটি দেশেই মিয়ানমারের শরণার্থীরা পালাচ্ছে, যেমন রোহিঙ্গারা এসেছিল বাংলাদেশে।

এশিয়া টাইমস-এ নিরাপত্তা বিশ্লেষক কে ভদ্রকুমার লিখেছেন, ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা এমআই৬ ও সিআইএ বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোকে পরিস্থিতির সুযোগ নিতে উসকানি দিচ্ছে। এটা করতে হলে তাদের ভারত ও থাইল্যান্ডের সহযোগিতা দরকার হবে। ভিয়েতনাম যুদ্ধে থাইল্যান্ডই ছিল যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় নিকটতম কেন্দ্র। কিন্তু থাইল্যান্ড এখন চীনের বন্ধু। ভারতের পক্ষে একা কিছু করা সম্ভব না। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও ভারত মিলে গঠিত ‘কোয়াড’-এর তৎপরতা অনেকটাই দৃশ্যমান।

যদি মিয়ানমারের জাতীয় ঐক্য সরকারকে ‘প্রবাসী সরকার’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়, তাহলেই বোঝা যাবে যে গৃহযুদ্ধ বেগবান করায় পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলো সক্রিয় হয়েছে। যেকোনো মানবিক মানুষের জন্যই এটা এক উভয়সংকট। সামরিক জান্তাকে এখনই থামানো না গেলে আরও বড় আকারের যুদ্ধ ও অশান্তি ঠেকানো অসম্ভব হয়ে উঠবে। আবার পশ্চিমা হস্তক্ষেপ মানে মিয়ানমারের ভূমিতে চীনের বিরুদ্ধে ছায়াযুদ্ধের সূচনা। সেই ছায়াযুদ্ধ যে সেখানেই সীমিত থাকবে বা শিগগির কোনো পক্ষ যে বিজয়ী হবে, তা বলা কঠিন। বিদেশি হস্তক্ষেপ বরং বর্মীদের একটা অংশকে ‘দেশপ্রেমের’ আবেগে সেনাপন্থী শিবিরে ঠেলে দিতে পারে। যেমনটা হয়েছিল সিরিয়ায়। বাংলাদেশের জন্য আশঙ্কার বিষয় এখানেই, দেশটার এক সীমান্তে দীর্ঘমেয়াদি গৃহযুদ্ধের আগুন জ্বলে উঠেছে। এটা দাবানলে পরিণত হলে দীর্ঘদিন ধরে তার উত্তাপ আমাদের গায়ে এসেও লাগবে।

বাড়ি ফিরতে মরিয়া মানুষ-প্রথম আলো

ঈদ আসন্ন। ঈদ উপলক্ষে নাড়ির টানে মানুষের বাড়ি ফেরার প্রবণতা তাই বেশি। তবে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে এবারের ঈদে বাড়ি যেতে মানুষকে একপ্রকার নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। সংক্রমণ ঠেকাতে চলাচল সীমিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সরকার আন্তজেলায় বাস চলাচল বন্ধ করেছে, জরুরি সেবা ছাড়া ফেরি চলাচলও সীমিত। তবে কোনো কিছুই মানুষকে দমাতে পারছে না। ঢাকা থেকে বাড়িমুখী মানুষ ভিড় জমিয়েছেন মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া, মানিকগঞ্জের পাটুরিয়াসহ ফেরি চলাচলের ঘাটগুলোতে

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গাছ কাটার বিষয়ে যা বললেন ওবায়দুল কাদের-যুগান্তর

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণ ও পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সারেন্ডার করার জায়গা দর্শনীয় করে তোলার জন্য প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। 

তিনি বলেন, যে কাজগুলোকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছিল, সেই কাজগুলো প্রজন্মের পর প্রজন্ম ইতিহাসের কথা জানতে পারবে। শনিবার সকালে তার সরকারি বাসভবনে ব্রিফিংকালে মন্ত্রী এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।

রেসকোর্স ময়দানে প্রথম গাছ লাগিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এটিকে উদ্যান হিসেবে বঙ্গবন্ধুই সৃষ্টি করেছিলেন। তিনি বলেন, ৭ মার্চের ভাষণের স্থান ও পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সারেন্ডার করার স্মৃতি মুছে ফেলার জন্য জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে রাষ্ট্রপতি হয়ে এই উদ্যানের অধিকাংশ জায়গা জুড়ে শিশুমার্ক করেছিলেন। পরিবেশবাদীরা তখন প্রশ্ন তোলেন নাই কেন- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তা জানতে চেয়ে বলেন, কারো মুখে একটা কথাও সেদিন আমরা শুনতে পাইনি।

তিনি আরও বলেন, সৌন্দর্য বর্ধনের নামে এই ঢাকা শহরে রাস্তার পাশ থেকে কত সুন্দর সুন্দর গাছ কেটে ফেলা হয়েছিল, উজাড় করে ফেলা হয়েছিল এই নগরীর সৌন্দর্য। 

ওবায়দুল কাদের এ বিষয়ে উদ্বিগ্ন না হওয়ার আহবান জানিয়ে বলেন,  সরকার এ ব্যাপারে যথেষ্ট সজাগ রয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাস্তব সম্মত উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন।

এবার ভারতের কয়েকটি খবর তুলে ধরছি:

দেশের মধ্যে ইতিহাস গড়েছে বাংলার নির্বাচনের ফলাফল’, পরিসংখ্যান তুলে দাবি মুখ্যমন্ত্রীর-সংবাদ প্রতিদিন

বাংলার মানুষের ঐতিহাসিক রায় মেনে নিতে পারছে না বিজেপি (BJP)। কেন্দ্রের তরফে উসকানিমূলক মন্তব্য করা হচ্ছে। বাংলায় দাঙ্গা বাঁধানোর চেষ্টা হচ্ছে। তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পর বিধানসভায় পা রেখেই কেন্দ্র সরকার তথা বিজেপিকে একযোগে বিঁধলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তাঁর দাবি, বাংলার মানুষ তৃণমূলকে যে ঐতিহাসিক জনমত দিয়েছে, তা মেনে নিতে পারছে না গেরুয়া শিবির। তাই ভুয়ো খবর ছড়িয়ে, হিংসা ছড়িয়ে বাংলাকে উত্তপ্ত করার চেষ্টা হচ্ছে। মমতার দাবি, নির্বাচন কমিশন সঙ্গ না দিলে বঙ্গে ৩০ আসনও পেত না গেরুয়া শিবির।

অবিলম্বে নির্বাচনী আইনের সংস্কার প্রয়োজন, কমিশনকে তোপ দেগে দাবি মমতার-আজকাল

বিধানসভার প্রথম ভাষণে বিজেপির পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী। বিজেপির মদতপুষ্ট হয়ে কাজ করেছে কমিশন। এই অভিযোগ এনে তিনি বলেন, বিজেপি ৩০-এর বেশি আসন পেত না। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের সহায়তায় কোথাও কোথাও রিগিং হয়েছে। অবিলম্বে নির্বাচনী আইনের সংস্কার হওয়া উচিত। ভোটের আগে হাতে চিরকূট দিয়ে প্রচুর প্রশাসনিক আধিকারিককে বদলি করে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন মমতা।

এদিন মমতা বলেন, নির্বাচন কমিশনের কাজ রিগিং না হতে দেওয়া। তাই হয়ে আসছিল এতদিন। টি এন শেষনের সময় থেকে তাই দেখে এসেছি। এখন তার পুরো উল্টো ভূমিকা কমিশনের। নির্বাচন কমিশনের প্রত্যক্ষ মদতে একাধিক জায়গায় রিগিং হয়েছে।'

 মমতার দাবি, এবারের নির্বাচনে রাজ্যের শাসকদলের বিধায়করা গড়ে ৩১ হাজার ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। এটা কোনও দিন কোনও বিধানসভায় হয়নি। মানুষের সম্পূর্ণ সহযোগিতা না পেলে কখনও এটা হতে পারে না। এই ইতিহাস।

বাংলার রাজনৈতিক হিংসায় উদ্বিগ্ন রাজ্যপাল! তলব মুখ্যসচিবকে-আজকাল

ভোটের ফল প্রকাশ হতেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক সংঘর্ষ। আর সেই রাজনৈতিক হিংসায় প্রাণ হারিয়েছেন অনেকেই। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়ে গিয়েছে তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে। এই ঘটনা প্রসঙ্গেই এবার রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডেকে পাঠালেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। টুইট করে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় জানিয়েছেন এ কথা। 

FIR করে ভয় দেখানো যাবে না’, মমতাকে কুরুচিকর ভাষায় আক্রমণ করে তোপ কঙ্গনার-সংবাদ প্রতিদিন

বাংলার মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে সোশ্যাল মিডিয়ায় কুরুচিকর, বিভ্রান্তিমূলক তথ্য তুলে ধরার অভিযোগে এফআইআর (FIR) দায়ের হয়েছে কঙ্গনা রানাউতের বিরুদ্ধে। কিন্তু তিনি এখনও লাগামছাড়া। কোনও মামলা করেই তাঁর মুখ বন্ধ করা যাবে না বলে তোপ দাগলেন কঙ্গনা। একইসঙ্গে ফের নেটদুনিয়ায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আপত্তিকর ভাষায় তীব্র আক্রমণ করলেন বলিউডের ‘কন্ট্রোভার্সি কুইন’।

তৃণমূলের মুখপাত্র ঋজু দত্ত নামে এক ব্যক্তি অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে উল্টোডাঙা থানায় এফআইআর দায়ের করেছিলেন। তা গ্রহণ করেন থানার ওসি কান্তিময় বিশ্বাস। ঋজুবাবুর বক্তব্য, কঙ্গনার (Kangana Ranaut) মতো একজন জনপ্রিয় তারকা যদি বাংলার পরিস্থিতি নিয়ে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়ান, মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করেন, তাহলে তার প্রভাব পড়বে জনমানসে। যা মোটেই কাম্য নয়। একই সঙ্গে অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় অশান্তি ও হিংসা ছড়ানোর অভিযোগও উঠেছে। ঋজু দত্তর অভিযোগের ভিত্তিতেই আইনি পদক্ষেপ করা হবে বলে পুলিশের তরফে জানানো হয়। তবে এতেও থামছেন না কঙ্গনা। উলটে নতুন করে ইনস্টাগ্রামে মুখ্যমন্ত্রীর (Mamata Banerjee) বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তিনি।

তিনি ইনস্টাগ্রামে লেখেন, “একাধিক মামলা আর এফআইআর করে আমায় ভয় দেখানো যাবে না।” এরপরই যোগ করেন, “বাংলায় একের পর এক খুনের জন্য কোনও পদক্ষেপ করতে পারেনি কেন্দ্র। লাখে লাখে হিন্দুরা বাংলা থেকে পালিয়ে আসছে। সেসব আটকাতে পারছে না। উলটে আমি মৃত্যুমিছিল রোখা নিয়ে সরব হয়েছি বলে মমতার সেনারা আমার মুখ বন্ধ করার চেষ্টা করছে। দেশে কেন তথাকথিত ডান-পন্থীরা এত দুর্বল? এদের আদৌ কোনও ক্ষমতা আছে কি?” এখানেই থামেননি তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অত্যন্ত কুরুচিকর ভাষায় আক্রমণ করেছেন কঙ্গনা। এমনকী তাঁকে ‘রক্তপিপাসু’ বলেও কটাক্ষ করেন ইনস্টাগ্রামে।

চোর, লম্পটদের জন্যই ভরাডুবি’! দিলীপ, কৈলাসদের ভূমিকা নিয়ে দিল্লিকে চিঠি লিখছেন তথাগত-আনন্দবাজার পত্রিকা

দলের নেতাদের সম্পর্কে প্রকাশ্যে বিরূপ মন্তব্য করায় বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ডেকে পাঠিয়েছে তাঁকে। কিন্তু এখনই দিল্লি যাচ্ছেন না তথাগত রায়। বরং, নিজের অভিযোগকে আরও জোরদার করতে দিল্লির নেতাদের চিঠি দিতে চলেছেন বিজেপি-র প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি। আনন্দবাজার ডিজিটালকে তথাগত জানালেন, ‘‘আমি করোনা আক্রান্ত। এখন অনেকটাই সুস্থ। কিন্তু রিপোর্ট নেগেটিভ না আসা পর্যন্ত দিল্লি যেতে পারব না। তবে এ বার আর মৌখিক নয়, লিখিত অভিযোগ জমা দেব।’’ তথাগত কারও নাম উল্লেখ না করলেও ভোটের আগে বিজেপি-তে যোগ দেওয়াদের একাংশকে ‘চোর, লম্পট, বদমায়েশ, দুশ্চরিত্র’ বলেও আঙুল তুলেছেন। বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি-র ভরাডুবির পর দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ-সহ বাংলার দায়িত্বপ্রাপ্ত ৩ কেন্দ্রীয় নেতার বিরুদ্ধে আগেই প্রকাশ্যে সরব হয়েছেন তথাগত।# 

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/৮

  • বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।


 

ট্যাগ